ভাবসম্প্রসারণ : উদয়ের পথে শুনি কার বাণী ভয় নাই ওরে ভয় নাই নিঃশেষে / প্রাণ যে করিবে দান, ক্ষয় নাই তার ক্ষয় নাই।

উদয়ের পথে শুনি কার বাণী ভয় নাই ওরে ভয় নাই
নিঃশেষে প্রাণ যে করিবে দান, ক্ষয় নাই তার ক্ষয় নাই।

মূলভাব : বর্তমান সভ্যতা সৃষ্টির পেছনে অনেক জ্ঞানী, গুণী মনীষীর অবদান রয়েছে। তাঁরা নিজেদের জীবনকে তুচ্ছ মনে করে মানব কল্যাণে জীবন উৎসর্গ করে গেছেন। এসব লোকেরা নিজের কর্মের সাহায্যে পৃথিবীতে অমরত্ব লাভ করেন।

সম্প্রসারিত-ভাব : বর্তমান এ বিশ্বমানবতার ও নবজাগরণের যুগে, প্রতি মুহূর্তে উন্মোচিত হচ্ছে নতুন কাল-পুরুষ। পৃথিবী আজ তাঁর পিয়াসী ও তৃষ্ণার্ত নয়নে অবলোকন করতে চায় নতুনকে। এ পথের যারা অনুসারী তারা মহামানব ও নবজাগরণের মন্ত্রদ্রষ্টা। কিন্তু পৃথিবীর এ নবজাগরণের সংগ্রাম খুবই কণ্টকাকীর্ণ ও সর্পিল। প্রতি পদে আছে পিছুটান ও জরাজীর্ণের সাথে সুকঠোর সংগ্রাম, আছে স্বজনহারার আর্তনাদ। এমনকি স্বীয় প্রাণও সময় সময় এতে বিসার্জিত হয়। কিন্তু এ প্রাণ ইতিহাসের অভিধানে অমর অক্ষয়। তবুও নবজাগরণের সৈনিকেরা দুর্জয় ও নির্ভয়। নবজাগরণের স্মরণে তারা সরণের ভয় করে না।

অন্যদিকে আমরা যদি ইতিহাসের এ্যালবামে চোখ বুলাই তবে দেখতে পাব যে, যখনই অন্ধকারের যবনিকা চারদিকে উন্মোচিত হয়েছে, তখনই জাগরণের ও মুক্তির প্রদীপ হাতে করে আবির্ভূত হয়েছেন যুগাবতার। তাঁর জীবন বাজি রেখে অন্ধকারের অমানিশার টুটি চেপে ধরে অকল্যাণ ও অমঙ্গলের কপালে এঁকে দিয়েছেন শান্তির পদটীকা। এ সংগ্রামী কর্মে তাঁরা তিলে তিলে নিঃশেষ করে দিয়েছেন নিজের প্রাণ, তবুও কখনো পিছপা হননি।

এঁরা এক একজন অবতার। যাঁরা অবতার, যে কোনো উপলক্ষে তাঁদের নাম সংকীর্তন ও স্মরণ-মনন আমাদের মোহমায়ার আবরণ উন্মোচনে সাহায্য করে, নিদারুণ বন্ধনে স্বার্থহীন তন্দ্রাচ্ছন্ন জীবশক্তিকে জাগরণের মুক্তিমন্ত্র শোনায়, প্রাত্যহিকতার মালিন্য আমাদের যে সত্যদৃষ্টিকে প্রতিনিয়ত অবরুদ্ধ করে রাখে, স্মরণ-মনন অনেক সময় তার উন্মিলনে বিশেষ সহায়ক হয়।

তাই যখনই এ রঙিন পৃথিবী চিন্তা ও ভোগলালসায় আকণ্ঠ নিমজ্জিত হয়, তখনই উদয়ের পথে আবির্ভাব ঘটে এসব যুগ আবতারের। তাঁরা নিঃস্বার্থ ও প্রকৃত মানবপ্রেমিক। তানাহলে তিলে তিলে মানবতার জয়গান গাইতে গিয়ে নিজেদেরকে নিঃশেষ করতে পারেন না।

জীবন উৎসর্গ করার মধ্যে মানবকল্যাণে কৃতিত্ব রয়েছে। জীবদ্দশায় যাঁরা এমন কাজ করতে পারেন, তাঁরা চিরস্বরণীয়, চিরবরণীয় হয়ে থাকেন। ইতিহাসের পাতায় স্বর্ণালি অক্ষরে তাঁদের নাম লিপিবদ্ধ থাকে। কাজেই, আমাদের উচিত মানবকল্যাণে জীবন উৎসর্গ করা।


এই ভাবসম্প্রসারণটি অন্য বই থেকেও সংগ্রহ করে দেয়া হলো


সভ্যতা সৃষ্টির পেছনে জ্ঞানীগুণীরা অনেক অবদান রেখে গেছেন। তাঁরা তাঁদের জীবনকে তুচ্ছ করে মানবকল্যাণে উৎসর্গ করেছেন। কাজেই তাঁদের ক্ষয় নাই। 

পৃথিবী আজ তার পিয়াসী ও তৃষ্ণার্ত নয়নে অবলোকন করতে চায় নতুনকে। এ পৃথের যাঁরা পথিকৃৎ তাঁরা মহামানব ও নবজাগরণের মন্ত্রদ্রষ্টা। কিন্তু পৃথিবীর এ নবজাগরণের সংগ্রাম খুবই কণ্টকাকীর্ণ। প্রতিটি পদে আছে পিছুটান ও জরাজীর্ণের সাথে সুকঠিন সংগ্রাম; আছে স্বজনহারার আর্ত হাহাকার। এমনকি স্বীয় প্রাণও সময় সময় এতে বিসর্জিত হয়। কিন্তু এ প্রাণ ইতিহাসের অভিধানে অমর, অক্ষয়। তথাপি নবজাগরণের সৈনিকেরা দুর্জয় ও নির্ভয়; নবজাগরণের স্মরণে তারা ভয় করে না মরণে। ইতিহাসের অ্যালবামে যদি আমরা দৃষ্টি দিই তবে দেখতে পাব যে, যখনই অন্ধকারের সাম্রাজ্য চারদিকে উন্মোচিত হয়েছে, তখনই জাগরণের ও মুক্তির প্রদীপ হাতে করে আবির্ভূত হয়েছে অনেক যুগাবতার। তাঁরা জীবন বাজি রেখে অন্ধকারের অমানিশার ‍টুটি চেপে ধরে অকল্যাণ ও অমঙ্গলকে দূর করে সভ্যতার কপালে এঁকে এক একজন অবতার। যাঁরা অবতার, যেকোনো উপলক্ষে তাঁদের নাম কীর্তন ও স্মরণ আমাদের মোহমায়ায় আবরণ উন্মোচনে সাহায্য করে। নিদারুণ বন্ধনে স্বার্থহীন তন্দ্রাচ্ছন্ন জীবশক্তিকে জাগরণের মুক্তিমন্ত্র শোনায়, প্রাত্যহিকতার মালিন্য আমাদের যে সত্য দৃষ্টিকে প্রতিনিয়ত অবরুদ্ধ করে রাখে, স্মরণ-মনন অনেক সময় তার উন্মীলনে বিশেষ সহায়ক হয়। তাই যখনই এ রঙিন পৃথিবী চিন্তা ও ভোগলালসায় আকণ্ঠ নিমজ্জিত হয়, তখনই উদয়ের পথে আবির্ভাব ঘটে এসব যুগাবতারের। তাঁরা নিঃস্বার্থ ও প্রকৃত মানবপ্রেমিক। এমন না হলে তিলে তিলে মানবতার জয়গান গাইতে গিয়ে নিজেদেরকে নিঃশেষ করতে পারতেন না। 

মানবকল্যাণে জীবন উৎসর্গ করার মধ্যে কৃতিত্ব রয়েছে। জীবদ্দশায় যাঁরা এমন কাজ করতে পারেন, তাঁরা হয়ে থাকেন চিরস্বরণীয়। ইতিহাসের পাতায় সোনার হরফে তাঁদের নাম লেখা থাকে।
Post a Comment (0)
Previous Post Next Post