ভূমিকা : রিক্শা এক রকম যানবাহন। পুর্বে ছিল দু’চাকা বিশিষ্ট লোকে টানা রিক্শা। বর্তমানে হয়েছে তিন চাকার সাইকেল রিক্শা। রিক্শা যে চালায় তাকে রিক্শাওয়ালা বলে।
রিক্শাওয়ালার জীবনী : রোদ বৃষ্টি উপেক্ষা করে রিকশাওয়ালা বিপদসংকুল দরিদ্র জীবনযাপন করে। সকাল হতে দুপুর রাত অবধি সে হাড়ভাঙ্গা পরিশ্রম করে থাকে। রাস্তার মোড়ে বাসস্ট্যান্ডে অথবা লঞ্চঘাটে দাঁড়িয়ে থাকে সে যাত্রীর আশায়। সারাদিন পরিশ্রম করে বেশ কিছু আয় করে সে। তবে তার আয়ের বিরাট এক অংশ রিক্শার মালিককে দিতে হয়। খেয়ে দেয়ে যা থাকে, তাতে তার কিছু সংসার চলে না। এক কথায় পূর্বেও যেমন পরেও তেমন। তবে সে খরচ একটু বেশি করে; না করেও পারে না। আবার অনেক রিক্শাওয়ালা নগদ পয়সা হাতে পেয়ে সন্ধ্যায় একটু আধটু নেশাও করে। মাঝে মাঝে বেপরোয়াভাবে রিক্শা চালানোর জন্য জরিমানাও দেয়, চড়-চাপড়ও খায়। তখন কিন্তু সে বড় সুবোধ, ‘হুজুর’ ছাড়া আর কথাই নেই। রিকশার গায়ে টিনের পাতে বা বোর্ডে থাকে ক্ষোদাই করা নম্বার। অন্যথায় পুলিশ অথবা প্রশাসনের হয়রানির স্বীকার হতে হয়।
ব্যবহার : কাজটি তার মানুষ টানা কিন্তু কথার বেলায় সে পটু। অনেক রিকশাওয়ালার অবশ্য ব্যবহার ভদ্র। কথার দোষে অনেক রিক্শাওয়ালা মার খায়। অনেকে আবার সদাচরণের জন্য আদর-যত্নও পায়। প্রায় রিক্শাওয়ালাই সুযোগ-সন্ধানী; নরম স্বভাবের যাত্রী পেলে বিভিন্ন ছল-চাতুরি করে ভাড়া বেশি নেওয়ার চেষ্টা কের। তবে গরমে নরম-শক্ত স্বভাবের যাত্রীদের কাছ থেকে বেশ ভাড়া আদায় করতে পারে না।
উপকার : রিক্শার প্রচলন হওয়াতে সাধারণ লোকের পা দু’খানি কিছুটা বিরাম পেয়েছে। কাছাকাছি স্থানে যাতায়াতের সহজ মাধ্যম হিসাবে আজকাল এর ব্যাপক কদর। স্বল্প পয়সায় একমাত্র বাহন হল রিক্শা। অন্যান্য যানবাহন বর্তমানে ব্যয়বহুল। তাই সাধারণ মানুষের রিক্শা একমাত্র অবলম্বন।
অপকার : রিক্শাওয়ালাদের বেপরোয়া চলাচলের কারণে প্রায়ই যানজটের সৃষ্টি হয়। অনেক সময় দ্রুত গতিতে রিক্শা চালানোর কারণে দুর্ঘটনা হয়। অকারণে বেল বাজানোর কারণে শব্দ দূষণও হয়। মাঝে মাঝে তারা ট্রাফিক আইন ভেঙে রাস্তার বিপরীত পাশে রিক্শা চালায়।
উপসংহার : রিক্শাওয়ালার ব্যবহার যদি ভাল হয় আর রিক্শাখানি যদি সহজ গতিবিশিষ্ট হয়, তবেই রিক্শায় চড়ে আরাম পাওয়া যায়। রিক্শাওয়ালাদের উচিত আইন-কানুন মেনে রিক্শা চালানো। এদে দুর্ঘটনা কম হবে।