পরের কাছে হইবে বড়ো
একথা গিয়ে ভুলে
বৃহৎ যেন হইতে পারি
নিজের প্রাণমূলে
মূলভাব : পরের কাছে প্রশংসা লাভের আশায় বড় হওয়ার নেশায় মানুষ নিকা করে। কিন্তু তার সেই আচরণের মধ্যেও ক্ষুদ্রতা বাসা বেধে থাকে। মানুষ যখন অন্তরের টানে, বিবেকের তাড়নায় মনুষ্যত্বের দৃষ্টান্ত স্থাপন করে, তখনই সে প্রকৃত বড় হয়।
সম্প্রসারিত-ভাব : মানুষ কাজ করে এবং সেই কাজের পরিণাম সে বহু ক্ষেত্রে হাতেনাতে পেতে চায়। স্বার্থপর, আত্মকেন্দ্রিক মানুষ যেমন নিজের ভোগ-ঐশ্বর্যের মধ্যে পরম তৃপ্তি খুঁজে ফেরে তেমনি মহত্ত্বের ভান করা কিছু মানুষ অন্যের বিপদমুক্তি ঘটিয়ে, আর্থিক সমস্যার সমাধান করে অথবা ক্ষুণ্নিবৃত্তি মিটিয়ে মানবসমাজের কাছে বাহবা পেতে চায়। তারা প্রয়োজনে পরোপকারের ব্যাপারটি প্রচারের আলোকে এনে পাঁচজনের প্রশসংসা কুড়াতে ব্যস্ত থাকে। কিন্তু তাদের সেই দান-ধ্যান, পরোপকারে শক্তির মত্ততা, অহঙ্কারী মনোভাব এত বেশি প্রস্ফুটিত হয়, যে মানবতার ঐশ্বর্য বিবেকশুদ্ধি ঘটাতে বিফল হয়, অন্তরের আনন্দ বীবৎস রূপ ধারণ করে। সাধক রামপ্রসাদ তাই বলেছিলেন,
‘জাঁকজমকে করলে পুজো
অহংকার হয় মনে মনে।
আমি লুকিয়ে করবো মায়ের পুজো
জনবে নাকো জগজ্জনে।’
স্বার্থপরতা যেমন নিন্দনীয়, অহংকারও তেমনি প্রশংসনীয় নয়। বড় প্রতিভার বৈশিষ্ট্যই হল নিজেদের নিঃশেষ করেই তারা আনন্দ লাভ করেন, পরকে পূর্ণ করে নিঃশব্দে অন্তরালে আত্মগোপন করাকে তারা গৌরবের বলে মনে করেন।
অর্থাৎ, স্বীয় সুখের সন্ধ্যানে নিজেকে ব্যাপৃত রাখলে কোন দিনই সুখ আসে না, কারণ নিজের স্বার্থের জন্য জীবন নয়, পরের কল্যাণ সাধনই জীবনের বৈশিষ্ট্য।
এই উক্তিটি কার?
ReplyDelete