উপকার যেন মধুর পাত্র
হজম করতে জ্বলে যে গাত্র
মূলভাব : উপকার বা সাহায্য মানুষ যত সহজে পেতে পারে তেমনি তার প্রতিদান দিতে গেলে তা এত সহজে পারে না। উপকার নেওয়া সহজ হলেও তার প্রতিদান দেওয়া অনেক কঠিন।
সম্প্রসারিত-ভাব : সামাজিক জীব হিসেবে মানুষ একে অপরের উপর নির্ভরশীল। অন্যের প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ সাহায্য ছাড়া এক পাও চলা সম্ভব হয় না। তবে তা উপকার যেমন আমাদের অসুবিধা দূর করে, কষ্ট লাঘব করে তেমনি তার প্রতিদান আমাদেরকে কষ্ট দেয়, ঝামেলায় ফেলে। বিশেষ করে যারা হৃদয়বান, সম্মানী, বিবেকবান, কৃতজ্ঞ তারাই উপকার নেওয়ার পর ঝামেলায় পতিত হয়। কারণ তাদের মাঝে সর্বদা উপকারীর উপকার স্বীকার করতে বা প্রতিদান দিতে বিবেক বোধ তাড়না দেয়। সর্বদা তা মানসিক এক জ্বালায় পরিণত হয়। তারা ভালোভাবেই জানে যে, কোনকিছু নেওয়ার চেয়ে দেওয়াই উত্তম, অন্যকে উপকার করার মাধ্যমে তা গ্রহণের নিগৃহ বা হীনতা হতে মুক্তি পেতে চায়। চায় সে সম্মান মর্যাদায় তাদের আসন পাকাপোক্ত করতে। আরেক দিকে উপকারী যখন উপকারের প্রতিদান কামনা করে এবং গ্রহীতা যদি তা দিতে অপারগ হয়, তাহলে তার মাঝে চরম হীনমন্যতা কাজ করে। বারবার বিবেকবোধ দংশন করতে থাকে। আর যদি উপকারী এ সময় তার উপর চাপ দিতে থাকে বা চরম অপমান করতে থাকে তা হলে বিবেকবান গ্রহীতার সহ্যের বাইরে চলে যায় এবং ভাবতে থাকে, ‘Death is preferable to dishonor’.
তাই তো সর্বক্ষণ উপকার গ্রহণ মধুর হলেও তা হজম করা কঠিন হয়ে পড়ে।