যে নৌকা হালের শাসন মানে না, তাকে বেসামাল হতেই হয়
মূলভাব : হাল ছাড়া চলে না, কর্তা ছাড়া সংসার চলে না, রাজা ছাড়া রাজ্য চলে না, নীতি ছাড়া মানুষ চলে না। হাল ছাড়া নৌকা যেমন দিকশূন্য, বেসামাল, অভিভাবকের অবাধ্য সন্তান, তেমনি নীতিহীন, বেসামাল, পতন তার অনিবার্য।
সম্প্রসারিত ভাব : প্রত্যেকটা জিনিসেরই একটা চালিকা শক্তির প্রয়োজন আছে। আপনা আপনি কোন কিছুই চলতে পারে না। এমন কি মানুষও আপনা আপনি চলতে পারে না। তার বিবেক-বুদ্ধি তাকে চালনা করে। এটাই তার হাল। কিন্তু এ হালের শাসনকে যারা উপেক্ষা করে, তারা পদে পদে লাঞ্ছিত হয়। নদীর ভাসমান নৌকা যদি হালের শাসন না মানে, তবে তা দিক-বিদিক ছুটতে থাকবে। স্রোতের টানে, বায়ুর প্রবাহে এক এক সময় এক এক দিক যাবে। কোন গন্তব্যে পৌঁছতে পারবে না। হয়ত স্রোতের পাকে পড়ে তা এক সময় ডুবে যাবে। অস্তিত্ব বিলীন হয়ে যাবে তার। মানুষের ক্ষেত্রেও ব্যাপারটি ঠিক সে রকমই। যে পুত্র পিতার শাসন মানে না, যে স্ত্রী স্বামীর কথা মত চলে না, যে ছাত্র শিক্ষকের নির্দেশ মত কাজ করে না, যে জাতি রাষ্ট্রীয় আইন মানে না সর্বোপরি যে মানুষ মানবতার বা নীতির ধার ধারে না - সে জীবনেও ভালো কিছু করতে পারে না। যে কোন ক্ষেত্রে সফলতা অর্জন তার কাছে সোনার হরিণের মত হয়ে দাঁড়ায়। জীবন তাকে বঞ্চিত করে। পতন তার অনিবার্য হয়ে উঠে। আর সে কারণেই বলা হয়েছে, ‘যে নৌকা হালের শাসন মানে না, তাকে বেসামাল হতেই হয়।’
হালের অবাধ্য নৌকা যেমন গন্তব্যে পৌঁছতে পারে না, ন্যায় নীতির অবাধ্য মানুষ্যও তেমনি মনুষত্ব অর্জন বা সফলতা অর্জন করতে পারে না।