পহেলা বৈশাখ

ঐতিহাসিক স্থান ভ্রমণের অভিজ্ঞতা জানিয়ে বন্ধুকে পত্র

তোমার দেখা একটি ঐতিহাসিক স্থান পরিদর্শনের বর্ণনা দিয়ে বন্ধুর নিকট একখানা পত্র লেখো। 

বা, মনে করো, তুমি দিনাজপুরের জীতু; তোমার বন্ধু নওগাঁর রতন। ঐতিহাসিক স্থান ভ্রমণের অভিজ্ঞতা জানিয়ে তোমার বন্ধুকে একখানা পত্র লেখো। 

বা, মনে করো, তোমার নাম জেরিন। তুমি সিলেটে বসবাস করো। একটি ঐতিহাসিক স্থান ভ্রমণের অভিজ্ঞতা জানিয়ে বন্ধুকে একখানা পত্র লেখো। 

বা, মনে করো, তোমার নাম ‘পারুল’। তুমি কুমিল্লায় বসবাজ করো। একটি ঐতিহাসিক স্থান ভ্রমণের অভিজ্ঞতা জানিয়ে বন্ধুকে একটি পত্র লেখো। 

বা, একটি ঐতিহাসিক স্থান ভ্রমণের অভিজ্ঞতা জানিয়ে বন্ধুকে একটি পত্র লেখো। 


৫ কমলাপুর, ঢাকা
১৫ই অক্টোবর, ২০২০

প্রিয় কুশল,
প্রীতি ও শুভেচ্ছা রইল। আশা করি তোমার আব্বা, আম্মা ও ভাই- বোনদেরকে নিয়ে ভালো আছ। গতকাল তোমার চিঠি পেয়ে তোমার বর্তমান অবস্থা বিস্তারিত জানতে পারলাম। 

গত চিঠিতে তোমাকে লিখেছিলাম শরৎকালীন ছুটিতে ভাই-ভাবির সঙ্গে বেড়াতে যাব। কিন্তু বেড়ানোর জায়গাটি যে এত চমৎকার হবে তা ভাবতে পারিনি। গতকাল আমরা ইতিহাসপ্রসিদ্ধ সোনারগাঁও দেখে এসেছি। ছোটবেলায় বইপুস্তকে পড়েছি বাংলার প্রখ্যাত বারো ভূঁইয়াদের কাহিনি। তাদের একজন স্বনামধন্য স্বাধীনচেতা বীর ছিলেন ঈশা খাঁ। তাঁরই অমর কীর্তিময় রাজধানী সোনারগাঁও। এর প্রাকৃতিক শোভা, প্রাচীন স্থাপত্য নিদর্শনের বিমোহিত চিত্র চিঠিতে লিখে তোমাকে আমি ঠিক বোঝাতে পারব কিনা জানি না। তবুও কিছুটা হলেও সেই সৌন্দর্যের চিত্র তুলে ধরতে চেষ্টা করব। 

সকাল সাতটায় খাওয়াদাওয়া সেরে আমরা সোনারগাঁওয়ের উদ্দেশ্যে যাত্রা করলাম। সকাল নটায় সেখানে পৌঁছলাম। রাস্তার পাশে ভগ্নপ্রায় বিরাট দ্বিতল ইমারত, সামনে মস্ত পুকুরের পাশে গাছের সারি। শান বাঁধানো ঘাটে ঘোড়ার পিঠে বীরযোদ্ধার পাথরের খোদাই করা গর্বিত প্রতিমূর্তি স্মরণ করিয়ে দেয় বাংলার অবলুপ্ত শৌর্য-বীর্যের কথা। আর একটু এগিয়ে যেতেই দেখলাম শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিনের প্রচেষ্টায় নির্মিত বাংলার লোকশিল্প ও কারুশিল্প জাদুঘর। এখান থেকে শুরু ঈশা খাঁর রাজধানীর মূল ভবন। রাস্তার দুপাশে রয়েছে অনেক পুরোনো অট্টালিকা। প্রতিটি অট্টালিকায় রয়েছে প্রাচীন যুগের স্থাপত্য নিদর্শন। বাংলাদেশ সরকার পুরাকীর্তি সংরক্ষণ বিভাগের অধীনে সোনারগাঁওয়ের ধ্বংসপ্রায় প্রাসাদসমূহকে সংস্কার ও সংরক্ষণের আওতায় এনেছে। 

উত্থান-পতনের ধারা বেয়ে আজকের ধ্বংসপ্রায় সোনারগাঁও হয়তো একদিন বিলীন হয়ে যাবে। কিন্তু সোনারগাঁওয়ের স্মৃতি আমার মানসপটে চিরদিনই অমলিন থাকবে। সময় পেলে তুমিও বাংলার ইতিহাসপ্রসিদ্ধ স্থান সোনারগাঁও দেখে এসো। 

আমি ভালো আছি। তোমার পড়াশোনা কেমন চলছে জানাবে। তোমার আব্বা-আম্মাকে আমার সালাম জানাবে। 

ইতি—
তোমার প্রীতিমুগ্ধ
অনন্ত

9 Comments

Post a Comment
Previous Post Next Post