নদীতে ভেঙ্গে যাওয়া ও জেগে উঠা ভূমি সংক্রান্ত আইন / জরিপ

নদীতে ভেঙ্গে যাওয়া ও জেগে উঠা ভূমি সংক্রান্ত আইন :

সিকন্তি (Diluvion Lands) ডাইলভিয়ন ল্যান্ডস :
কোন ভূমি ভেঙ্গে নদী বা সাগর গর্বে বিলীন হয়ে গেলে ইহাকে সিকন্তি (Diluvion) বলে।

পয়স্তি ভূমি (Alluvial Lands- এলোভিয়ন ল্যান্ডস) :
সাগর বা নদীতে কোন ভূমি জেগে উঠলে বা ভেঙ্গে যাওয়া ভূমি পুনরায় জেগে উঠলে এরূপ ভূমিকে পয়ন্তি বলে।

১৯৯৪ সনের ১৫ নং আইন বলে সাবেক ৮৬ ধারা সংশোধন করে তদস্থলে নিম্নরূপ সংশোধনি ৮৬ দ্বারা প্রতিস্থাপিত হয়েছে। ১৩ জুলাই ১৯৯৪ ইং তারিখে রাষ্ট্রপতির সম্মতি লাভ করে ইহা আইনে পরিণত হয়েছে।

স্টেট একুইজিসন এন্ড টেন্যান্সি এ্যাক্ট ১৯৫০ এর ৮৬ ধারা :
সিকন্তি (Diluvion) মূলে খাজনা মওকুফ ও পয়ন্তি (Alluvion) মূলে পুঃন জাগরিত ভূমির স্বত্ব/অধিকার (Right) নিণর্য়।

জরিপ

জমি জরিপ সম্বন্ধে আলোচনা করতে গেলে স্বভাবতই অঙ্গাঅঙ্গিভাবে চলে আসে ভূমি স্বত্ব জনিত বিষয়গুলি। এই কথা অনস্বীকার্য যে ভূমি স্বত্ব নিরূপণ করতে গেলে জমি জরিপ অতি প্রয়োজনীয় বিষয়। প্রায় সর্বক্ষেত্রেই সংশ্লিষ্ট জমির পরিমাণ ও চৌহদ্দি নিরূপণ করতে হয় সঠিকভাবে। জমি জরিপ করে সঠিকভাবে জমি জরিপের ব্যাপারটি বেশির ভাহ সাধারণ মানুষ জানেন না। জমি জরিপের কাজটি সাধারণত করে আমিনরা। আমিনদের জরিপের কার্যবিধি না জানায় অনেককেই অন্ধকারে থাকতে হয়।

জমি নিয়ে গোলযোগ ‍সৃষ্টি হয় সাধারণত সংশ্লিষ্ট কোনও পক্ষ দেওয়ানী আদালতে মামলা মোকদ্দমা করেন। অনেক সময় আদালতের নির্দেশে সার্ভেপাশ করা উকিলদের জমি জরিপ করে নির্দিষ্ট জমির জন্য রির্পোট দিতে বলে। নির্দিষ্ট জমির ম্যাপ সহ সরকারী স্তরে জমি জরিপের দায়িত্ব অর্পিত হয় আমিনদের ওপর।

স্বভাবতই বোঝা যায় জমির পরিমাণ বা চৌহদ্দি নিয়ে গোলযোগ দেখা দিলে জমি জরিপের বিষয় প্রয়োজন দেখা দেয়। 

ভূমি জরিপ কাকে বলে?

ইংরেজি Survey শব্দের বাংলা অর্থ হচ্ছে জরিপ। জরিপ শব্দ বিভিন্ন ক্ষেত্রে ব্যবহার হলেও ভূমি জরিপ বলতে বোঝায় মৌজা ভিত্তিক নকশা (Map) প্রণয়ন ও ভূমির মালিকানা সম্পর্কিত ভূমি রেকর্ড যা খতিয়ান প্রস্তুত কার্য প্রণালীকে বুঝায়। জরিপের সময় পুরাতন তৈরীকৃত নকশা ও রেকর্ড সংশোধন করে ভূমি বা জমির শ্রেণীর পরিবর্তনের সাথে মিল রেখে এবং মালিকানার পরিবর্তনের ধারাবাহিকতার সাথে সামঞ্জস্য রেখে হালকরণ (Up-to-date) করে মৌজার নকশা ও রেকর্ড তৈরী করা হয়।

ভূমি জরিপের শ্রেণী বিভাগ কয়টি?

ভূমি জরিপকে ২(দুই) শ্রেণীতে -ভাগ করা হয়েছে। যথা -
(ক) সার্বিক বা ক্যাডাস্ট্রাল জরিপ (Major or Cadastral Survey)
(খ) দিয়ারা বা আংশিক জরিপ (Diara or Minor Settlement)

(ক) সার্বিক বা ক্যাডাস্ট্রাল জরিপ (Major or Cadastral Survey) :

সার্বিক বা ক্যাডাস্ট্রাল সার্ভে সি, এস নামে আমাদের নিকট ব্যাপকভাবে পরিচিত। বাংলাদেশে প্রথমে জেলা ওয়ারী ক্যাডাস্ট্রাল সার্বে করা হয়।

পরবর্তীকালে সার্বিক বা ক্যাডাস্ট্রাল সার্ভেকে প্রথম ক্যাডাস্ট্রাল সার্ভের সাথে পার্থক্য করার জন্য রিভিশনাল সেটেলমেন্ট অপারেশন (Revisional Settlement Operation) বা আর, এস নামে আখ্যায়িত করা হয়। কোন ভূমি বা জমি রাজস্ব ইউনিটের সমস্ত এলাকার (জেলা) নকশা এবং রেকর্ড প্রস্তুত করার জন্য যে জরিপ কার্য পরিচালনা করা হয় তাকে সার্বিক বা ক্যাডাস্ট্রাল জরিপ বলে।

(খ) দিয়ারা বা আংশিক জরিপ (Diara or Minor Settlement) :

একটি জেলায় সম্পূর্ণভাবে এই জরিপ করা হয় না বলে একে আংশিক (Minor) জরিপ বলা হয়। সাধারণত নদী বা সাগর থেকে জেগে উঠা চর (সিকস্তি/পয়স্তি) জরিপ করার ক্ষেত্রে এই জরিপ কার্য পরিচালিত হয়। সম্ভবত দরিয়া শব্দ থেকেই দিয়ারা শব্দের উৎপত্তি। দরিয়া থেকে চর বা জমি জেগে উঠা জরিপ সংক্রান্ত হওয়ায় এই জরিপটি দিয়ারা জরিপ নামেও ব্যাপকভাবে পরিচিত।

সবগুলো পর্ব একসাথে পড়ার জন্য এখানে ক্লিক করুন >> জমিজমা ও ভূমি বিষয়ক আইন
Post a Comment (0)
Previous Post Next Post