গ্রন্থাগার
মানবসভ্যতার ক্রমবিকাশে গ্রন্থাগারের ভূমিকা অপরিসীম। জ্ঞান-বিজ্ঞানের উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে গ্রন্থাগারের জনপ্রিয়তাও বৃদ্ধি পাচ্ছে। গ্রন্থাগারে সংরক্ষিত থাকে হাজার হাজার বছরের ইতিহাস-ঐতিহ্য, শিল্প-সাহিত্য ও সংস্কৃতির জ্ঞান। শিক্ষান্বেষী মানুষের কাছে তাই গ্রন্থাগার এক জ্ঞানতীর্থ, যেখানে মুক্তির সন্ধান পাওয়া যায়। পাওয়া যায় জীবনের আলোকিত পথ। ধারণা করা হয়, বর্তমান বিশ্বের বিখ্যাত গ্রন্থাগারগুলোর মধ্যে ব্রিটেনের ব্রিটিশ মিউজিয়াম, ফ্রান্সের বিবলিওথিক ন্যাশনাল লাইব্রেরি, মস্কোর লেনিন লাইব্রেরি, আমেরিকার লাইব্রেরি অব কংগ্রেস এবং কলকাতার ন্যাশনাল লাইব্রেরি উল্লেখযোগ্য। বাংলাদেশে ১৯৫৩ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় কেন্দ্রীয় পাবলিক লাইব্রেরি। গ্রন্থাগার হলো বিভিন্ন ধরনের গ্রন্থের সংগ্রহশালা। এ সংগ্রহ ব্যক্তিগত হতে পারে। হতে পারে পারিবারিক ও রাষ্ট্রীয়। তবে বহু মানুষের মিলিত প্রয়াসে সংগৃহীত সাধারণ গ্রন্থাগার থেকে নিজ নিজ প্রয়োজন ও রুচিমাফিক জ্ঞান আহরণ করতে পারে সবাই। বিভিন্ন সামাজিক ও জনকল্যাণ সংস্থা, স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা, বিশ্ববিদ্যালয়সহ অনেক সরকারি-বেসরকারি অফিস-আদালত ও প্রতিষ্ঠানে গ্রন্থাগার রয়েছে। এসব গ্রন্থাগার ব্যবহারের সুবিধা সংশ্লিষ্ট ছাত্র-শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের মধ্যে সীমাবদ্ধ। বিজ্ঞান ও তথ্য-প্রযুক্তিনির্ভর শিক্ষার প্রসারের সঙ্গে সঙ্গে গ্রন্থাগারের প্রয়োজনীয়তাও বৃদ্ধি পাচ্ছে। যুক্ত হয়েছে ডিজিটাল গ্রন্থাগার তথা ই-বুক পদ্ধতির গ্রন্থাগার। মানুষ উপলব্ধি করছে দৈহিক চাহিদাই সব নয়। মনেরও খাদ্য প্রয়োজন। আর গ্রন্থাগারই মানুষের মনের পছন্দমাফিক রসদের সন্ধান দিতে পারে। গ্রন্থাগারে সংগৃহীত গ্রন্থ দেশ ও জাতির অমূল্য সম্পদ। আমাদের দেশে পাবলিক লাইব্রেরি, বাংলা একাডেমি গ্রন্থাগার, জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্র গ্রন্থাগার, শিশু একাডেমি গ্রন্থাগার, ইসলামিক ফাউন্ডেশন পাঠাগার, বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রসহ সরকারি-বেসরকারি অসংখ্য গ্রন্থাগার জ্ঞানপিপাসু মানুষের গ্রন্থপাঠের প্রয়োজন মেটাচ্ছে।