সময়ের এক ফোঁড়, অসময়ের দশ ফোঁড়
মূলভাব : জীবন হল সময়ের এক উদাসীন ধারাবাহিক নির্মম প্রবাহের উপর ছেড়ে দেয়া একটি ক্ষুদ্র ঘটনা, যার শুরু এবং শেষ উভয়ই সময়ের হাতে বন্দী এবং সময় দ্বারা শাসিত। তাই সময়ের কাজ সময়ে করতে হবে।
সম্প্রসারিত ভাব : সময় অতীব মূল্যবান। জীবনের যা কিছু অবদান, যা কিছু স্থিতি, যা কিছু মূল্য, সব সময়ের হাতেই বাধা। সমাজে মানুষের অনেক কাজ আছে। তার উপর নির্ভর করে তার প্রাপ্তি, তথা জীবনের সফলতা ও শান্তি। প্রতিটি মুহূর্তকে জীবনের পর্যায় অনুসারে প্রয়োজনের দিকে তাকিয়ে যদি যথাযথ কাজের মাধ্যমে সার্থক করে তোলা যায় তাহলে জীবনের সার্থকতা। সময়কে আমরা ধরতে পারি না, ছুঁতেও পারি না। আমরা পারি তাকে কাজের মধ্যে ধরে রাখতে। সময়কে কাজের মধ্যে বেঁধে রাখা এবং সঠিক কাজকে সঠিক সময়ের হাতে সমর্পণ করাই সফলতার পূর্বশর্ত। সময়কে ভালোভাবে কাজে খাটানোর জন্য বর্তমান যুগে সবচেয়ে বড় কথা হল ‘যুগের’ সাথে এগিয়ে চলা, শুধু ‘সময়ের’ সাথে নয়। অর্থাৎ, যে মুহূর্তে সময়ের যা কিছু শ্রেষ্ঠ অবদান, সে মুহূর্তে তাকে অর্জন করার জন্য সর্বাধিক চেষ্টা করতে হবে। এভাবে সঠিক সময়ে সঠিক কাজটি করা উচিত। আজকের কাজ আগামীর জন্য ফেলে না রাখা উত্তম। কেননা আজকের কাজটা যতটা সহজসাধ্য আগামীতে তেমনটি নাও হতে পারে। তা ছাড়া সময়ের কাজ সময়ে না করে ফেলে রাখলে পরে ঐ কাজ করেও কোন ফল হয় না। কারণ যে ফল অকালে পাকে, কালে তা পঁচে যায়, তেমনি যে কাজ আজকের তা আগামীর জন্য রেখে দিলে আশানুরূপ ফল পাওয়া যায় না। উদাহরণ স্বরূপ চৈত্র মাসে চাষ না করে বৈশাখ/জৈষ্ঠ্য মাসে করলে হেমন্তে সে ধান আশা করতে পারে না। কেননা, চৈত্র মাসই ছিল চাষের উপযুক্ত সময়।
জীবনকে সার্থক করে তুলতে চাই সময়ানুবর্তিতা। অর্থাৎ, সঠিক কাজটি সঠিক সময়ে করার মাধ্যমে সময়ের সদ্ব্যবহার করা হয়। আজকের কাজ আগামীর জন্য ফেলে রাখা বোকামি। কেননা, আগামী দিন ঐ কাজটি করার জন্য উপযুক্ত সময় নয়।