↬ বাংলাদেশের জাতীয় বৃক্ষ
ভূমিকা : বাঙালিদের জীবন ও ঐতিহ্যের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ হলো আম গাছ। প্রাচীন, মধ্য ও আধুনিক সব সাহিত্যের আম গাছের কথা উল্লেখ রয়েছে। আম গাছ আমাদের জাতীয় গাছ। আমাদের জাতীয় অর্থনীতির একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করে রয়েছে আম গাছ।
ঐতিহ্যের আম গাছ : ভারতীয় উপমহাদেশের প্রাচীন বৃক্ষ হলো আম। আম গাছ পূর্ব ভারতে বিশেষ করে বাংলাদেশ, আসাম ও মায়ানমারের আদিবৃক্ষ। ‘আম’ শব্দটি সংস্কৃত ভাষা থেকে এসেছে যার অর্থ সংরক্ষিত খাদ্য। এ থেকে আমের গুরুত্ব বোঝা যায়। চীনা পর্যটক ইউয়েন সাংও আমের খুব প্রশংসা করেন। ভারতের প্রাচীন ধর্ম ও লোকসাহিত্যে আম গাছের উল্লেখ আছে। মহামুনি বুদ্ধ আম গাছের নিচে বসে ধ্যান করত।
আম গাছের বর্ণনা : আম গাছ চির সবুজ বৃক্ষ। এ গাছ বেশ বড় হয়। পূর্ণ বয়স্ক আম গাছ ছাতার আকৃতি ধারণ করে এবং বিশ মিটার লম্বা ও ত্রিশ মিটার প্রশস্ত হতে পারে। এর কাণ্ড মোটা, এবড়োথেবড়ো এবং ছাইরঙা ছাল দ্বারা আবৃত। আম গাছের পাতা কচি অবস্থায় হালকা সবুজ ও পরিণত হলে ঘন সবুজ হয়। আম গাছের মুকুল আসে ছোট ছোট। ফুলগুলো গুচ্ছ অবস্থায় লতার মতো ঝুলে থাকে। ফুলের রং হলুদাভ সাদা। চৈত্র-বৈশাখ মাসে আমের ফুল ফুটলে সুমিষ্ট গন্ধে চারপাশে ভরে ওঠে। আম গাছের কাঠ খুবই শক্ত হয়। কাঠ দিয়ে ঘরের থাম, নৌকা, বিভিন্ন আসবাবপত্র ইত্যাদি তৈরি করা হয়। হিন্দু সম্প্রদায় তাদের পূজায় আমের পল্লব ও শবদাহে চন্দন কাঠের পাশাপাশি আমগাছের কাঠও ব্যবহার করে।
আমের বৈশিষ্ট্য ও প্রকারভেদ : আম একটি গ্রীষ্মকালীন রসালো ফল। তবে বর্তমানে উদ্ভাবিত বিভিন্ন প্রজাতির আম গাছ রয়েছে যা বছরের প্রায় সব ঋতুতেই জন্মে। সাধারণত বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠ মাস থেকেই আম পাওয়া যায়। পাকা আম নরম ও রসালো হয়। কাঁচা আম কিছুটা শক্ত ও টক স্বাদযুক্ত হয়। পাকা আম বেশির ভাগই মিষ্টি স্বাদযুক্ত, আবার কিছু টক আমও পাওয়া যায়। আম বিভিন্ন আকৃতির হয়ে থাকে। ডিম্বাকৃতি, গোল, লম্বা ইত্যাদি আকৃতির আম পাওয়া যায়। আম আশযুক্ত অথবা আশ ছাড়া হতে পারে। কাঁচা আম সাধারণ সবুজ রঙের হয়। আম পাকলে তা সবুজাভ হলুদ, হলুদ, কমলা, লাল ইত্যাদি রং ধারণ করে। আবার অনেক আমে বিভিন্ন রঙের মিশ্রণ দেখা যায়। এমনকী পাকা আম সবুজও থাকতে পারে। বাংলাদেশে বিভিন্ন প্রজাতির আম পাওয়া যায়। যেমন : ফজলি, ল্যাংড়া, খিরসা, হিমসাগর, আম্রপালি, গোপালভোগ, মোহনভোগ ইত্যাদি। বাংলাদেশের প্রায় সব অঞ্চলেই আম গাছ পাওয়া যায়। তবে রাজশাহী, চাপাইনবাবগঞ্জ ও দিনাজপুরের বেশ খ্যাতি রয়েছে।
উপসংহার : আম গাছের বিবিধ ব্যবহার একে বাংলাদেশের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বৃক্ষে পরিণত করেছে। বর্তমানে বাংলাদেশ আমের অভ্যন্তরীণ চাহিদা মিটিয়ে দেশের বাইরেও রপ্তানি করছে। বাংলাদেশের সংস্কৃতির সঙ্গে আম গাছ যতটা জড়িত অন্যান্য গাছ ততোটা নয়। তাই আম গাছকে বাংলাদেশের জাতীয় গাছের মর্যাদা দেওয়া হয়েছে।
- প্রবন্ধ রচনা : বাংলাদেশের জাতীয় মাছ : ইলিশ মাছ
- প্রবন্ধ রচনা : বাংলাদেশের জাতীয় ফুল : শাপলা - [ Visit eNS ]
- প্রবন্ধ রচনা : বাংলাদেশের জাতীয় ফুল : শাপলা
- প্রবন্ধ রচনা : বাংলাদেশের জাতীয় ফল : কাঁঠাল
- প্রবন্ধ রচনা : বাংলাদেশের জাতীয় পাখি : দোয়েল
- প্রবন্ধ রচনা : বাংলাদেশের জাতীয় পশু : বাঘ
- প্রবন্ধ রচনা : বাংলাদেশের অর্থকরী ফসল : ধান
- প্রবন্ধ রচনা : বাংলাদেশের ফল
- প্রবন্ধ রচনা : বাংলাদেশের ফুল
- প্রবন্ধ রচনা : গরু
- Paragraph : Flowers of Bangladesh
- Composition : Fruits of Bangladesh
- Essay : Your Domestic Pet / The Birds of Bangladesh / Rice / Jute
- Composition : Tea / Cow
😊
ReplyDeleteNice
ReplyDeletegoob web
ReplyDelete