শিক্ষাই শক্তি শিক্ষাই মুক্তি
মূলভাব : শিক্ষা মানবজাতির জন্য এক মহার্ঘ্য বিষয়। এটা ছাড়া মানুষের মনুষ্যত্ব কখনই বিকশিত হয় না। এজন্যই সর্বত্র শিক্ষাকে অত্যন্ত আবশ্যকীয় বিষয় হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এমনকি আমাদের ধর্মেও এর প্রয়োজনীয়তা ও গুরুত্ব বিবেচনা করে একে সকল নারী ও পুরুষের জন্য ফরজ করা হয়েছে।
সম্প্রসারিত ভাব : বস্তুত, শিক্ষার প্রয়োজনীয়তা এবং উপকারিতা এত ব্যাপক যে, এর গুণ বলে শেষ করা যাবে না। প্রাচীন কাল থেকেই দেখা গেছে, যে জাতি শিক্ষাদীক্ষায় উন্নত, যে জাতির জ্ঞান-বিজ্ঞান, শৌর্ষ-বীর্য ও প্রভাব-প্রতিপত্তি তত বেশি। প্রাচীন গ্রিক জাতি তাদের শিক্ষাদীক্ষার জন্যই আজও আমাদের কাছে প্রাতঃস্মরণীয় হয়ে আছেন। আর আজকের পৃথিবীর এ যে প্রগতি ও প্রাচুর্য, তার মূলেও রয়েছে শিক্ষার বিস্তৃত প্রভাব। প্রকৃত প্রস্তাবে শিক্ষার বহুমুখী প্রভাব আমাদের জীবনে বিদ্যমান এবং আমাদের জীবন-যাপনে সুষ্ঠু শিক্ষা ব্যতীত আমরা কোনভাবে উন্নত জীবন অর্জন করতে পারবো না। বিশেষত বর্তমানে বিশ্বের প্রধান সমস্যা ক্ষুধা ও দারিদ্র্য। আমরা যদি এ সবের কারণ উদ্ঘাটন করতে যাই, তাহলে দেখব এর মূলে রয়েছে অশিক্ষা বা শিক্ষার অভাব। কারণ শিক্ষা বা জ্ঞানচর্চা আমাদের বিভিন্ন সমস্যার যথার্থ সমাধানের পথের সন্ধান দেয়। বিভিন্ন সমস্যার মোকাবিলার কৌশল অর্জনে সাহায্য করে। আমরা যদি ইতিহাসের দিকে লক্ষ্য করি, তাহলে দেখব, মানুষ যখনই বিভিন্ন সমস্যার মুখোমুখি হয়েছে, তখন সে তার অর্জিত শিক্ষা বা জ্ঞান দ্বারা এর সমাধানের কৌশল উদ্ভাবন করেছে। আর এভাবেই মানুষ পৃথিবীকে একটি সুন্দর আবাসভূমি হিসেবে নির্মাণের প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু আজও বহুলাংশে মানুষ ক্ষুধা ও দারিদ্র্য দ্বারা পীড়িত। কিন্তু পৃথিবীর সবাই বা সব জাতি এ সমস্যা দ্বারা পীড়িত নয়। এর কারণও শিক্ষা। আমরা দেখছি, উন্নত বা সুশিক্ষিত জাতি ক্ষুধা ও দারিদ্র্য দ্বারা পীড়িত নয়।
অতএব, এ কথা নির্দ্বিধায় বলা যায়, শিক্ষা অবশ্যম্ভাবীরূপে সমাজ থেকে ক্ষুধা ও দারিদ্র্য দূরীকরণের কার্যকর উপায়। কেননা, শিক্ষার দ্বারা মানুষ এ সমস্যা উত্তরণের শক্তি অর্জন করে এবং শিক্ষার দ্বারাই কেবল মানুষ এ সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে পারে।