শক্তি যার নাই নিজে বড়ো হইবারে
বড়োকে করিতে ছোটো তাই সে কি পারে?
মূলভাব : বিনয় বা নম্রতা মানব জীবনকে মহিমান্বিত করে তোলে। সকল মানুষের উচিত নিজের সামর্থ্য, যোগ্যতা নিয়ে তুষ্ট থাকা। অপরের ভালো কিছু দেখে ঈর্ষান্বিত হলে মানব জীবন হয়ে উঠে দুর্বিষহ। সে না পারে ভালো কিছু করতে না পারে সুখী হতে। তাই আমাদের বিধাতা যা কিছু আমাদের দিয়েছেন সেটা নিয়ে তুষ্ট থাকতে হবে।
সম্প্রসারিত ভাব : মানুষ সৃষ্টির সেরা জীব। আল্লাহ সকল মানুষকে অতি সুন্দরভাবে সৃষ্টি করেছেন। তবে এ মানুষের মাঝে কিছু পার্থক্য আছে। মহৎ ও দুষ্ট সকল প্রকৃতির মিশ্রস্থল হল এ জগৎ। তাই এ জগতে দেখা যায় সমাজে এমন মানুষ আছে যারা নিজের অবস্থানে তুষ্ট নয়। বিধাতা তাকে যা দান করেছে সেটাতে সে খুশি নয়। সে চায় বড় হতে। মানুষের সকল ইচ্ছা পূরণ হওয়ার নয়। ইচ্ছা পূরণের সামর্থ্য না থাকলে ইচ্ছা পূরণ সম্ভবপর নয়। তাই আমরা সমাজে দেখতে পাই একশ্রেণীর মানুষ আছে যারা ছেঁড়া কাঁথায় শুয়ে লাখ টাকার স্বপ্ন দেখে। সমাজের বিত্তবান, ধনবান ও জ্ঞানীদের দেখে তাদের মনে লোভের সঞ্চার হয়। আর সে চায় তাদের উপরে উঠতে। এজন্য সে অনুপাতে সে কাজ করে না বরং তাদেরকে আক্রমণ করে। কিন্তু এতে সে আরো ঘৃণ্য জীবে পরিণত হয়, অপরদিকে যাদেরকে আঘাত করা হয় তারা আরো উচ্চ আসনে অধিষ্ঠিত হয়। নিজের সামর্থ্য বা যোগ্যতা না থাকলে শুধু আকাশকুসুম কল্পণা করলে বড় হওয়া যায় না। বড় হওয়ার জন্য মূলত কাজ করতে হয়। সৃষ্টির উপর মানুষের কোন হাত নেই। যদি কেউ নিচ কুলে জন্মগ্রহণ করে তাহলে তার কর্ম যে নিচু হবে এমন হয় না। অর্থাৎ, বেশি আড়ম্বর না করে আমাদের অবস্থান নিয়ে সন্তুষ্ট থাকতে হবে। নিজের শক্তি, সামর্থ্য কিংবা যোগ্যতা নেই, অথচ সে যদি বড় হতে চায় তাহলে তার স্বপ্ন পূরণ হওয়ার নয়। মানুষের আকাঙ্ক্ষা থাকে তাহলে সেটা পুষ্পিত হতে পারে। পক্ষান্তরে যদি মিথ্যা বাড়াবাড়ি করে নিজেকে বড় বলে প্রতিষ্ঠিত করতে চায় সেটা কখনওই সম্ভবপর নয়।
মানুষ সামাজিক জীব। তার ভেতর ইচ্ছা, বাসনা, ক্রোধ, ঘৃণা সবকিছুই মিশ্রণ ঘটাতে হবে। শুধু বড় হওয়ার স্বপ্ন হৃদয়ে লালন করলে চলবে না। ছোট ছোট মহৎ কর্ম করলে সেটা তাকে একদিন সেই বন্দরের দ্বারে পৌঁছে দিবে।