৭ম শ্রেণি এ্যাসাইনমেন্ট : হিন্দু ধর্ম ও নৈতিক শিক্ষা : সপ্তাহ ১
এ্যাসাইনমেন্ট বা নির্ধারিত কাজের ক্রম :
অ্যাসাইনমেন্ট বা নির্ধারিত কাজ - ১
অধ্যায় ও অধ্যায়ের শিরোনাম
প্রথম অধ্যায় : ঈশ্বরের স্বরূপ
পাঠ্যসূচিতে অন্তর্ভুক্ত পাঠ নম্বর ও বিষয়বস্তু:
পাঠ-১ : স্রষ্টা ও ঈশ্বর শব্দের অর্থ, পাঠ-২ ও ৩ : ঈশ্বরের স্বরূপ : নিরাকার ও সাকার, পাঠ-৪ ও ৫ : ঈশ্বরের একত্ব, পাঠ-৬ : ঈশ্বরের স্বরূপ সম্পর্কে শ্রীমদ্ভগবদ্গীতায় শ্লোক
পাঠ-১ : স্রষ্টা ও ঈশ্বর শব্দের অর্থ, পাঠ-২ ও ৩ : ঈশ্বরের স্বরূপ : নিরাকার ও সাকার, পাঠ-৪ ও ৫ : ঈশ্বরের একত্ব, পাঠ-৬ : ঈশ্বরের স্বরূপ সম্পর্কে শ্রীমদ্ভগবদ্গীতায় শ্লোক
এ্যাসাইনমেন্ট বা নির্ধারিত কাজ
১। “ঈশ্বর এক ও অদ্বিতীয় এবং নিরাকার তবে সব সাকার রূপ একই ঈশ্বরের বিভিন্ন প্রকাশ” - যুক্তি বিশ্লেষন পূর্বক ব্যাখ্যা কর।
সংকেত : ১। ঈশ্বরের স্বরূপ, ২। ঈশ্বরের একত্ব
নমুনা সমাধান
ঈশ্বর এক ও অদ্বিতীয় এবং নিরাকার। তবে সব সাকার রূপ একই ঈশ্বরের বিভিন্ন প্রকাশ।
নিচে এই উক্তিটির যর্থার্থতা বিশ্লেষণ করা হল-
ঈশ্বর অর্থ প্রভু। তিনি সর্বশক্তিমান ও সর্বশ্রেষ্ঠ। তিনি সব কিছুর নিয়ন্তা। জীব ও জগতের ওপর তিনি প্রভুত্ব করেন বলে তাকে ঈশ্বর বলা হয়। তিনিই সকল শক্তি ও গুণের আধার। তাঁর আদি নেই, তাই তিনি অনাদি। তাঁর অন্ত নেই, তাই তিনি অনন্ত। তাঁর বিনাশ নেই, তাই তিনি অবিনশ্বর। তিনি নিজেকে নিজেই সৃষ্টি করেছেন, তাই তাকে স্বয়ম্ভ বলা হয়। ঈশ্বরকে পরমেশ্বর নামেও ডাকা হয়। তিনি জগতের সৃষ্টিকর্তা, পালনকর্তা এবং ধ্বংসকর্তা। তিনিই জীবের মধ্যে আত্মারূপে অবস্থান করেন। ঈশ্বরের অনন্ত গুণ, অনন্ত ভাব এবং বিচিত্র তার লীলা। জ্ঞানীর কাছে তিনি ব্রহ্ম, যোগীর কাছে তিনি পরমাত্মা এবং ভক্তের কাচে ভগবান। হিন্দু ধর্মে একটি বিশেষ বৈশিষ্ট হলো ঈশ্বরতত্ত্ব। এই বৈশিষ্ট্য দ্বারা বুঝানো হয়েছে ঈশ্বর নিরাকার। তিনি এক এবং অদ্বিতীয়। তবে তিনি প্রয়োজনে সাকার রূপ ধারণ করতে পারেন। সাকার রূপ ধরে তিনি পৃথিবীতে অবর্তীণ হন। তখন তাঁকে অবতার বলা হয়। যখনই ধর্মের গ্লানি উপস্থিত হয় অর্থাৎ অন্যায় অবিচারে বিপর্যস্ত হয় মানবজীবন এবং অর্ধমের অভ্যুত্থান ঘটে তখন। ঈশ্বর কোনো না কোনো রূপ ধারণ করে পৃথিবীতে অবর্তীণ হন। যেমন – দ্বাপর যুগে ঈশ্বর স্বয়ং কৃষ্ণরূপে পৃথিবীতে এসেছিলেন। অন্যান্য অবতারও ঈশ্বরেরই অংশ। আর শ্রীকৃষ্ণ ঈশ্বরের পূর্ণ অবতার। আর তাইতো বলা হয়েছে
‘কৃষ্ণস্ত ভগবান্ স্বয়ম্’ – অর্থাৎ শ্রীকৃষ্ণ স্বয়ং ভগবান।
বিভিন্ন দেব-দেবী এক ঈশ্বরেরই ভিন্ন গুণ বা ক্ষমতার প্রকাশ মাত্র। এই এক ঈশ্বরকেই আমরা বিভিন্ন নামে অভিহিত করি। অর্থাৎ দেব-দেবীরা ঈশ্বরের এক বিশেষ গুণ বা শক্তির সাকার রূপ। যেমন – ব্রহ্মা সৃষ্টির দেবতা, বিষ্ণুরূপে ঈশ্বর জীবজগৎকে রক্ষা ও প্রতিপালন করেন, শিবরূপে তিনি ধ্বংস করে পৃথিবীর ভারসাম্য রক্ষা করেন। অপরদিকে দুর্গা শক্তির দেবী, সরস্বতী বিদ্যার দেবী, লক্ষ্মী ধন-সম্পদের দেবী ইত্যাদি।
আবার, ঈশ্বর যখন জীবনের মধ্যে আত্মারূপে অবস্থান করেন তখন তাকে জীবাত্মা বলে। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর জীবের মধ্যে ঈশ্বরের অবস্থান স্মপর্কে বলেছেন –
“সীমার মাঝে অসীম তুমি বাজাও সুর
আমার মধ্যে তোমার প্রকাশতাই এত মধুর”
অর্থাৎ দেহের সীমায় জীবাত্মারূপে পরমাত্মা বা ঈশ্বর বিদ্যমান থাকেন। সুতরাং বলা যায়- ঈশ্বর নিরাকার; তিনি সাকার রূপ ধারণ করতে পারেন। সব সাকার রূপই ঈশ্বরের বিভিন্ন প্রকাশ মাত্র। ঈশ্বর এক ও অদ্বিতীয় এবং নিরাকার।
আরো দেখুন :
২য় সপ্তাহের নমুনা সমাধান :
১ম সপ্তাহের অন্যান্য বিষয়ের নমুনা সমাধান :