জ্ঞানহীন মানুষ পশুর সমান
ভাব-সম্প্রসারণ : জীবজগতে পশুর যেমন জ্ঞানবুদ্ধি ও বোধশক্তি নেই, তেমনি জ্ঞানহীন মানুষ আর পশুর মধ্যে কোনো পার্থক্য থাকে না। জ্ঞানচর্চার দ্বারা মানুষ যথার্থ মনুষ্যত্বের অধিকারী হয়ে ওঠে। তাই বলা হয়, ‘জ্ঞানার্জন ধনার্জনের চেয়ে মহত্তর।’
জ্ঞান মানুষের জীবনে হিরন্ময় দ্যুতিতে ভাস্বর এক অনন্য মানবীয় গুণ। জ্ঞান আছে বলেই মানুষ সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ। জ্ঞানার্জনের মাধ্যমেই মানুষ ভাল-মন্দ, ন্যায়-অন্যায় বিচারবোধের অধিকারী হতে পারে। জ্ঞান পরশমণি। জ্ঞানের পরশে জীবন আলোকিত হয়ে ওঠে। জীবনে সাফল্যলাভের জন্যে জ্ঞান মানুষকে কলুষমুক্ত জীবনের সন্ধান দেয় এবং মানুষকে অন্তর্নিহিত পাশবিক শক্তির বিনাশ সাধন করে পূত-পবিত্র জীবন গঠনে সহায়তা করে। শিক্ষার গুরুত্ব প্রতিপন্ন করতে আল্লাহতায়ালা বিশ্বনবী হযরত মুহম্মদ (স)-এর উপর কোরআনের প্রথম বাণী নাযিল করেন- ‘ইকরা’ এবং ‘পড়’। বিশ্বনবী (স) বলেছেন, ‘শিক্ষালাভের জন্যে সুদূর চীনদেশে যেতে হলেও যাও।’
পক্ষান্তরে, জ্ঞানহীন মানুষ আলোক-বিবর্জিত। তার মধ্যে কখনোই মনুষ্যত্বের বিকাশ ঘটে না বলে অন্তর্নিহিত পশুশক্তির তাড়নায় জীবনকে সে কুপথে ধাবিত করে। তার মধ্যে ভাল-মন্দ, ন্যায়-অন্যায় ইত্যাদির বিচারবোধ জন্মে না। পশুসুলভ আচার-আচরণে সে অভ্যস্ত হয়ে পড়ে। জ্ঞানহীন মানুষ সর্বদা হিংসা, বিদ্বেষ, লোভ-লালসা, কামনা-বাসনা প্রভৃতি কু-প্রবৃত্তির দাসত্বে নিমগ্ন থাকে। তই জ্ঞানহীন মানুষ সমাজের শত্রু, দেশের শত্রু, জাতির শত্রু, জগতের শত্রু।
জীবনের অভিজ্ঞতা থেকে মানুষের জ্ঞানের উন্মেষ ঘটে। মানুষ হিসেবে শ্রেষ্ঠত্ব লাভের জন্যে জ্ঞানের সহায়তা অপরিহার্য। অন্য প্রাণীর সাথে মানুষের পার্থক্য এখানেই। বিশ্বের তাবৎ প্রাণীর ওপর মানুষ প্রভুত্ব করছে জ্ঞানের শক্তিতেই। তাই জ্ঞান অর্জিত না হলে মানুষ আর পশুর মধ্যে কোনো ব্যবধান থাকে না।
এই ভাবসম্প্রসারণটি অন্য বই থেকেও সংগ্রহ করে দেয়া হলো
মানুষ ও পশু উভয়ই আল্লাহর সৃষ্ট জীব। আপাতদৃষ্টিতে মানুষ ও পশুর মধ্যে বিশেষ কোনো পার্থক্য নেই। উভয়েই প্রকৃতির দাস, রিপুর অধীন। উভয়েই যখন রিপুর তাড়নায় উত্তেজিত হয়ে উঠে, তখন তাদের হিতাহিত কোনো জ্ঞান থাকে না, তখন মানুষ ও পশুর মধ্যে পার্থক্য নির্ণয় করার কোনো উপায় থাকে না। তখন মানুষও পশুতে পরিণত হয়।
মানুষ ও পশুর মধ্যে পার্থক্য নিরূপণের জন্য উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো 'বিবেক'। মানুষের মধ্যে বিবেক আছে, কিন্তু পশুর মধ্যে কোনো বিবেক নেই। মানুষের বিবেক তার মধ্যে সুপ্ত থাকে। এই সুপ্ত বিবেককে জাগ্রত বা কার্যকর করার একমাত্র উপায় শিক্ষা বা জ্ঞান। শিক্ষা না থাকলে জ্ঞানের অভাব হয়; আর জ্ঞানের অভাব বা অজ্ঞানতার জন্য মানুষের বিবেক জাগ্রত হতে পারে না। ফলে মানুষ ভালো-মন্দ, ন্যায়-অন্যায় বিচার করে ঠিক করতে পারে না। তখন মানুষ পশুর মতই অন্যায়-অবিচার করে থাকে পাশবিক বৃত্তির বশবর্তী হয়ে পশুর ন্যায় হিংস্র হয়ে উঠে। জ্ঞানহীন মানুষ ক্রোধান্ধ হয়ে যে কোনো নিচ ও জঘন্য কাজ করতেও কুণ্ঠাবোধ করে না। অপরপক্ষে পশুকে প্রশিক্ষণের দ্বারা বিভিন্ন প্রকার জ্ঞান দান করলে তারা অনেক সময় সুন্দর ও সুশৃঙ্খল আচরণ করে থাকে। একমাত্র শিক্ষালব্ধ জ্ঞানের জন্যই তা সম্ভব হয়ে থাকে। মানুষকে সৃষ্টি সেরা জীব বলা হয়। কিন্তু জ্ঞানহীন মানুষকে সৃষ্টির সেরা জীব বলা যায় না। কারণ সে মানুষের অন্তরে জ্ঞানের প্রদীপ প্রজ্জ্বলিত হয়নি, অজ্ঞানতার অভিশাপ থেকে সে মানুষ মুক্ত হতে পারেনি। মনুষ্যপদবাচ্য হয়েও সে মানুষ পশুতর জীবনযাপন করে। মনুষ্যসমাজ তার নিকট ভালো কিছু আশা করতে পারে না। যার নিজের জীবনই বিকশিত নয়, যে জীবনের সার্থক বিকাশের জন্য প্রয়োজনীয় জ্ঞান অর্জন করতে পারে নি, সে অন্য মানুষের কল্যাণ সাধন করবে কিভাবে? এই সংগ্রামপূর্ণ পৃথিবীতে যোগ্য লোকেরাই টিকে থাকার সুযোগ পায়। সেজন্য জ্ঞান লাভের লক্ষ্যে মানুষের সারাজীবন ব্যয়িত হয় এবং এই জ্ঞানলব্ধ মানুষের অভিজ্ঞতার অবদানে মানব জাতি সমৃদ্ধশালী হয়। যে মানুষের মধ্যে এই জ্ঞান নেই তার বুদ্ধি বিকশিত হয় না, তার যোগ্যতা অর্জিত হয় না। ফলে মানুষের কল্যাণ করা দূরে থাকুক, নিজেকে রক্ষা করার মত যোগ্যতাও সে লাভ করতে পারে না। জ্ঞানের অভাবে সে তখন নির্জীব হয়। এরূপ মানুষ ও পশুর মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই। এজন্যই বলা হয়ে থাকে, জ্ঞানহীন মানুষ পশুর সমান।
It was very beneficial❤❤
ReplyDeleteIt was the best for forever😘😘😘
ReplyDelete☺️☺️☺️☺️☺️☺️
ReplyDeletethanks
ReplyDeleteReally it is very nice
ReplyDeleteReally it’s very very nice
ReplyDeleteIts good💫
ReplyDelete