সাক্ষরতা প্রসারে ছাত্রসমাজ
সাক্ষরতা বলতে সাধারণত অক্ষর জ্ঞানসম্পন্নতাকেই বোঝায়। তবে দিন দিন বাড়ছে এর পরিধি। বাংলাদেশে সাক্ষরতার হার খুবই নগণ্য। এই প্রেক্ষাপটে দেশে সাক্ষরতার হার প্রসারে ছাত্রসমাজ নিতে পারে অগ্রণী ভূমিকা। সরকার উপযুক্ত ও বাস্তব পরিকল্পনা গ্রহণ করলে ছাত্রসমাজ সাক্ষরতা প্রসারে বিপুল সহায়ক শক্তি হিসেবে কাজ করতে পারে। সাধারণ কর্মজীবী মানুষের তুলনায় ছাত্রসমাজ বেশি কার্যকর ভূমিকা নিতে পারে। ছাত্রসমাজ সাক্ষরতা প্রসারের জন্য একটি নির্দিষ্ট লক্ষ্যকে সামনে নিয়ে সারাদেশে গ্রামভিত্তিক আন্দোলন গড়ে তুলতে পারে। তারা প্রতিটি গ্রামে, প্রতিটি পাড়া-মহল্লাতে ছাত্রসংঘ গড়ে তুলে নিরক্ষরদের তালিকা প্রণয়নে সহায়তা করতে পারে। যেসব জায়গায় সব শিশুকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের আওতায় আনা সম্ভব হবে না, সেখানে অস্থায়ী শিক্ষাকেন্দ্র চালু হতে পারে। তাতে ছাত্ররা শিক্ষাদাতা কর্মীরূপে দায়িত্ব নিতে পারে। স্থানীয় ক্লাব, মসজিদ, কমিউনিটি সেন্টার কিংবা বাড়ির আঙিনায় এ ধরনের অস্থায়ী শিক্ষাকেন্দ্র স্থাপন করা যেতে পারে। বয়স্করা যেহেতু দিনের বেলা কাজে ব্যস্ত থাকেন, তাই তাদের সাক্ষরতা প্রসারে নৈশস্কুল চালু করতে হবে। এসব নৈশস্কুলে ছাত্রছাত্রীরা পালা করে শিক্ষা প্রদানে নিজেকে যুক্ত রাখতে পারে। নারীদের শিক্ষা দেয়ার ক্ষেত্রে ছাত্রীরা দায়িত্ব নিতে পারে। যেসব ছাত্রছাত্রী শহরে, হোস্টেলে বা হলে থেকে লেখাপড়া করে তারা ছুটিতে নিজ এলাকায় গিয়ে সাক্ষরতা অভিযান প্রত্যক্ষভাবে অংশ নিতে পারে। সাক্ষরতা প্রসারে সরকারের পক্ষে বিপুল পরিমাণ তহবিল জোগানো সম্ভব নয়। তাই স্বেচ্ছায় সাক্ষরতা কার্যক্রমে সবচেয়ে বেশি এগিয়ে আসতে পারে ছাত্রসমাজ। ছাত্রসমাজই পারে দেশের নিরক্ষর জাতিকে শিক্ষার আলোয় আলোকিত করে সাক্ষরতার হার বাড়াতে।