শ্রমের মর্যাদা
জীবনের সকল ক্ষেত্রেই পরিশ্রমের মর্যাদা রয়েছে। সর্বস্তরের মানুষের পক্ষে
পরিশ্রমের মর্যাদাবোধ পরিশ্রমেরই যোগ্য পুরস্কার। কায়িক পরিশ্রম আত্মসম্মানের
পক্ষে মোটেও হানিকর নয়, বরং শ্রমই মানবজীবনের শ্রেষ্ঠ উপায়। জগতের সকল কাজই
শ্রমসাপেক্ষ। কায়িক পরিশ্রমেই শিল্পী ও বিজ্ঞানী উদ্ভাবনীশক্তিকে বাস্তবে পরিণত
করে তা মানবকল্যাণে নিয়োজিত করে। ব্যক্তিগত, সমষ্টিগত বা জাতিগত সকল উন্নতির মূলে
রয়েছে শ্রম ও অধ্যবসায়। পৃথিবীতে যে জাতি যত পরিশ্রমী সে জাতি তত উন্নয়নশীল।
ব্যক্তিগত পরিশ্রম থেকে সমষ্টিগত পরিশ্রমই বর্তমান সভ্যতা সৃষ্টি করেছে। শ্রম যে
শুধু ব্যক্তিজীবনকেই সার্থকতায় সমৃদ্ধ ও ঐশ্বর্যময় করে তোলে তা নয়, সমাজজীবনের
ওপরও গভীর রেখাপাত করে। তাই পরিশ্রম মুধু সৌভাগ্যের নিয়ন্ত্রকই নয়, সভ্যতা
বিকাশেরও হাতিয়ার। সুতরাং জীবনকে সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে বাঁচিয়ে রাখার জন্য শ্রম
ব্যতীত অন্য কোনো সহজ পথ নেই। আর তাই শ্রমের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়া ব্যক্তিগত তথা
জাতিগতভাবে প্রয়োজন। কবি অক্ষয় কুমার বড়াল তাঁর ‘মানব বন্ধনা’ কবিতায় শ্রমশীল
ব্যক্তিদের উদ্দেশ্যে তাই বন্দনা করেছেন-
নমি আমি প্রতিজনে, আশ্বিজ চণ্ডাল,
সিন্ধু মূলে জলবিন্দু, বিশ্বমূলে অণু
সমগ্রে প্রকাশ
প্রভু ক্রীতদাস
নমি কৃষি তন্তুজীবী, স্থপতি, তক্ষক,
কর্ম, চর্মকার।
এই অনুচ্ছেদটি আবার সংগ্রহ করে দেওয়া হলো
সকল উন্নতির মূলে রয়েছে কঠোর পরিশ্রম। পরিশ্রম ছাড়া কোনো কাজেই সফলতা পাওয়া
যায় না। তাই প্রত্যেক মানুষেরই শ্রমের মূল্য সম্পর্কে সঠিক ধারণা থাকা উচিত।
আদিম মানুষ থেকে শুরু করে বর্তমান কালের আধুনিক মানুষ উন্নত জীবনের জন্য কঠোর
পরিশ্রম করার কারণে আজ আমরা জ্ঞান-বিজ্ঞানের কল্যাণে উন্নত জীবনযাপন করতে
পারছি। কিন্তু যারা অলস তাদের জীবনে কোনো উন্নতি নেই। আর যারা আরাম করে জীবন
অতিবাহিত করেছে তারা ইতিহাসে স্থান পায় নি। পরিশ্রম করে যে আনন্দ উপভোগ করা
যায়, তা অলস মানুষের বুঝতে চায় না। এ কারণে উন্নত জীবনযাপনের জন্য শ্রমের
মূল্য খুবই জরুরি। শ্রমের মূল্যের এ গুরুত্ব প্রতিটি ছাত্রছাত্রীর বোঝা উচিত।
ছাত্রজীবন থেকেই ছাত্রছাত্রীদের পরিশ্রমী হওয়া দরকার তবেই জীবনে সফলতা
আসবে।