ভূমিকা : সাইবার অপরাধ ও সাইবার নিরাপত্তা বর্তমান বিশ্বে সর্বাধিক আলোচিত বিষয়। ‘উইকিলিকস’-এর প্রতিষ্ঠাতা জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ ও ‘সিআইএ’-র তথ্য ফাঁসকারী এডওয়ার্ড স্নোডেনের কল্যাণে বিষয়টি এজেন্ডা হিসেবে বিশ্বরাজনৈতিক পরিমণ্ডলে চলে আসে। তাছাড়া ‘পানামা পেপার্স’ কেলেংকারি ও ‘বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরি’ এতে নতুন মাত্রা যোগ করে। ১২ মে ২০১৭ বিশ্বের ১৫০টি দেশে একযোগে ‘র্যানসমওয়্যার’ দিয়ে ভয়াবহ সাইবার হামলা প্রযুক্তিপ্রেমীদের চরম আতঙ্কে ফেলে দিয়েছে। সাইবার অপরাধ একটি সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, জাতীয়, বৈশ্বিক ও নৈতিক অপরাধ। বাংলাদেশের মতো তথ্যপ্রযুক্তিতে দ্রুত উন্নয়নশীল দেশের জন্য এটি চরম উদ্বেগের বিষয়।
অপরাধ : সাধারণভাবে অপরাধ বলতে সমাজ কর্তৃক শাস্তিযোগ্য কোনো অন্যায় আচরণকে বুঝায়। সমাজবিজ্ঞানী এমিল ডুর্খেইম মনে করেন, অপরাধ একটি সামাজিক ঘটনা। এটি সমাজ ব্যবস্থার একটি ‘স্বাভাবিক’ রূপ। যদিও সমাজভেদে তা স্বল্প বা তীব্র মাত্রার হয়ে থাকে। তিনি মনে করেন সমাজে টিকে থাকার জন্য অনেক সময় অপরাধের আশ্রয় নিতে হয়। এটা সমাজ কাঠামোর দুর্বলতার ফল।
সাইবার অপরাধ : তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক অপরাধ হলো সাইবার অপরাধ। এক্ষেত্রে অপরাধী কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের কম্পিউটারে অনাধিকার প্রবেশ করে ঐ ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের তথ্য-উপাত্ত চুরি করে এবং নিজ স্বার্থে তা ব্যবহার করে। এছাড়া ওয়েবসাইটের মাধ্যমে বিকৃত বা অসত্য তথ্য প্রকাশ, অশ্লীল ও কুরুচিপূর্ণ বা ভিডিও প্রকাশ এবং অনুমতি ব্যতীত অন্য কারো মন্তব্য, তথ্য বা ছবি প্রকাশও সাইবার অপরাধ। ফেসবুকে বা কোনো গণমাধ্যমে কাউকে নিয়ে মানহানিকর বা বিভ্রান্তিমূলক কিছু পোস্ট করলে, ছবি বা ভিডিও আপলোড করলে, কারও নামে অ্যাকাউন্ট খুলে ভিভ্রান্তিমূলক পোস্ট দিলে, কোনো স্ট্যাটাস দিলে কিংবা শেয়ার বা লাইক দিলেও সাইবার অপরাধ হতে পারে। কাউকে ইলেকট্রনিক মাধ্যমে হুমকি দিলে, অশালীন কোনো কিছু পাঠালে কিংবা দেশবিরোধী কোনো কিছু করলে তা সাইবার অপরাধ হবে। আবার ইলেকট্রনিক মাধ্যমে হ্যাক করলে, ভাইরাস কিংবা কোনো সিস্টেমে অনধিকার প্রবেশ করলে, অনলাইনে যে কোনো অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত হলে তাও সাইবার অপরাধ।
মোদ্দা কথা, ইন্টারনেট অথবা তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে যে কোনো অপরাধ করলে তাকেই সাইবার অপরাধ বলে।
সাইবার অপরাধের মাধ্যম : প্রথমত কম্পিউটার ও ইন্টারনেট ব্যবহার করে সাইবার অপরাধ করা হয়। বর্তমান কম্পিউটার ও ইন্টানেট হাতের মুঠোয়। এছাড়া ট্যাব, স্মার্টফোন এসব ব্যবহার করে নিমিষে ‘বিশ্বভ্রমণ’ করা যায়। অ্যাকসেস করা যায় ফেসবুক, টুইটার, ইয়াহু, স্কাইপ, ভাইভার, ইমো, ম্যাসেঞ্জার, হোয়াইটসঅ্যাপে। এছাড়া আছে গুগল, গুগল প্লাস, ডুডুল, লিংকডইন, ইনস্ট্যাগ্রাম, ফ্লিকার, কম্পিউটার ও ক্লাউড। এ মাধ্যমগুলো ব্যবহার করে হ্যাকিং, সাইবার বুনিং, ই-মেইল স্পাম ও ফিশিং, অনলাইন কেলেঙ্কারি ও প্রতারণা, নারী ও শিশুদের বিকৃত ছবি আপলোডসহ, ইলেক্ট্রনিক মানি লন্ডারিং, অপরাধমূলক ষড়যন্ত্রের জন্য পারস্পরিক যোগাযোগ, টেলিযোগাযোগের মাধ্যমে ষড়যন্ত্র, সাইবার সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি ইত্যাদি সাইবার অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড সংঘটিত হচ্ছে।
সাইবার অপরাধের প্রকারভেদ : বিভিন্ন প্রকার সাইবার অপরাধের মধ্যে নিচের আলোচনায় প্রধান প্রধান কয়েকটি আলোচনা করা হলো :
১. সাইবার সন্ত্রাস : সাইবার সন্ত্রাসী হলো সেই ব্যক্তি যে সরকার বা প্রশাসনকে একটি কম্পিউটারভিত্তিক আক্রমণ করে তাঁদের রাজনৈতিক বা সামাজিক উদ্দেশ্য জানতে ভয় প্রদর্শন বা বাধ্য করে। যেমন, নিজেদের দাবী মানতে কর্তৃপক্ষকে বাধ্য করার জন্য ইন্টারনেটে প্রচার করা হলো যে, ছুটির সময় বোমা হামলা হবে, এটাকে সাইবার সন্ত্রাস হিসেবে বিবেচনা করা যেতে পারে।
২. সাইবার চাঁদাবাজি : সাইবার চাঁদাবাজি তখনই ঘটে যখন একটি ওয়েবসাইট, ই-মেইল, সার্ভার বা কম্পিউটার সিস্টেম ক্ষতিকারণ হ্যাকার দ্বারা বশীভূত হয়রানি পুনরাবৃত্তি হামলার সম্মুখীন হয়। এ হ্যাকাররা হামলা বন্ধ করার জন্য এবং ‘সুরক্ষা’ প্রদানের প্রস্তাব করার বিনিময়ে অর্থ দাবি করে। ফেডারেল ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশন অনুযায়ী, সাইবার চাঁদাবাজরা ক্রমবর্ধমানভাবে কর্পোরেট ওয়েবসাইট এবং নেটওয়ার্ক আক্রমণ করছে, তাদের কাজ করার ক্ষমতা পঙ্গু করে দিচ্ছে এবং তাদের সেবা পুনরুদ্ধার করতে অর্থ দাবি করছে।
৩. সাইবার যুদ্ধ : মার্কিন প্রতিরক্ষা বিভাগ দাবি করেছে যে, বেশ কিছু সাম্প্রতিক ঘটনার কারণে ভূ-কৌশলগত গুরুত্ব বিবেচনায় সাইবারস্পেস একটি জাতীয় পর্যায়ের উদ্বেগ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে। ২০০৭ সালে এস্তোনিয়ার পরিকাঠামোতে রাশিয়ান হ্যাকার দ্বারা হামলা এর অন্তর্ভুক্ত। ২০০৮ এর আগস্টে রাশিয়া আবার জর্জিয়ার বিরুদ্ধে একটি সমন্বিত ও সুসংগত কথিত সাইবার আক্রমণ চালায়। ভয়ের বিষয় এই যে, এ ধরনের আক্রমণ ভবিষ্যতে জাতি-রাষ্ট্রের মধ্যে সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে, সাইবারস্পেসের ধারণা বদলে দিতে পারে এবং যুদ্ধপরিস্থিতির উদ্ভব ঘটাতে পারে।
সাইবার অপরাধ ও বিশ্ব : ১২ মে ২০১৭ বিশ্বজুড়ে একযোগে বড় ধরনের সাইবার হামলার ঘটনা ঘটে। র্যানসমওয়্যার হামলায় আক্রান্ত হয় সাইবার জগৎ। এর মাধ্যমে বাংলাদেশসহ বিশ্বের ১৫০টি দেশের কম্পিউটার ব্যবস্থায় হানা দেয় হ্যাকাররা। বিশ্বব্যাপী এ সাইবার হামলায় তিন লক্ষাধিক কম্পিউটার আক্রান্ত হয়। এরূপ বিশ্বব্যাপী আলোচিত আরো কয়েকটি সাইবার হামলার বর্ণনা নিচে দেওয়া হলো।
১. উইকিলিকস : উইকিলিকস-এর মাধ্যমে যে তথ্যগুলো প্রকাশিত হয়েছে তা পৃথিবীর ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়ানক সাইবার অপরাধ হিসেবে কুখ্যাতি লাভ করে। বিভিন্ন দেশের প্রায় ৩ থেকে ৪ লাখ গোপন তারবার্তা প্রকাশ করা হয় উইকিলিকসের মাধ্যমে। যার ফলে বিশ্বব্যাপী আন্তঃরাষ্ট্রিক সম্পর্ক, বাণিজ্যিক সম্পর্ক ও রাজনৈতিক সম্পর্কের মধ্যে ব্যাপক প্রভাব পড়ে। উইকিলিকসের প্রতিষ্ঠাতা জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ সাইবার অপরাধের দায়ে অভিযুক্ত হয়ে যুক্তরাজ্যে ইকুয়েডরের দূতাবাসে বন্দী জীবনযাপন করছেন।
২. মার্কিন গোয়েন্দা কর্মকর্তা এডওয়ার্ড স্নোডেন : মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ কর্মকর্তা এডওয়ার্ড স্নোডেন ‘সিআইএ’ যে বিশ্বব্যাপী গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের ফোনে আড়ি পাতে সে খবর ফাঁস করে দিয়ে আলোড়ন সৃষ্টি করে। তিনিও সাইবার অপরাধে অভিযুক্ত হয়ে বর্তমান রাশিয়া অবস্থান করছেন।
৩. পানামা পেপার্স : ৩ এপ্রিল ২০১৬ ওয়াশিংটনভিত্তিক ইন্টারন্যাশনাল কনসোর্টিয়াম অব ইনভেস্টিগেটিভ জার্নালিস্ট (ICIJ) গোপন সম্পদধারীদের আইনি সহায়তা ও সেবাদানকারী পানামার প্রতিষ্ঠান মোস্যাক ফনসেকার ১ কোটি ১৫ লাখ নথি ফাঁস করে। একে বলা হচ্ছে Crime of the Century বা শতাব্দী সেরা অপরাধ। এ যাবতকালের সবচেয়ে বড় তথ্য ফাঁসের ঘটনা পানামা পেপারস কেলেঙ্কারির ফলে আইসল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী সিগমুন্ড গুনলাগসন ৫ এপ্রিল ২০১৬ ব্যাপক বিক্ষোভ ও জনদাবির মুখে পদত্যাগ করেন। ২৮ জুলাই ২০১৭ সুপ্রিম কোর্টের রায়ে প্রধানমন্ত্রী পদে অযোগ্য ঘোষণা ও পদত্যাগের শিকার হন পাকিস্তানের মিয়া মোহাম্মদ নওয়াজ শরীফ।
৪. CIH : ১৯৮৬ সালের ২৬ এপ্রিল এ ভাইরাস প্রথম আঘাত করে, যার ফলে চেরনোবিলে মর্মান্তিক তেজস্ক্রিয় দুর্ঘটনা ঘটে। এজন্য এ তারিখে আঘাতকারী CIH-কে চেরনোবিল ভাইরাস বলে। এছাড়া এ ভাইরাস ২৬ এপ্রিল ১৯৯৯ বিশ্বব্যাপী কম্পিউটারে ব্যাপক বিপর্যয় সৃষ্টি করে।
৫. হিলারি ক্লিনটনের ই-মেইল হ্যাক : বিশ্ব মোড়ল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও সদ্য অনুষ্ঠিত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বিজিত প্রার্থী হিলারি ক্লিনটনের ই-মেইল ফাঁসের ঘটনায় সাইবার নিরাপত্তা ভোটের রাজনীতিতে নতুন ইস্যু হিসেবে অভির্ভূত হয়েছে।
সাইবার অপরাধ ও বাংলাদেশ : বর্তমান বিশ্বঅর্থনীতিতে বাংলাদেশ সুদৃঢ় অবস্থানে থাকলেও এটি একটি তৃতীয় বিশ্বের উন্নয়নশীল দেশ যার ফলে তথ্য ও প্রযুক্তিখাতে এখনো পরিপক্ব হয়ে ওঠেনি এবং অধিকাংশ ক্ষেত্রে বৈদেশিক সফ্টওয়্যার এর উপর নির্ভরশীল হওয়ার ঘন ঘন সাইবার হামলার স্বীকার হচ্ছে।
নিম্নে কয়েকটি সাইবার হামলার আলোচনা দেওয়া হলো –
বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরি : যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংকে গচ্ছিত রাখা বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ থেকে ১০১ মিলিয়ন ডলার বা ১০ কোটি ১০ লাখ ডলার অর্থ ৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে চুরি হয়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার কারণে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরকে পদত্যাগ করতে হয়।
এটিএম, ডেবিট, ক্রেডিট কার্ড জালিয়াতি : ২০১৬ সালে বাংলাদেশের বেসরকারি ব্যাংকের পাইরেসি করা এটিএম, ডেবিট কার্ড, ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে এটিএম বুথ থেকে প্রচুর অর্থ লুটের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার জের ধরে ৪ মার্চ ২০১৬ পুলিশ ১৪ ব্যক্তিকে আটক করে তাদের মধ্যে ১২ জন ছিল বিদেশি নাগরিক যারা বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সাইবার অপরাধের সাথে জড়িত।
বাংলাদেশে সংঘটিত আরও কয়েকটি সাইবার অপরাধ : ২০১২ সালে ফেসবুকে গুজব ছড়িয়ে কক্সবাজারে বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের ওপর হামলা করা হয়। সম্প্রতি কে বা কারা পূর্ণিমা শীলের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট হ্যাক করে তার ছবি ও টেলিফোন নম্বর দিয়ে তার নামে পর্নোগ্রাফির ফেসবুক পেজ খোলে। কয়েকদিন আগে ফেসবুকে ইসলাম অবমাননার গুজব রটিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর হামলা করা হয়। তা ছাড়া ফটোশপের মাধ্যমে এর ছবি ওর সঙ্গে জড়িয়ে দেওয়া ঘটনা ক্রমাগত ঘটছে। এমনকি ২০০৮ সালের দিকে র্যাবের ওয়েবসাইট হ্যাক করা হয়। এসব ঘটনা আমাদের সাইবার নিরাপত্তাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে।
সাইবার অপরাধ প্রতিরোধের উপায় : বাংলাদেশে যেভাবে সাইবার অপরাধ বৃদ্ধি পাচ্ছে তার লাগাম টেনে না ধরা গেলে নিকট ভবিষ্যতে তা আরও ভয়ানক আকার ধারণ করতে পারে। নিচে প্রতিকারের উপায়গুলো নিয়ে আলোচনা করা হলো :
- ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশে ‘কাউন্টার টেরোজিম ও ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট’ গঠন করা হয়েছে, যা সাইবার অপরাধের বিষয়গুলো দেখছে। তবে পুলিশ সাইবার অপরাধ বিষয়ক নতুন ইউনিট খোলা প্রয়োজন। যার কাজ হবে সাইবার অপরাধের সাথে সংশ্লিষ্ট আইনগুলোকে যথাযথ প্রয়োগ করা।
- তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি আইন, ২০০৬ (সংশোধিত ২০১৩)-এর ৫৪, ৫৬, ৫৭ ধারা অনুযায়ী বর্তমানে সাইবার অপরাধ সংক্রান্ত মামলার রায় দেওয়া হয়। কিন্তু ৫৭ ধারা নিয়ে জনমনে প্রশ্ন আছে যে, এ ধারায় মানুষের বাক-স্বাধীনতাকে অবহেলা করা হয়েছে। তাই ৫৭ ধারাকে সংশোধন করে সময়ের উপযোগী করে আইন তৈরি করা প্রয়োজন।
- কেবল আইন তৈরি করে নয়, আইন প্রয়োগের সঙ্গে সঙ্গে শিক্ষার পরিবর্তন আনতে হবে। ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্রিমিনোলজি এবং মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্রিমিনোলজি ও পুলিশ বিভাগ রয়েছে। যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে আরও দুয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্রিমিনোলজি বিভাগ চালু করে সাইবার অপরাধ ও নিরাপত্তা বিষয়ে পর্যাপ্ত গবেষণার সুযোগ সৃষ্টি করা প্রয়োজন।
- ব্যাংকে দেশীয় সফ্টওয়ার ব্যবহার করা উচিত যাতে বর্তমান সময়ে ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলোর পুনরাবৃত্তি এড়ানো যায়।
- সাইবার অপরাধ সংঘটিত হলে সাথে সাথে ব্যবস্থা নিতে হবে যাতে ভবিষ্যতে আর এরকম ঘটনা না ঘটতে পারে।
- আইন শৃঙ্খলা বাহিনী এবং প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ ব্যক্তিদেরকে নিয়ে টার্সফোর্স গঠন করতে হবে, যাতে তারা সাইবার নিরাপত্তার উপর সার্বক্ষণিক নজর রাখতে পারে।
- আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে এবং আমাদের এন্টিভাইরাস ও সিকিউরিটি সফ্টওয়্যার সবসময় হালনাগাদ রাখতে পারে।
- গবেষণায় দেখা গেছে ৭০/৮০ ভাগ সাইবার অপরাধের সাথে জড়িত থাকে অফিসিয়াল কর্মকরর্তা। এক্ষেত্রে সকল অফিস, ব্যাংক, বীমা প্রতিষ্ঠানে নজরদারি বাড়ানো উচিত যাতে অসৎ কর্মকর্তাদেরকে চিহ্নিত করা যথাযথ আইনের অধীনে এনে শাস্তির ব্যবস্থা করা যায়।
উপসংহার : ‘পে-পাল’ বাংলাদেশে এসেছে। নিকট ভবিষ্যতে আসবে ‘ইবে’, ‘আমাজন’, ‘আলিবাবা’। তাই অনলাইন বিপণনে আর্থিক ব্যবস্থাপনার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। যুগোপযোগী ও যথাযথ আইন প্রণয়ন করে সাইবার নিরাপত্তা বাড়ানো উচিত। শিক্ষার্থীদের সাইবার ইথিক্স শেখানো উচিত। যাতে পূর্ণিমাশীলদের বাকিটা জীবন নির্বিঘ্নে; অভিজিৎরা তাদের চিন্তা-চেতনা নিয়ে বেঁচে থাকতে পারে, রাজকোষ ও জনতার অর্থ নিরাপদ হয়। নিশ্চিত হয় ডিজিটাল বাংলাদেশের নিরাপত্তা।
অনেক ভালো লিখেছেন 💓💓
ReplyDeleteThanks
DeleteVery good written
ReplyDelete