মার্চের দিনগুলি

ভাবসম্প্রসারণ : হাত জোড় করে নয়, হাত মুঠো করেও নয়। / পেতে হলে হাত লাগাতে হবে।

হাত জোড় করে নয়, হাত মুঠো করেও নয়।
পেতে হলে হাত লাগাতে হবে।

মূলভাব : সফলতাই হলো জীবন। যে জীবনে সফলতার বিদ্যুতের ঝলকানি নেই সে জীবন নিশ্চেষ্ট, নিষ্ক্রিয়, নিষ্প্রাণ। ব্যর্থতার দুর্ভেদ্য আঁধারই তার জীবনের একমাত্র সম্বল। সফলতা চলমান সময়ের পথ নির্বাচন করে। 

সম্প্রসারিত ভাব : সাফল্যই জীবন। সাফল্যই মানবিক অভীপ্সা। নিষ্ক্রিয়, নিশ্চেষ্ট জীবনে নেই সফলতার বিদ্যুৎ ঝলকানি। ব্যর্থতার দুর্ভেদ্য অন্ধকারই তার ভাগ্যের একমাত্র সঞ্চয়। সক্রিয় মানুষ তা মেনে নেয় না। প্রয়োজন হয় সফলতার পথটি নির্ণয় করা। ব্যক্তির সহজাত প্রবৃত্তি, আত্মবল ও মননের সঙ্গে আকাঙ্খিত লক্ষ্যের সংযোগ ঘটানো প্রয়োজন, এ সংযোগ রেখাই সেই পথ। দুস্তর বাধা, দুর্গম দূরত্ব, বিভেদী আবহ সেই পথে নিরন্তর দৃশ্য হতে পারে। এ সব মেনে নিয়েই যেটি গুরুত্বপূর্ণ বলে বিবেচিত হয় তা হল ব্যক্তির প্রকৃতিগত মানসতা। মানসতাই অভিমুখিতাকে সঠিক পথ নির্বাচন করায়। 

জীবনে মানুষের অনেক কিছু আবশ্যক। খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান প্রভৃতি জীবন-যাপনের বিষয়গুলির পাশাপাশি স্বাধীনতা, অধিকার, স্বীকৃতি প্রভৃতি নৈতিক জীবনীয়গুলিও জরুরী। বর্ণ, শ্রেণি, সমাজ ও অর্থ অ-মানবিক নানা বৈষম্য সৃষ্টি করে। দেশের যারা সাধারণ অথচ সংখ্যাগুরু তারা অসাম্যের স্বদেশে শোষণের বঞ্চনার জীবন কাটায়। মানবিক সফলতার জন্য ভাঙতে হয় অসাম্যের অচলায়তন, দিতে হয় স্বাধিকারের প্রতিষ্ঠা। কিন্তু অর্জনের ক্ষেত্রে প্রার্থনার আনুগত্য লক্ষ্যসিদ্ধি ব্যর্থ করে। আত্মশক্তির অভাব, আশ্রয়, আলস্য, অনুগ্রহ-নির্ভরতা কখনও সাফল্য দিতে পারে না। ‘ভিক্ষায়াং নৈব নৈব চ’। ভিক্ষার দৈন্যে অবিশ্বাসী মানুষ প্রতিবাদের পথ অনুসরণ করে। নিছক শারীরিক আস্ফালনও সিদ্ধির বাধা। কেননা যে-দাবীর সঙ্গে আনুপাতিক শ্রমের যোগ নেই, সে দাবী নিরালম্ব ও শূন্যগর্ভ। সাফল্যের উৎস ঘনিষ্ঠ শ্রমে। ভিক্ষাবৃত্তি নয়, নিরর্থক দাবী নয়, শ্রমশক্তিই সাফল্যের সম্ভাবনাকে পরিণতি দেয়। মানুষের চাওয়ার সঙ্গে পাওয়াকে মেলাতে হলে যোগ্য মানসিকতা গঠনের একান্ত প্রয়োজন। সে-মানসিকতার পরিচয় আগ্রহী কর্ম-সচেতনতায় নিহিত। ব্যক্তি-জীবনের প্রসঙ্গে এ সভ্য জাতীয় জীবনের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। একটি জাতির আকাঙ্ক্ষার বাস্তব রূপায়ণের ক্ষমতা জাতির শ্রম-প্রবণতায় দৃশ্য হয়। ঘৃণ্য পরানুগ্রহ, উদ্ধৃত আস্ফালন জাতির বিকাশের পথ রুদ্ধ করে। চাই তন্নিষ্ট শ্রমমুখিতা। স্বনির্ভরতার আদর্শ মেশানো সক্রিয় সাধনা। শ্রমশক্তিই অর্জনের অঙ্গীকার, সাফল্যের সংকেত। 

মানুষের জীবনে বিভিন্ন ধরনের চাহিদা থাকে। এ চাহিদা পূরণের জন্য পরিশ্রম অপরিহার্য। পরিশ্রম ছাড়া স্বনির্ভরতা সম্ভব নয়।
Post a Comment (0)
Previous Post Next Post