আমার প্রিয় লেখক
আমার প্রিয় লেখক শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়। তিনি বাংলার একান্ত দরদি কথাশিল্পী, বাঙালির বেদনার বিশ্বস্ত রূপকার। তাঁর লেখনী স্পর্শে বাংলা কথাশিল্প অর্থাৎ উপন্যাস ও ছোটগল্প জনপ্রিয়তার শীর্ষে আরোহণ করেছে। তাঁর লেখনীতেই বাংলার ব্যথিত মানুষের বাণীহারা বেদনা পেয়েছিল প্রকাশের প্রকৃত ভাষা। সাহিত্য দরবারে তিনি শোনালেন সমাজের চিরবঞ্চিত, চির অবহেলিতদের জীবন কাহিনি, মর্মস্পর্শী ভাষায় রচনা করলেন তাদের বেদনাময় অশ্রুনৈবেদ্য। শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় অপ্রতিদ্বন্দ্বী কথাশিল্পী। বাংরার মাটি ও মানুষকে তিনি দেখেছেন সম্পূর্ণ নতুন দৃষ্টিভঙ্গিতে। তাঁর সৃষ্টির মধ্যে তাই সাধারণ মানুষ অসাধারণ হয়ে দেখা দিয়েছে। তিনিই সার্থকভাবে দেখিয়েছেন সাধারণ মানুষের মধ্যে রয়েছে কী অপার মনুষ্যত্বের মহিমা; অনুভব করেছেন বাঙালির সীমিত জীবনের অন্তরালেও চলেছৈ, কত বিচিত্র রূপের লীলাভিসার। এ অনুভবই তাঁর রচনায় পরিস্ফুট। তাই শরৎচন্দ্র আমার প্রিয় লেখক। তাঁর রচিত ‘মহেশ’ অনবদ্য ছোটগল্প। উপন্যাসগুলোর মধ্যে চরিত্রহীন, পল্লীসমাজ, পথের দাবী, শ্রীকান্ত, গৃহদাহ প্রভৃতি উৎকর্ষ ও শ্রেষ্ঠত্বের দাবিদার। তিনি সমাজের সকল স্তরের মানুষের হৃদয় জয় করেছেন। বাঙালি জাতি তাঁর কাছে নানাভাবে ঋণী। কেবল বাঙালি জাতিই নয় সমগ্র ভারতবর্ষ এবং বাংলাদেশ শরৎচন্দ্রের কাছে অপরিশোধ্য ঋণে আবদ্ধ। বিশ্বকবির ভাষায়- “দেশের হৃদয় তারে রাখিয়াছে ধরি”।