কঠোরতার সঙ্গে কোমলতার সমাবেশ ব্যতীত মনুষ্যচরিত্র সম্পূর্ণতা পায় না
মূলভাব : কঠোরতা ও কোমলতা দু’টি সম্পূর্ণ বিপরীত বিষয়, বিপরীত গুণ, বিপরীত ধর্ম। একই বস্তুর মধ্যে তাদের সমাবেশ আমরা সাধারণত দেখতে পাই না। যে বস্তু কঠোর, তা কখনও কোমল হতে পারে না। আবার যা কোমল, তার মধ্যে কঠোরতার লক্ষণ অন্বেষণ বিড়ম্বনা মাত্র।
সম্প্রসারিত-ভাব : এ পৃথিবীতে যারা লোকোত্তর পুরষ, কেবল তারাই এ নিয়মের ব্যতিক্রম। সকল মহামানবের চরিত্র বিশ্লেষণ করলে আমরা দেখতে পাই যে, তাতে কঠোরতা ও কোমলতা একই সাথে আশ্চর্যরূপে মিশে আছে। তারা যদি শুধু কঠোর হতেন, তবে তাদের সেই অপরুপ দৃঢ়তায় আমরা বিস্মিত হতাম, সন্দেহ নেই। কিন্তু অন্তর থেকে তাদেরকে ভালোবাসতে পারতাম না। আবার তারা যদি কেবলই কোমল হতেন, তবে স্থলবিশেষে দঢ়তার অভাবে আমরা তাদের বিরূপ সমালোচনা করতাম। চরিত্রের সম্যক বিকাশের জন্য এ দুই গুণের প্রয়োজন। কারণ, মানষকে স্থলবিশেষে যেমন দৃঢ় হতে হয়, তেমনি স্থলবিশেষে আবার নমনীয়ও হতে হয়। মহামানব হযরত মুহাম্মদ (স:) কে আমরা নিশ্চয়েই সম্পূর্ণচরিত্র মানুষ বলবো। তার চরিত্র বিশ্লেষণ করলেও দেখতে পাই যে, তিনি একাধারে কঠোর ও কোমল ছিলেন। অন্যায়ের প্রতিবাদে, সত্য বিশ্বাসের প্রতি নিষ্ঠায় তিনি চিরকাল ছিলেন অবিচলিত, কোন ভয় বা দুঃখ তাকে কখনও অবনমিত করতে পারেনি। আবার এ বজ্রকঠোর ব্যক্তিই সামান্য দুঃখের কথা শুনলে পরের জন্য কেঁদে বুক বাসাতেন। সম্পূর্ণচরিত্র মানবের পক্ষে এটাই স্বাভাবিক।
অতএব কঠোরতা ও কোমলতা এ দুটি জিনিস এক হতে পারে না। মানুষকে কার্য বিশেষে কঠোর ও কোমল হতে হয়।