মহৎ দেখে কাঁদতে শেখা
তবেই কাঁন্না ধন্য হয়।
মূলভাব : মানুষের মহৎ কর্ম অন্যের হৃদয়কে বিগলিত ও বিমোহিত করে। মানুষ তাদের মাহাত্ম দেখে আত্মোপলব্ধি করে এবং অশ্রু বিসর্জন করে। আর তখনই মানুষের কান্না ধন্য হয়।
সম্প্রসারিত ভাব : মানুষ মরে গেলে থাকে শুধু তার মহৎ কর্মটুকু। আর সেই মহৎ কর্মই মানুষকে মৃত্যুর পরও বাঁচিয়ে রাখে যুগের পর যুগ। মানুষ তাদের মাহাত্মের কথা শুনে বিমোহিত হয়ে যায়। তারা তাদের জন্য অশ্রু বিসর্জন দেয়। মানুষ মহৎদের কর্ম দেখে আত্মোপলব্ধি করতে শেখে। নিজের দুর্বলতা বুঝতে পারে। নিজের কৃতকর্ম সম্পর্কে সে সচেতন হয়। নিজের পাপবোধ ও মহৎব্যক্তির মহত্ত্বের সাথে নিজেকে তুলনা করে সে অনুসূচিত হয়। হৃদয় ধর্মে পরিশুদ্ধতা অর্জন করে। সেও মহৎদের মত অন্যের জন্য কাঁদতে শেখে। মহৎ ব্যক্তির কর্ম তাকে অনুপ্রাণিত করে তার মধ্যে পর-দুঃখকাতরতার বোধ জাগিয়ে তোলে। বুদ্ধি-বিবেক, বিচার-বিবেচনা, মানবতা প্রভৃতি মহৎ প্রেরণা ও চেতনা তার মধ্যে স্ফূরিত হয়। তখন আশেপাশের মানুষের সামান্য ভালো কাজ দেখেও সে পরিতৃপ্তি লাভ করে এবং নিজেকে বিভিন্ন মহৎ কর্মে সংযুক্ত করার চেষ্টা করে। হযরত মহাম্মদ (স) এর মৃত্যুর শত শত বছর পরও মানুষ তার ক্ষমা, দয়া পরায়ণতা, পর-দুঃখকাতরতা ও মহত্ত্বের কথায় বিমুগ্ধ হয়ে যায়। তাঁর জীবনাদর্শে নিজেকে আদর্শিক করার প্রচেষ্টা চালায়। তাছাড়া আরো অনেকে পৃথিবীতে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন মহৎ কর্ম করে গেছেন, মানুষ তাদের মহত্ত্ব দেখে অশ্রুপাত করে। আর যখন মানুষ তা করতে পারে তখনই কেবল তার কান্না বা অশ্রুপাত সার্থকতা লাভ করে।
মহৎ মানুষের মহৎ কর্ম দেখে মানুষ যখন কাঁদতে শেখে তখনই কেবল মানুষের কান্না ধন্য হয়।