নামকরণ : আমাদের বিদ্যালয়ের নাম সোনাপুর উচ্চ বিদ্যালয়। আমাদের গ্রামের নামও সোনাপুর। সোনাপুর গ্রামের নাম অনুসারে আমাদের বিদ্যালয়ের নামকরণ করা হয় সোনাপুর উচ্চ বিদ্যালয়।
ইতিহাস ও ঐতিহ্য : আমাদের বিদ্যালয়টি ১৯৭৮ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। পুরান কালে আমাদের গ্রামে কোন হাই স্কুল ছিল না। বিদ্যালয়টি মূলতঃ সোনাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অভান্তরে যাত্রা শুরু করে। অনেক আগে থেকেই প্রাথমিক বিদ্যালয়টিকে “কালিয়ারতল” স্কুল নামে অভিহিত করা হয়। স্কুলের সামনে একটি বড় বট গাছ ছিল। বট গাছটির নিচে স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ “কালিপূজা” অনুষ্ঠান করত। এছাড়াও বাংলা নববর্ষের প্রথম সপ্তাহে বট গাছটির নিচে মেলা বসত। বট গাছটিকে বলা হত “অভয়বৃক্ষ”। বট গাছটিতে অনেক পাখির সমাবেশ ঘটত। গাছটিতে পাখি হত্যা ও পাখি শিকার নিষিদ্ধ ছিল।
অবস্থান : সোনাপুর উচ্চ বিদ্যালয়টি ফেনী শহরের উত্তর পূর্ব দিকে অবস্থিত। এটি এ জেলার একটি বিখ্যাত স্কুল। এটি শহর থেকে বেশি দূরে নয়। ফেনী শহর থেকে বিদ্যালয়টির দূরত্ব দুই কিলোমিটার। আমরা অতি সহজে সি.এন.জি. রিক্সা বা অটোরিক্সায় চড়ে স্কুলে যেতে পারি।
বিদ্যালয় এলাকা : আমাদের বিদ্যালয় এলাকা বেশ বড়। বিদ্যালয়ে প্রায় সাতশত ছাত্র-ছাত্রী রয়েছে। নিকটবর্তী গ্রামগুলো থেকে ছাত্র-ছাত্রীরা এ স্কুলে পড়তে আসে। সোনাপুর ছাড়াও আলোকদিয়া, ভালুকিয়া, শ্রীপুর, রুহিতিয়া, মালিপুর, গৌহাড়ুয়া এবং অশ্বদিয়া হল বিদ্যালয়ের এলাকাধীন গ্রাম।
প্রতিষ্ঠাকালীন চিন্তাচেতনা : আমাদের বিদ্যালয়ে ১৫ জন শিক্ষক শিক্ষিকা রয়েছে। মীর হোসেন ভূঁঞা আমাদের বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা। তিনি পূর্বে এই স্কুলের প্রধান শিক্ষক ছিলেন। তিনি ১৯৭১ সালে একজন মুক্তিযোদ্ধ কমান্ডারও ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধের পর তিনি গণশিক্ষা প্রসার বিশেষত গ্রাম অঞ্চলে নারী শিক্ষা বিস্তারে একটি হাই স্কুল প্রতিষ্ঠার চেষ্টা চালালেও পরবর্তীতে ১৯৭৮ সালে আমাদের বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয়।
অবকাঠামো : আমাদের বিদ্যালয়ে পনেরটি শ্রেণিকক্ষ, একটি স্টাফদের কক্ষ, একটি কম্পিউটার ল্যাব রয়েছে। একটি সাইন্স ল্যাবরেটরী, একটি অফিসকক্ষ ও একটি লাইব্রেরী রয়েছে। আমাদের বিদ্যালয়ে রয়েছে একটি মাল্টিমিডিয়া শ্রেণিকক্ষ। আমাদের বিদ্যালয়ের প্রয়োজনীয় শৌচাগার, একটি আর্সেনিকমুক্ত নলকূপ একটি পুকুর ও একটি খেলার মাঠ রয়েছে।
সহ-পাঠক্রমিক কার্যাবলী : আমাদের বিদ্যালয় মাঠে প্রত্যহ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে প্রত্যহ জাতীয় সংগীত পরিবেশিত হয়। বৃষ্টির দিনে মাঠে সমাবেশ না হলেও আমাদের বিদ্যালয় মিলনায়তনে সমাবেশ অনুষ্ঠান পরিচালনা করা হয়। বিদ্যালয়ের অফিস কক্ষের সামনে রয়েছে একটি জাতীয় পতাকার দণ্ড। প্রত্যহ সকালে ঐ দণ্ডে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। আমাদের বিদ্যালয়ের মাঠের পশ্চিম দিকে রয়েছে একট দুদৃশ্য শহীদ মিনার। বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের রয়েছে আলাদা নির্দিষ্ট পোশাক। বাৎসরিক শিক্ষা সফর, ক্রীড়া দিবস, অভিভাবক দিবস, জাতীয় দিবস, বিদ্যালয়ের ব্যবস্থা কমিটির সভা এবং নানা প্রকার কর্মসূচী প্রতিপালন করা হয়।
ফলাফল : আমাদের বিদ্যালয়ের এস.এস.সি. ও জে.এস.সি. পরীক্ষার ফলাফল ভালো। স্কুলটি শরীরচর্চা, খেলাধুলা, স্কাউটিং ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান সম্পাদনে যথেষ্ট সুনাম অর্জন করেছে। বিদ্যালয় শিক্ষার্থীরা ফুটবল, হেন্ডবল, ক্রিকেট, হকি, কাবাড়ি ও সাঁতার প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে থাকে। বিদ্যালয়ের ক্রীড়াবিদরা বিশেষ করে স্কাউটিং, হকি খেলা ও সাঁতার প্রতিযোগিতায় অংশ গ্রহণ করে বিদ্যালয়ের জন্য পুরষ্কার ও সুনাম বহন করে এনেছে।
উপসংহার : আমাদের বিদ্যালয়টি নতুন হলেও এর উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রা অত্যন্ত দ্রুত গতিতে এগিয়েছে। এলাকার জনপ্রতিনিধি অভিভাবক ও সাধারণ মানুষ বিদ্যালয়ের কল্যাণ কামনা করে। বিদ্যালয়টি আমাদের গ্রামীণ অঞ্চলে শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দিয়ে যাচ্ছে। আমি বিদ্যালয়টির জন্য গর্ব অনুভব করে থাকি।
ঠিক আছে ভাই
ReplyDeleteLove it ,,, sooo good
ReplyDelete