সাধারণ জ্ঞান : ভূ-রাজনীতি

ভূ-রাজনীতি হচ্ছে ভূগোল ও রাজনীতির সম্পর্ক বিশ্লেষণ।

ভূ-রাজনীতি শব্দটি ভূ-গোল ও রাষ্ট্রবিজ্ঞানকে সম্পর্কযুক্ত করে। বলা যায় রাজনৈতিক ক্রিয়া Political Action রাজনৈতিক শক্তি (Political Power) এবং ভৌগোলিক বিন্যাসের সম্পর্ক বিশ্লেষণই হচ্ছে ভূ-রাজনীতি একটি রাষ্ট্রের ভৌগোলিক বাস্তবতা অবস্থান যে রাষ্ট্রের নীতি ও কার্যাবলীর মধ্যে নিবিড় সম্পর্ক স্থাপন করে। ফলে রাষ্ট্রীয় কার্যাবলী সমাধানের চেষ্টায় রাজনৈতিক ভূগোলের সফল প্রয়োগকেই ভূ-রাজনীতি নামে অভিহিত করা যায়।

ভূগোল ও রাজনীতির সম্পর্ক নির্ধারণের উপাদানগুলো হল Political Power, Political Action Geographical Setting.

ভূ-রাজনীতি তত্ত্ব অনুযায়ী এটি একটি বাস্তব সত্য কথা যে রাষ্ট্রকে ভূমি সম্প্রসারণ করতে হবে অন্যথায় ধ্বংস অনিবার্য। ভূ-রাজনীতির তত্ত্বে এটাও বলা হয় যে জাতিসমূহের মধ্যে আপেক্ষিক শক্তির বিন্যাস নির্ধারিত হবে বিজিত ভূমির পরিপ্রেক্ষিতে পারস্পরিক সম্পর্কের উপর ভিত্তি করে। Fricdrch Ratgel তাই রাষ্ট্রকে জৈবিক সত্ত্বার সাথে তুলনা করা হয়ে থাকে। যাবে অবশ্যই বৃদ্ধি পেতে হবে। অন্যথায় ধ্বংস অনিবার্য।

(Montesquies) দার্শনিক ভূগোল ও আবহাওয়াকে রাজনৈতিক বিকাশের প্রধান নির্ণায়ক হিসাবে চিহ্নিত করেন।

Rudolf Kjellen হচ্ছেন একজন সুইডিস ভূগোলবিদ। তিনি ভূ-রাজনীতি ও রাজনীতিক ভূগোলের মধ্যে পার্থক্য দেখান।

ভূ-রাজনীতির অবসানের প্রধান উদ্দেশ্য রাষ্ট্রের সম্পদরাজি/শক্তি কীভাবে রাষ্ট্রকে পরাক্রমশালী করতে পারে তার ব্যাখ্যা প্রকাশ করা।

মধ্যপ্রাচ্যেকে ভূ-রাজনৈতিক গুরুত্ব এত বেশি দেয়ার কারণ হলো স্থল, নৌ, ও বিমান এ তিন পথেই বিশ্বের যোগাযোগের একমাত্র পথ মধ্য প্রাচ্য।

হরমুজ প্রাণালী অবস্থিত ওমান সাগর ও পারস্য উপসাগরের মধ্যে গোলান মালভূমি মিসর ও ইসরাইলের মধ্যে সংঘাতের কারণ।

Friedrich Lsit হচ্ছেন একজন ভূ-রাজনীতি বিশারদ। List এর বিখ্যাত গ্রন্থের নাম The Natural System of Political Economy (1840)

ভূ-রাজনীতি বিষয়ে Fridedrich List এর বিখ্যাত তত্ত্বের নাম Living Space বা Lebensraum.

Living Space তত্ত্ব ভূ-রাজনীতি অধ্যয়নের ক্ষেত্রে নতুন পথ দেখায়।

দক্ষিণ এশিয়ার ভূ-রাজনৈতিক গুরুত্ব ক্রমাগত বেড়ে চলছে। এখানে চীন ও ভারতের মত শক্তিশালী ও পারমাণবিক শক্তিধর দেশের সীমান্ত রয়েছে।

ভারত মহাসাগর কৌশলগত দিক থেকে ক্রমেই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। ভারত মহাসাগরের উপর ভারতের কর্তৃত্ব রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রসহ চীন ও অন্যান্য পরাশক্তিগুলো ভারত মহাসাগরের নিয়ন্ত্রণ নিতে চান।

ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে বিরোধপূর্ণ অঞ্চল কাশ্মির নিয়ে উভয় দেশের মধ্যে কয়েকবার যুদ্ধ হয়েছে। চীন-ভারত-যুক্তরাষ্ট্রের কৌশলগত দিক বিবেচনায় বাংলাদেশের ভূ-রাজনৈতিক গুরুত্ব অনেক। ভারতের মোকাবেলায় চীন বাংলাদেশকে তাদের বলয়ে নিতে আগ্রহী। ভারত এ ব্যাপারে সতর্ক। বাংলাদেশের সোনাদিয়া দ্বীপে এ কারণেই চীন গভীর সমুদ্র বন্দর স্থাপন করতে চায়।

বর্তমানে বিশ্বের একমাত্র পরাশক্তি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।

মধ্যপ্রাচ্যের ভূ-রাজনৈতিক গুরুত্বের একটি কারণ হচ্ছে বিপুল তৈল সম্পদ; অন্য একটি কারণ সুয়েজ খাল নৌপথে যোগাযোগের মূল পথ। অন্য আরেকটি কারণ হচ্ছে পারস্য উপসাগর।

পারস্য উপসাগর কৌশলগত গুরুত্ব বেশি কারণ এটি তৈলবাহী জাহাজ চলাচলের একমাত্র পথ।

পারস্য উপ-সাগর ইরানের দখলে।

মধ্যপ্রাচ্য ১৯৭৩ সালে বিশ্ব রাজনীতিতে তৈল অস্ত্র প্রয়োগ করেছিল।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইসরাইল রাষ্ট্রকে মধ্যপ্রাচ্যে টিকিয়ে রাখতে চায় কারণ মধ্যপ্রাচ্যের ভূ-রাজনৈতিক গুরুত্বের কারণে সেখানে মার্কিন ঘাটি প্রয়োজন।

বিশ্বের মোট মজুদ তেল সম্পদের ২৫% অবস্থিত সৌদি আরবে। সৌদি আরবের বৃহত্তম তৈল কোম্পানি গাওয়ার।
Post a Comment (0)
Previous Post Next Post