ভূমিকা : বাংলাদেশ বিশ্বের একটি অন্যতম দারিদ্র্যপীড়িত দেশ। বাংলাদেশে যেসব সামাজিক সমস্যা রয়েছে তার মধ্যে দারিদ্র্য প্রধান সমস্যা। দারিদ্র্যের নির্মম কষাঘাতে এ দেশের সমাজজীবন চরমভাবে বিপর্যস্ত। দারিদ্র্য আমাদের জাতীয় জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে উন্নতি ও অগ্রগতির ধারাকে ব্যাহত করছে। ন্যূনতম জীবনযাত্রার মান বজায় রাখতে পারছে না এ দেশের প্রায় এক-চতুর্থাংশ মানুষ। দারিদ্র্যের প্রভাব আমাদের দেশের মানুষ মৌলিক মানবিক চাহিদা পূরণে প্রতিনিয়ত ব্যর্থ হয়ে বিভিন্ন ধরনের অপরাধ ও অপকর্ম করছে। কাজেই দারিদ্র্য বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের প্রধান প্রতিবন্ধক। বর্তমান প্রেক্ষাপটে তাই বাংলাদেশের দারিদ্র্য ও দারিদ্র্য বিমোচনের লক্ষ্যে সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে গৃহীত কর্মসূচিসমূহের পর্যালোচনা অত্যন্ত গুরুত্বের দাবিদার।
দারিদ্র্য : দরিদ্র্য একটি আপেক্ষিক বিষয়। একে সুনির্দিষ্টভাবে সংজ্ঞায়িত করা যায় না। আভিধানিক অর্থে ‘দারিদ্র্য’ বলতে অভাব বা অনটনকেই বোঝায়। দারিদ্র্য মানে মৌলিক সামর্থ্যের অভাব। ন্যূনতম খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা ও চিকিৎসার অভাবসমূহ মৌলিক সামর্থ্যের অভাবের আওতায় পড়ে। বস্তুত বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে দরিদ্র হলো সেই ব্যক্তি, যে তার আর্থিক সামর্থ্যের অভাবে নিতান্ত প্রয়োজনীয় খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান এবং চিকিৎসার ন্যূনতম মানও বজায় রাখতে পারে না।
বাংলাদেশের দারিদ্র্য পরিস্থিতি : যদিও বিভিন্ন পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনাসহ সার্বিক অর্থনৈতিক উন্নয়নের লক্ষ্যে প্রণীত সকল নীতি-পরিকল্পনায় দারিদ্র্য বিমোচনকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে বিগত প্রায় সব সরকারই বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে এবং দারিদ্র্য বিমোচনের প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে, তবুও বাংলাদেশে দারিদ্র্য পরিস্থিতি এখনো উদ্বেগজনক। বিভিন্ন তথ্য মতে, দেশে দারিদ্র্য ক্রমাহ্রাসমান হলেও এখনো দারিদ্র্যের উপস্থিতি সুবিস্তৃত ও গভীর। বর্তমানে দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাসকারী জনগণের সংখ্যা প্রায় ২৪ শতাংশ। ‘রূপকল্প ২০২১’ পূরণে ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশে দারিদ্র্যসীমা ১৫ শতাংশ কমিয়ে আনার পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে।
সমাজে দারিদ্র্যের প্রভাব : বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক জীবনে দারিদ্র্যের বিরূপ প্রভাবের বিশেষ বিশেষ দিকগুলো নিচে অতি সংক্ষেপে আলোচনা করা হলো :
১. দারিদ্র্যের ব্যাপকতার ফলে দেশের একটি বিশাল জনগোষ্ঠী অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা, চিকিৎসা ও চিত্তবিনোদনসহ তাদের জীবনের কোনো মৌলিক চাহিদাই সঠিকভাবে পূরণ করতে পারছে না।
২. ‘যত মানুষ তত রোজগার’ -এই ধারণার বশবর্তী হয়ে দরিদ্র জনগণ অধিক সন্তান জন্ম দেয় বলে দেশের জনসংখ্যা দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে।
৩. দাম্পত্য কলহ, পারিবারিক ভাঙন, আত্মহত্যা, যৌতুকপ্রথা, পতিতাবৃত্তি, অপরাধপ্রবণতা প্রভৃতি দারিদ্র্যের কারণে বৃদ্ধি পাচ্ছে।
৪. দারিদ্র্যের ব্যাপকতার কারণেই বাংলাদেশে কৃষি খাত, ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প, ভারী শিল্পসহ ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে প্রত্যাশিত উন্নতি ঘটছে না।
৫. দারিদ্র্যের প্রভাবে দেশে স্বাস্থ্য ও পুষ্টিহীনতা ব্যাপকহারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলে বার্ধক্য, অকালমৃত্যু, অন্ধত্ব, দুর্বলতা, অসুস্থতা প্রভৃতি ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পাচ্ছে।
এক কথায় বলা চলে, দারিদ্র্য হলো সকল সামাজিক সমস্যার মূল উৎস এবং আমাদের দেশে জাতীয় উন্নয়নের প্রধান অন্তরায়। দারিদ্র্য শুধু একটি সামাজিক সমস্যাই নয়, বরং বহু সামাজিক সমস্যার জন্মদাতাও। তাই দারিদ্র্য বাংলাদেশের জন্য একটি মারাত্মক অভিশাপ।
বাংলাদেশে দারিদ্র্যের কারণ : বাংলাদেশে দারিদ্র্যের ব্যাপকতার জন্য কোনো একক কারণ দায়ী নয় বরং বহুবিধ কারণেই এ দেশে দারিদ্র্য ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে। বাংলাদেশে দারিদ্র্য বিস্তারের প্রধান কারণহলো দীর্ঘ সময় ধরে সাম্রাজ্যবাদী ও ঔপনিবেশিক শাসকদের দ্বারা শোষিত হওয়া, অনুন্নত কৃষিব্যবস্থা, অনগ্রসর শিল্পব্যবস্থা, ক্রটিপূর্ণ শিক্ষাব্যবস্থা, মাত্রাতিরিক্ত জনসংখ্যা, কুসংস্কার ও ভাগ্যের ওপর নির্ভরশীলতা, প্রাকৃতিক দুর্যোগের ব্যাপকতা, দারিদ্র্যের দুষ্টচক্র, সম্পদের অসম বণ্টন, মুদ্রাস্ফীতি ও দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি, নিরক্ষরতা ও অজ্ঞতা, ভয়াবহ বেকারত্ব, ব্যাপক বাণিজ্য ঘাটতি, সামাজিক নিরাপত্তার অভাব, প্রাকৃতিক সম্পদের সম্পদের অপূর্ণ ব্যবহার, বাস্তবমুখী নীতি ও পরিকল্পনার অভাব, মহিলাদের কর্মসংস্থানের অভাব, প্রশাসনিক ও রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা, ব্যাপক আকারে দুর্নীতি ইত্যাদি।
দারিদ্র্য বিমোচনে সরকারি কর্মসূচি : বাংলাদেশ সরকার দেশের দারিদ্র্য বিমোচনের জন্য যে সকল কর্মসূচি গ্রহণ করেছে সেগুলো নিচে আলোচনা করা হলো :
সামাজিক নিরাপত্তা : বর্তমান ২০১৮-১৯ অর্থবছরের বাজেটে সামাজিক নিরাপত্তা ও কল্যাণ খাতে ৬৪৬৫৬ কোটি টাকা বরাদ্দ প্রদান করা হয়েছে। তাছাড়া, মধ্যম ও দীর্ঘমেয়াদে বাস্তবায়নের জন্য সংশ্লিষ্ট কার্যক্রম (২০১০-১১)-এর আওতায় পলিসি সাপোর্ট হিসেবে গ্রহীত পদক্ষেপসমূহ বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে নিম্নলিখিত কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে :
- চলতি অর্থবছরে বয়স্ক, দুস্থ মহিলা, অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধা, প্রতিবন্ধী, এতিম প্রভৃতি জনগোষ্ঠীর জন্য বিভিন্ন ভাতা হিসেবে নগদ প্রদান ও খাদ্য নিরাপত্তা কার্যক্রমের পরিধি ও বরাদ্দ বৃদ্ধি করা হয়েছে।
- সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্য (এমডিজি) বিবেচনায় রেখে দারিদ্র্য বিমোচন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনকল্পে ২০১৮-১৯ অর্থবছরের বাজেটে সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টুনীর আওতায় সামাজিক নিরাপত্তা ও সামাজিক ক্ষমতায়ন খাতে ৬৪৬৫৬ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর আওতায় নগদ প্রদান হিসেবে বয়স্ক ভাতা বাবদ ২৪০০ কোটি টাকা, স্বামী পরিত্যক্তা দুঃস্থ মহিলাদের জন্য ৮৪০ কোটি টাকা, অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধা সম্মানী ২৭১৩ কোটি টাকা। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় ২০১৮-১৯ অর্থ বছরের বাজেটে বরাদ্দ রাখা হয়েছে ১৮৯৪৮.৭৪ কোটি টাকা। এছাড়া ২০১৮-১৯ অর্থবছরের বাজেটে বাংলাদেশ ক্লাইমেট চেঞ্জ ট্রাস্ট ফান্ড (বিসিসিটি) বা জলবায়ু তহবিলে ৩০০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখার প্রস্তুাব করেন অর্থমন্ত্রী।
- দারিদ্র্য বিমোচন ফাউন্ডেশন, পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশন (PKSF), মিউনিসিপ্যাল ডেভেলপমেন্ট ফান্ড (MDF), সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন (SDF), বাংলাদেশ এনজিও ফাউন্ডেশন (BNF), ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট কোম্পানি লিমিটেড (IDCOL) প্রভৃতি প্রতিষ্ঠানের কাছে ন্যস্ত ক্ষুদ্র ঋণ ও বিনিয়োগ তহবিলসমূহের সঞ্চালন গতি বৃদ্ধির চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে PKSF, SDF ও মহিলাদের আত্মকর্মসংস্থানের জন্য ক্ষুদ্র ঋণ কর্মসূচি বাবদ যথাক্রমে ৯০ কোটি টাকা ৪২৫ কোটি টাকা ও ৪৫.২৪ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়।
- সরকারি শিশু পরিবার ও অন্যান্য নিবাসীদের খোরাকী ভাতা ৪৬.২৪ কোটি টাকা হতে ৫১.০০ কোটি টাকায় উন্নীত করা হয়েছে। শহীদ পরিবার ও মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য রেশন বাবদ ৩৩.০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে এছাড়া বিভিন্ন খাতে/কর্মসূচির জন্য থোক বরাদ্দ হিসেবে ২৪৯ কোটি টাকার অনুদান রাখা হয়েছে।
- সরকারের fiscal কার্যক্রম অব্যাহত এবং জোরদার করার প্রয়োজনে বিশ্বব্যাংক এবং ঐশীয় উন্নয়ন ব্যাংকসহ উন্নয়ন সহযোগী সংস্থাসমূহের বিশেষ বাজেট সহায়তা (Budget Supoort) গ্রহণের প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
- পল্লী উন্নয়ন বোর্ড, যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর, সমাজকল্যাণ অধিদপ্তর, মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর, মৎস্য অধিদপ্তর, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর, বিসিক প্রভৃতি প্রতিষ্ঠানের কাছে বিদ্যমান ঘূর্ণায়মান ক্ষুদ্রঋণ তহবিলসমূহের সঞ্চালন ও প্রচলন গতি বৃদ্ধির জন্য উদ্যোগ অব্যাহত রয়েছে।
- প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে দারিদ্র্য বিমোচনের জন্য উপরোক্ত পদক্ষেপসমূহকে কতিপয় কার্যক্রম বাস্তবায়নের লক্ষ্যে সামাজিক নিরাপত্তা ও সামাজিক ক্ষমতায়ন খাতে নিম্নলিখিত কার্যক্রমের অনুকূলে বরাদ্দ বৃদ্ধি করা হয়েছে।
উন্নয়ন বাজেটের আওতায় দারিদ্র্য বিমোচন কর্মসূচি : সরকারি উদ্যোগে দারিদ্র্য বিমোচনের জন্য ওপরের কর্মসূচিসমূহ ছাড়াও উন্নয়ন বাজেটের আওতায় সরাসরি দারিদ্র্য বিমোচনে অবদান রাখার লক্ষ্যে আদর্শ গ্রাম, সমন্বিত মৎস্য কার্যক্রমের মাধ্যমে দারিদ্র্য বিমোচন, পশুসম্পদ উন্নয়ন কার্যক্রমে আত্মকর্মসংস্থান, গ্রামীণ মহিলাদের জন্য কর্মসংস্থান সৃষ্টি, কৃষি বহুমুখীকরণ ও নিবিড়করণ, তাঁতিদের জন্য ক্ষুদ্রঋণ কর্মসূচি, ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পের মাধ্যমে আত্মকর্মসংস্থান, দারিদ্র্য বিমোচনে স্থানীয় জনগণের অংশগ্রহণ বৃদ্ধিকরণ, সামাজিক ক্ষমতায়ন, পল্লী অবকাঠামো উন্নয়ন, পল্লী বিদ্যুতায়ন, গ্রামীণ স্যানিটেশন প্রকল্প, উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা কার্যক্রম, মাধ্যমিক স্তরের ছাত্রীদের উপবৃত্তি প্রদান, মসজিদভিত্তিক দারিদ্র্য বিমোচন, পল্লী মাতৃকেন্দ্রের মাধ্যমে জনসংখ্যা কার্যক্রম জোরদারকরণ, সম্প্রসারিত পল্লী সমাজকর্ম, দরিদ্র মহিলাদের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন, যুব প্রশিক্ষণ ও আত্মকর্মসংস্থান ইত্যাদি কর্মসূচি বাস্তবায়িত হচ্ছে।
অন্যান্য সংস্থার দারিদ্র্য বিমোচন কর্মসূচি : বাংলাদেশের দারিদ্র্য বিমোচনের লক্ষ্যে স্থানীয় সরকার ও প্রকৌশল অধিদপ্তর (LGED), বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন বোর্ড (BRDB), পল্লী দারিদ্র্য বিমোচন ফাউন্ডেশন এবং বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন একাডেমী বিভিন্ন ধরনের কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে।
দারিদ্র্য বিমোচনে সফলতার জন্য করণীয় : দারিদ্র্য বিমোচনের ক্ষেত্রে বেশ কিছু ইতিবাচক অগ্রগতি ও সফলতা অর্জিত হলেও বাংলাদেশে দারিদ্র্যের প্রভাব ও বিস্তার এখনো অত্যন্ত ভয়াবহ ও ব্যাপক। দারিদ্র্য বিমোচনের লক্ষ্যে গৃহীত কর্মসূচিসমূহ সংগঠিত, পরিকল্পিত, পর্যাপ্ত এবং বৈজ্ঞানিক জ্ঞান ও দক্ষতা নির্ভর না হওয়ায় এ ক্ষেত্রে প্রত্যাশিত সফলতা অর্জিত হচ্ছে না। নিচে বাংলাদেশে দারিদ্র্য বিমোচনে সফলতা লাভের জন্য কয়েকটি উপায়ের কথা উল্লেখ করা হলো :
- ধনী-গরিবের মাঝে বিদ্যমান ব্যাপক বৈষম্য দূর করার কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
- যে কোনো মূল্যে বেকার জনগোষ্ঠীর কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে হবে।
- জাতীয় পর্যায়ে দারিদ্র্য বিমোচনের বাস্তবমুখী নীতি, পরিকল্পনা ও কর্মসূচি প্রণয়ন করে তা স্থানীয় জনগণের অংশগ্রহণের মাধ্যমে বাস্তবায়ন করতে হবে।
- কর্মমুখী ও বাস্তবভিত্তিক শিক্ষাব্যবস্থা চালু করতে হবে।
- রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে হবে।
- আইনের শাসন, সুবিচার, সুশাসন ও ন্যায়নীতি প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
- যোগাযোগ ও যাতায়াত ব্যবস্থার উন্নতি করতে হবে।
- সরাসরি বৈদেশিক বিনিয়োগ (FDI) বৃদ্ধির ব্যবস্থা করতে হবে।
উপরিউক্ত পদক্ষেপসমূহ বাস্তবায়ন করতে পারলে বাংলাদেশের জনগণকে দরিদ্র্যের চরম অভিশাপ থেকে মুক্ত করা সম্ভব হবে।
উপসংহার : দারিদ্র্য বাংলাদেশের একটি জটিল ও মারাত্মক সামাজিক সমস্যা। দারিদ্র্যই বাংলাদেশের জাতীয় উন্নতি ও অগ্রগতির পথে প্রধান প্রতিবন্ধক এবং দেশের হাজারো সমস্যার জন্মদাতা। তাই যে কোনো মূল্যে দারিদ্র্য বিমোচন করতে হবে। কিন্তু দারিদ্র্য বিমোচন তথা অর্থনৈতিক উন্নয়ন একটি বহুমাত্রিক ও জটিল বিষয়। দারিদ্র্য বিমোচনের জন্য সর্বাগ্রে প্রয়োজন অর্থনীতিতে উচ্চ প্রবৃদ্ধি অর্জন ও জাতীয় আয়ের সুষম বণ্টন। বাংলাদেশে সার্বিক অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও দারিদ্র্য বিমোচনের লক্ষ্যে বার্ষিক প্রবৃদ্ধি ৬ থেকে ১০ শতাংশে উন্নীত করা ছাড়া অন্য কোনো বিকল্প নেই। এজন্য দেশের সরকার ও সর্বস্তরের জনগণকে অব্যাহত প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে।