রচনা : আইনের শাসন

↬ আইনের শাসন ও বিচার বিভাগের স্বাধীনতা

↬ আইন ও সমাজ


ভূমিকা : ‘রুল অব ল’ ইংরেজি এই তিনটি শব্দের অর্থ হচ্ছে আইনের শাসন। আধুনিক মূল্যবোধে আইনের শাসন আজ গণতন্ত্র এবং মানবাধিকারের এক অবিচ্ছেদ্য ভিত্তিরূপে পরিগণিত হচ্ছে। এটা প্রায় অবিসংবাদিত যে আইনের শাসন গণতন্ত্রের এক অনিবার্য উৎস এবং পূর্বশর্ত।

আইনের শাসন কী? : আইনের শাসন হল সুষ্ঠু ও স্বাভাবিকভাবে রাষ্ট্র পরিচালনার নীতিবিশেষ, যেখানে সরকারের সকল ক্রিয়াকর্ম আইনের অধীনে পরিচালিত হবে এবং যেখানে আইনের স্থান সবকিছুর ঊর্ধ্বে।

ব্যবহারিক ভাষায়, আইনের শাসনের অর্থ এই যে, রাষ্ট্রক্ষমতায় অধিষ্ঠিত সরকার সর্বদা আইন অনুযায়ী কাজ করবে, যার ফলে রাষ্ট্রের যেকোনো নাগরিকের কোনো অধিকার লঙ্ঘিত হলে সে তার প্রতিকার পাবে।

ইন্টারন্যাশনাল কমিশন অব জুরিস্টস ‘রুল অব ল’ – এর সংজ্ঞা দিয়েছেন এভাবে, ‘রুল অব ল’ আনুষ্ঠানিক দলিলের চেয়ে বড়, অতিশয় সরকারি ক্ষমতার বিরুদ্ধে সমাজের সকল সদস্যের জন্য এ হচ্ছে ন্যায়বিচার ও আশ্রয় লাভের আইন।’ অন্য কথায় সরকারের ক্ষমতার প্রয়োগ ও ব্যবহার আইনের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হবে এবং প্রজাকে শাসকের সেচ্ছাচারিতার সম্মুখীন হতে হবে না।

আইনের শাসন ও সুশাসনের উপাদান এবং আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় করণীয় : আইনের শাসন নিম্নলিখিত বিষয়গুলোর উপর নির্ভর করে :

১। একটি স্বাধীন বিচার বিভাগ বা বিচার বিভাগের স্বাধীনতা।
২। আইনের শাসন তখনই বিদ্যমান থাকে, যখন সরকারি ক্ষমতা ও কর্তৃত্বের অনুশীলন সাধারণ আদালতের পর্যালোচনাধীন থাকে, যে আদালতের শরণাপন্ন হওয়ার অধিকার সকল নাগরিকের সমান। আর এজন্যে একটি গণতান্ত্রিক বা শাসনতান্ত্রিক সরকার ব্যবস্থার প্রয়োজন।
৩। সরকারের ক্ষমতার উৎস ও শাসনের ভিত্তি হবে জাতীয় সংসদ। সংসদের সকল সাংসদ তর্ক-বিতর্ক, আলাপ-আলোচনা গ্রহণ-বর্জন সমস্যা উত্থাপন সংযোজন-সংশোধন ইত্যাদির মাধ্যমে যুক্তিসংগত ও গণতান্ত্রিক পন্থায় প্রণীত সংবিধান বা আইন ব্যবস্থা করা।
৪। আইনের মাধ্যমে সরকারের বিভিন্ন বিভাগের সুনির্দিষ্ট ক্ষমতা নির্ধরণ।
৫। মৌলিক মানবাধিকার নিশ্চিতকরণ এবং জনগণের অর্থনৈতিক নিরাপত্তা, সামাজিক কল্যাণ ও সুশিক্ষার নিশ্চয়তা বিধান।

আইনের শাসনের প্রকারভেদ : দেশভেদে আইনের শাসনের বিভিন্ন প্রকারভেদ লক্ষ্য করা যায়। ইংল্যান্ডে যেসব সাধারণ নীতি দ্বারা আইনের শাসন নিশ্চিত হয়েছে তার অধিকাংশই সেখানকার নাগরিকদের আদালতে উত্থাপিত বিভিন্ন মামলার বিচার বিভাগীয় রায়ের ফসল। ওইসব রায়ে নাগরিকদের ব্যক্তিগত অধিকার নির্ধারিত হয়েছে এছাড়া ম্যাগনা কার্টা (১২১৫), দ্য পিটিশন অব রাইটস (১৬২৮) এবং বিল অব রাইটস (১৬৮৯) -এ ইংরেজদের স্বাভাবিক অধিকারসমূহ ঘোষিত হয়েছে, যা ওই দেশের আইনের শাসন নিশ্চিত করে। ইংরেজ জাতীয় ঐতিহ্য, রীতিনীতি, ব্যবহারবিধি এবং তাদের রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানসমূহের বিকাশের দীর্ঘ ইতিহাসের মধ্য দিয়ে ব্যক্তিগত অধিকার সম্পর্কে ইংরেজদের সচেতনতা গড়ে উঠেছে। সেগুলো পরবর্তী কালে সৃষ্ট অনেক রাষ্ট্রের লিখিত সংবিধানিক দলিলের মতোই পবিত্র ও অলঙ্ঘনীয়।

আইনের শাসন ও বাংলাদেশ : ১৯৭১ সালে স্বাধীনতার পর বাংলাদেশের সংবিধানে বিল অব রাইটস -এর অনেক বিষয় অনুরূপ ও সাধারণ বৈশিষ্ট্যসহ গৃহীত হয়। ১৯৭২ সালের সংবিধানে মৌলিক অধিকারসমূহ ছিল মর্যাদা, সুযোগ লাভ ও ধর্মপালনের অধিকারের সমতা; আইনের দৃষ্টিতে প্রত্যেক নাগরিকের স্বাধীনতা ও বাঁচার অধিকার সুরক্ষা; অযৌক্তিক গ্রেফতার বা আটক, বিচার বা দণ্ড থেকে সুরক্ষা; সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক ন্যায়বিচার; এবং মত প্রকাশের স্বাধীনতা। বাংলাদেশ সংবিধানের ২৭ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, আইনের দৃষ্টিতে সকলে সমান। সকল শ্রেণী এবং অভিন্ন আইনের অধীন যে আইন কার্যকর হবে সাধারণ আদালতের মাধ্যমে; জনজীবনের সকল ক্ষেত্রে সে আইনের প্রয়োগ হবে সমান। এ মতবাদের আইনগত দিকটি আইনের শাসন দ্বারা পরিচালিত যে কোনো দেশেই একটি মৌলিক অধিকার। সংবিধানের ২৯ অনুচ্ছেদেও এটা সুস্পষ্ট করা হয়েছে; সেখানে সরকারি চাকুরিতে সকল নাগরিকের সমান সুযোগ নিশ্চিত করা হয়েছে, জাতি ধর্ম, বর্ণ, গোত্র, লিঙ্গ বা জন্মস্থানের ভিত্তিতে কোনোরূপ বৈষম্যের শিকার হবে না। এটা সামাজিক ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে রাষ্ট্রিয় প্রয়াসের ইঙ্গিতবহ। ৩২ অনুচ্ছেদের মাধ্যমে সীমিত শাসন ও আইনের শাসনের ধারণাটি দৃঢ়তর হয়েছে, যেখানে একজন ব্যক্তির বাঁচার অধিকার ও স্বাধীনতা তথা মৌলিক অধিকারসমূহের মর্মবস্তু নিশ্চিত করা হয়েছে। অর্থাৎ নির্বাহী বিভাগের কর্তৃত্ববাদী ক্ষমতার অনুপস্থিতি ও ব্যক্তিগত স্বাধীনতার অধিকারের অঙ্গীকার রয়েছে এখানে। কিন্তু বাংলাদেশের ১৯৭২ সালের সংবিধানে এমন কোনো বিধান ছিল না যা মৌলিক অধিকারসমূহের মূল মর্ম সংকুচিত করে। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক যে, এ অবস্থা বেশিদিন বজায় থাকে না। দেড় বছরের মধ্যেই সংবিধানে জরুরি অবস্থা জারির বিধান সংযুক্ত হয়। অচিরেই নিরাপত্তা আইন, বিশেষ ক্ষমতা আইন এবং আরও কয়েকটি বিধিনিষেধমূলক পদক্ষেপ গৃহীত হয়। সংবিধানে এসব পরিবর্তন ও সংযোজনের ফলে একটি মুক্ত সমাজের আদি আদর্শিক ধারণা নিষ্প্রভ হয়ে পড়ে। এ ধরনের কয়েকটি কালো আইন এর মধ্যে -ছাপাখানা ও প্রকাশনা (প্রজ্ঞাপন নিবন্ধন) আইন ১৯৭৩, জাতীয় রক্ষীবাহিনী (সংশোধনী) বিল ১৯৭৪ ও বিশেষ ক্ষমতা (সংশোধনী) বিল ১৯৭৪ এক্ষেত্রে সর্বাধিক বৈশিষ্ট্যপূর্ণ। ১৯৭৫ সালে রাজনৈতিক পরিবর্তনের পর রাষ্ট্রপতি জেনারেল জিয়াউর রহমান সংবিধানে কতিপয় সংশোধনী ঘটনা; কিন্তু বিশেষ ক্ষমতা আইনসহ সকল নিরাপত্তা আইন অক্ষত রেখে দেওয়া হয় এবং সেগুলো আজও বলবৎ রয়েছে। ১৯৯০ সালের ডিসেম্বরে গণতান্ত্রিক আন্দোলন চলাকালে সকল প্রধান রাজনৈতিক দল এসব কালো আইন প্রত্যাহারের দাবি জানায়। কিন্তু ক্ষমতায় গিয়ে সবাই-ই এ বিষয়ে কোনো আগ্রহ না দেখিয়ে নীরবতা পালন করে।

আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় গণতান্ত্রিক সরকারের ভূমিকা : আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করার জন্য নিম্নলিখিত বিষয়গুলো নিশ্চিত করতে হবে। যেমন-

১। বিচার বিভাগের স্বাধীনতা।
২। বর্তমানে বিশেষ ক্ষমতা আইন ও অন্যান্য নিবৃত্তিমূলক যে সকল আইন বলবৎ রয়েছে সেগুলো বাতিলকরণ।
৩। সাংবিধানিক বা গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠা।
৪। সাংবিধানিক সরকার ব্যবস্থায় গড়ে তোলা। এ ব্যবস্থায় বহুদলীয় গণতন্ত্র থাকে বলে সরকারের পক্ষে একনায়কের ভুমিকা পালন করা সম্ভব হয় না।
৫। জনগণের সমর্থনের উপর সরকারের ক্ষমতায় আসা নির্ভর করে বলে সরকার আইনের শাসন নিশ্চিত করার মানসিকতা নিয়ে কাজ করতে হবে।
৬। মানুষের মৌলিক অধিকারের নিশ্চয়তা প্রদান।
৭। সর্বোপরি সংবিধানের যেসব আইন নাগরিক স্বাধীনতা, আইনের শাসন ও মৌলিক অধিকারসমূহকে বাধাপ্রাপ্ত করে সেসব আইন প্রত্যাহার করা।

আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় বিচার বিভাগের স্বাধীনতা : আইনের শাসন, গণতন্ত্র ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার অবিচ্ছেদ্য ভিত্তিরূপে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। বাংলাদেশ সংবিধানের ৪র্থ সংশোধনীর মাধ্যমে বিচার বিভাগের স্বাধীনতাকে প্রথম হরণ করা হয়। ১৯৭২ সালের সংবিধানের ২২ নম্বর অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, “রাষ্ট্রের নির্বাহী অঙ্গসমূহ হইতে বিচার বিভাগের পৃথকীকরণ রাষ্ট্র নিশ্চিত করিবে।” ১৯৭২ সালের সংবিধানের ১১৬নং অনুচ্ছেদে বলা হয় যে, ‘বিচারকার্য বিভাগে নিযুক্ত ব্যক্তিদের এবং বিচার বিভাগীয় দায়িত্ব পালনরত ম্যাজিস্ট্রেটদের নিয়ন্ত্রণ ও শৃঙ্খলা বিধান সুপ্রিম কোর্টের উপর ন্যাস্ত থাকবে।’ কিন্তু ১৯৭৫ সালের ৪র্থ সংশোধনীর মাধ্যমে সুপ্রিমকোর্টের ক্ষমতা খর্ব করে সেই ক্ষমতা রাষ্ট্রপতির উপর ন্যাস্ত করা হয়। এভাবে সুপ্রিমকোর্টের তথা বিচার বিভাগীয় স্বাধীনতাকে উপেক্ষিত ও খর্ব করা হয়েছে, যা সংবিধানের ২২ নং অনুচ্ছেদের পরিপন্থী। ফলশ্রুতিতে বিচার বিভাগে বিভিন্ন জটিলতা ও ভারসাম্যহীনতা দেখা দিয়েছে এবং দুর্নীতিপরায়ণ বিচারকদের বেপরোয়া করতে উৎসাহিত করছে, সমাজ ব্যবস্থায় নেমে এসেছে উচ্ছৃঙ্খলতা, আইন ব্যবস্থা ক্রমেই ভেঙে পড়ছে।

আশার কথা যে, বর্তমান সরকার (২০১৫) বিচার বিভাগ পৃথককরণ করেছেন। এই সরকারের জন্য এটি একটি মাইল ফলক। এ বিষয়ে সরকার প্রধান বলেন, ‘বিচার বিভাগের এই পৃথককরণ হয়েছে বৈশ্বিক প্রবণতা, সংবিধান ও আইনি কাঠামো এবং দেশের সর্বস্তরের জনগণের প্রত্যাশা অনুযায়ী।’ তিনি আরো বলেন, বিচার বিভাগ পৃথককরণ নিঃসন্দেহে একটি যুগোপযোগী ও আইনসিদ্ধ পদক্ষেপ। তবে এই পৃথককরণ কেবল ন্যায় বিচার নিশ্চিত করার জন্য যথেষ্ট নয়। এর ফলে বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেসিতে নিঃসন্দেহে তাৎপর্যপূর্ণ সংস্কার সূচিত হয়েছে। কিন্তু একটি ন্যায়নিষ্ঠ ও উন্নত সমাজ প্রতিষ্ঠা করতে হলে ফৌজদারী বিচার ব্যবস্থার অপর তিনটি স্তম্ভ আদালত, পুলিশ ও আইন পেশায়ও সংস্কার প্রয়োজন হবে। তিনি জানান, স্বাধীন বিচার বিভাগকে কার্যকর ও কর্মক্ষম করে তুলতে সরকার বিভিন্ন স্তরে জুড়িশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের ৬৫৫টি পদ এবং সহায়ক কর্মকর্তা-কর্মচারীর ৩৬১৮টি পদসহ মোট ৪২৭৩টি পদ সৃজন করেন।

বাংলাদেশে আইনের শাসনের সংকট : বর্তমানে আমাদের সমাজজীবনে চরম অবক্ষয়ের চিত্র জীবন্ত হয়ে আছে। আমাদের সমাজের সামনে আজ কোনো আদর্শ নেই। নেই অনুপ্রাণিত করার মতো কোনো মহৎ-প্রাণ মানুষ। ঘরে-বাইরে সর্বত্রই আজ মনুষ্যত্বের দীনতার চিত্র। একদিকে রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব-কলহ, অপরদিকে অর্থনৈতিক দুর্দশা, শিক্ষাজগতে নৈরাজ্য, সমাজসেবার নামে নিজের স্বার্থ হাসিল এবং স্বেচ্ছাচারিতা ইত্যাদি কর্মকাণ্ডের ফলে সমাজ জীবন অচল হয়ে পড়েছে। সমাজের সর্বক্ষেত্রে অপহরণ, শিশুপাচার, ধর্ষণ, এসিড নিক্ষেপ, নারী নির্যাতন, হত্যা, সন্ত্রাস ইত্যাদির কাছে মুখ থুবড়ে পড়ছে আইনের সমুন্নত বাণী। এর জন্য অনেক ক্ষেত্রে আইন প্রয়োগে ব্যর্থতা যেমন দায়ী তেমনি অনেকাংশে দায়ী আইন প্রয়োগকারী সংস্থাও। ফলে ভি আই পি অপরাধীরা আইনের ধরাছোঁয়ার ঊর্ধ্বে উঠে আইনের শাসনকে বুড়ো আঙ্গুল দেখাচ্ছে। ব্যাংক থেকে শত শত কোটি টাকা লোপাট করে নিয়ে বুক ফুলিয়ে বেড়াচ্ছে যারা, আইন তাদের কিছুই করতে পারছে না। বস্তুত আইনের শাসনকে ভূলুণ্ঠিত করায় সহায়তা করছে এক ধরনের রাজনৈতিক স্বার্থান্বেষী চক্র।

আশার কথা যে, বর্তমান সরকার সেবাধর্মী প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে দুর্নীতি উচ্ছেদে বিশেষ অভিযান শুরু করেন। অবৈধ লেনদেন ও রাষ্ট্রীয় সম্পদ ও ক্ষমতা অপব্যবহারে জড়িত থাকার অভিযোগে ইতোমধ্যে সাবেক প্রধান মন্ত্রী (খালেদা জিয়া), মন্ত্রী, সাংসদ, আমলা থেকে শুরু করে হাতেনাতে গ্রেফতার হয়েছে অনেক দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা-কর্মচারী। রাজউক, চউক, পিডিবি, ডেসা, ক্রীড়া পরিষদ, স্বাস্থ্য বিভাগ, ওষুধ প্রশাসন, শিক্ষা ভবন, পিএসসি. পুলিশ বিভাগ, ব্যাংক, আয়কর বিভাগ, বন বিভাগসহ বিভিন্ন সংস্থা ও দপ্তরে চলানো হচ্ছে শুদ্ধি অভিযান। এছাড়া দুর্নীতি দমন কমিশনকে একা কার্যকর ও স্বাধীন প্রতিষ্ঠানে রূপ দেয়া হয়েছে। দেশব্যাপী যৌথবাহিনী, পুলিশ ও র‌্যাব সদস্যরা মাঠ পর্যায়ে কাজ করে জঙ্গি তৎপরতা, সর্বহারা তৎপরতা, বিচ্ছিন্ন সংঘাত-সংঘর্ষ, রাজনৈতিক প্রতিহিংসা, শিক্ষাঙ্গনে সহিংসতা, ডাকাতি, রাহাজানি, ছিনতাই ইত্যাদি অপরাধ নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়েছে। বিভিন্ন অভিযোগে পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। এ ধরনের পদক্ষেপ অব্যহত থাকলে সমাজে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা পাবে তাতে কোন সন্দেহ নেই।

উপসংহার : দেশ ও জাতির মঙ্গলের জন্য আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার কোনো বিকল্প নেই। এর জন্য প্রয়োজন ‍সুস্থ গণতান্ত্রিক পরিবেশ সৃষ্টি করা, প্রশাসনিক স্বচ্ছতা, নীতিবোধ ও জবাবদিহিতামূলক গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া। ইতিহাসের নানা মোড় ফিরে এবং যোগ-বিয়োগ সেরে আমরা যে স্বাধীনতা অর্জন করেছি তা আমাদের ইতিহাসের এক অনন্য ঘটনা। আমরা আমাদের জাতীয় ভাষায় আমাদের সংবিধান রচনা করেছি। আমাদের চরিত্র-বৈশিষ্ট্যের জন্য যদি আমরা ঈপ্সিত আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করতে না পারি, তবে আমাদের ভবিষ্যৎ যে অনিশ্চিত এ কথা বলার আর অপেক্ষা রাখে না।

1 Comments

Post a Comment
Previous Post Next Post