কেবল পরের হিতে প্রেম লাভ যার
মানুষ তারেই বলি মানুষ কে আর?
মূলভাব : প্রতিটি মানুষের হৃদয়ের মধ্যেই স্নেহ, মায়া, প্রেম, প্রীতি, ভালোবাসা আছে। তবে এদের মাত্রা এবং রূপগত বৈচিত্র্য নিশ্চয়ই আছে। তাই দেখি এদের বহিঃপ্রকাশে বিভিন্নতা। আর তা থেকেই তাদের মূল্যায়ন হয়।
সম্প্রসারিত-ভাব : ভালোবাসার দ্বৈতরূপ সকাম ও নিষ্কাম। আমি মানুষই সকাম প্রেমে বিশ্বাসী এবং নিষ্কাম প্রেম খুব কম সংখ্যক মানুষের হৃদয়ে বিরাজ করে। ফলে অধিকাংশ মানুষই, যারা সকাম প্রেমের পূজারী, তারা চরিত্রগুণেই বিনিময় আশা করে। বোধের এ সঙ্কীর্ণতাই মানুষের হৃদয়ে পার্থিব ভোগ, সুখ, কামনা সর্বক্ষণ উদ্দীপ্ত করে, শান্তি দিতে পারে না। প্রাপ্তির আশায় ভারী বলে সকাম প্রেম পরিচিত স্বজনের কাছেই ঘুরঘুর করে। তাদের মনে ক্লেদ জমে, যার বহিঃপ্রকাশ হয় অহঙ্কারে। তাই এ ভালোবাসার দৌলতে হাততালি মিললেও মহৎ রূপে পরিগণিত হওয়া সম্ভব।
অন্যদিকে, যে ভালোবাসার টানে শত্রুমিত্র নির্বিশেষে অন্তরাত্মা কাঁদে সে নিষ্কাম ভালোবাসাই মহত্বের লক্ষণ। এক্ষেত্রে ভালোবাসার পরিবর্তে কি পেলাম তা বিবেচনার অপেক্ষা রাখে না। বস্তুত নিষ্কাম ভালোবাসাই হল মানবপ্রেম। স্বামিজী এ প্রেমের জয়গান করেছেন, ‘যার প্রেমের বিরাম নাই, উচ্চনীচ নাই, তার প্রেম জগৎ জয় করে।’ এ মানব প্রেমের অধিকারী হওয়া খুব কঠিন। আর জগাইমাধাই কলসীর কানা দিয়ে শ্রীচৈতন্যের মাথায় রক্ত ঝরালেও তিনি ক্ষমা করে বুকে টেনে নিয়েছিলেন। তবে একথা ঠিক নিষ্কাম ভালোবাসার অধিকারী হওয়া খুব কঠিন। মুষ্টিমেয় মানুষই পারেন পরোপকার বৃত্তিকে জীবনের ধ্যানজ্ঞান করে নিতে। যারা তা পারেন তারা যথার্থ মনুষ্যত্ব অর্জনে সক্ষম।
সত্যি অসাধারণ
ReplyDelete