ইটের পর ইট মধ্যে মানুষ কীট
মূলভাব : নগর সভ্যতার বিকাশের ফলে মানব জীবন আজ বিপর্যস্ত। নগর সভ্যতার আড়ালে বিলীন হয়ে যাচ্ছে মানব সভ্যতা। মানুষ এখন কৃত্রিম কীট মাত্র।
সম্প্রসারিত ভাব : বর্তমান যুগ নগরায়ণের যুগ। এ যুগে মানুষ নগর সভ্যতাকে গড়তে গড়তে ভুলে গেছে নিজেদের। উৎকট এ নগর সভ্যতায় মানুষের অনাবিল সুখ-শান্তি ক্রমেই বিনষ্ট হচ্ছে। আজকের নাগরিক সভ্যতায় পরিবেশ যেভাবে দুষিত হচ্ছে, তাতে সুস্থভাবে জীবন ধারণ করা হয়ে উঠেছে দুর্বিষহ। আধুনিক নাগরিক জীবন জটিলতায় মানুষের শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থা। প্রতিনিয়ত নানা জটিলতায় আক্রান্ত হচ্ছে মানুষ। এ দুর্বিষহ জীবন থেকে মানুষের বাঁচার প্রত্যাশা অত্যাবশ্যকীয়। এই প্রতিকূল পরিবেশের ঝঞ্ঝাট থেকে মুক্তি পেতে অতীতের গ্রামীণ অনাবিল সৌন্দর্য ও আনন্দ অপরিহার্য। নগর জীবনের এ অসহনীয় অবস্থা থেকে মুক্তি পেতে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য বন-বনানীর শীতল পরশ মানুষের মনকে আজ নিবিড়ভাবে আকর্ষণ করে। সভ্যতার দোহাই দিয়ে মানুষ বন-বননী ধ্বংস করে যে নগর গড়ে তুলেছে, তা মানুষকে স্বস্তি দিতে পারছে না। অস্তিত্বের সংকটে আজ মানুষ সেই পল্লির ছায়াঢাকা বন-বনানীপূর্ণ পরিবেশই কামনা করছে। বিজ্ঞানের অভূতপূর্ব উন্নয়নের যুগেও অনাহূত অকল্যাণ থেকে মুক্তি পেতে প্রকৃতির নিবিড় সান্নিধ্য ও নীরবতা অত্যধিক গুরুত্বপূর্ণ। নগর সভ্যতায় মানুষের ভিড়ে এ নীরবতাপ্রাপ্তি অকল্পনীয়। তাই মানুষ বারবার ফিরে পেতে প্রত্যাশা করে সেই বন-বনানী, পাখি ডাকা, ছায়া সুনিবিড় শান্ত-সৌম্য গ্রাম্যজীবন। যেখানে আশ্রয় মিলবে নির্ঝঞ্ঝাট, সুখ ও শান্তিপূর্ণ জীবনের।
সিদ্ধান্ত : নগরায়ণ মানুষের জীবনকে নানা সুযোগ-সুবিধা দিতে পারলেও স্বস্তি দিতে পারেনি। মানুষের স্বাভাবিক জীবন কেড়ে নিয়েছে এ নগরায়ণ।