৮ম শ্রেণি এ্যাসাইনমেন্ট : বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয় : সপ্তাহ ২
এ্যাসাইনমেন্ট বা নির্ধারিত কাজের ক্রম :
অ্যাসাইনমেন্ট বা নির্ধারিত কাজ - ১
অধ্যায় ও অধ্যায়ের শিরোনাম
এখনো প্রকাশিত হয় নি...
পাঠ্যসূচিতে অন্তর্ভুক্ত পাঠ নম্বর ও বিষয়বস্তু:
১৭৫৭ সাল থেকে ১৯৪৭ সাল পর্যন্ত যে কোনো ১০টি উল্লেখযোগ্য ঘটনার সময়কালসহ একটি পোস্টার তৈরি কর।
১৭৫৭ সাল থেকে ১৯৪৭ সাল পর্যন্ত যে কোনো ১০টি উল্লেখযোগ্য ঘটনার সময়কালসহ একটি পোস্টার তৈরি কর।
সংকেত :
১. সাল উল্লেখ
২. ঘটনার বর্ণনা
৩. উপস্থাপনায় বৈচিত্র্য
৮ম শ্রেণির ২য় সাপ্তাহের অ্যাসাইনমেন্ট-এর বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয় প্রশ্ন দেয়া হলো :
নমুনা সমাধান
১৭৫৭ সাল থেকে ১৯৪৭ সাল পর্যন্ত ১০ টি উল্লেখযোগ্য ঘটনা ক্রমান্বয়ে উল্লেখ করা হল:—
এক : পলাশীর যুদ্ধ (১৭৫৭ সাল) —
পলাশীর যুদ্ধ ১৭৫৭ সালের ২৩ জুন বাংলার শেষ স্বাধীন নবাব সিরাজউদ্দৌলা ও ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির মধ্যে সংঘটিত।এ যুদ্ধের প্রধান সেনাপতি মীরজাফর আলী খান নবাবের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করে এবং যার ফলে নবাব কোম্পানি কর্তৃক পলাশীর যুদ্ধে পরাজিত হন।এ যুদ্ধের রাজনৈতিক ফলাফল ছিল সুদূরপ্রসারী।এর ফলে বাংলায় ব্রিটিশ শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়। ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ক্রমান্বয়ে ব্রিটিশ শক্তি আধিপত্য বিস্তার করে করে অবশেষে বাংলায় ব্রিটিশ সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠিত হয়।
দুই : দ্বৈত শাসন (১৭৬৫ সাল) —
১৭৬৫ সালে লর্ড ক্লাইভ বাংলার নবাব থেকে দেওয়ানি সনদ প্রাপ্ত হলে যে শাসন প্রণালীর উদ্ভব হয়, তা ইতিহাসে দ্বৈত শাসন নামে পরিচিত।এ সময় কিছু শর্ত সাপেক্ষে মীরজাফরের পুত্র নাজিম উদ্দৌলা কে বাংলার সিংহাসনে বসানো হয়।শর্ত মোতাবেক নাজিম-উদ-দৌলা তাঁর পিতা মীর জাফরের ন্যায় ইংরেজদের বিনা শুল্কে অবাধ বাণিজ্য করার সুযোগ দেবেন এবং দেশীয় বণিকদের অবাধ বাণিজ্যের সুবিধা বাতিল করবেন।
১৭৭২ সালে দ্বৈত শাসন ব্যবস্থা লর্ড ওয়ারেন হেস্টিংস কর্তৃক বাতিল হয়।
তিন : ছিয়াত্তরের মন্বন্তর (১৭৭০ সাল) —
দুর্ভিক্ষ হলে কোন একটি এলাকায় ব্যাপক খাদ্য ঘাটতি দেখা দেয়।সাধারনত যুদ্ধ কিংবা সরকারের নীতিগত ব্যর্থতা ইত্যাদি কারণে দুর্ভিক্ষ সংগঠিত হতে পারে।।এছাড়া প্রাকৃতিক দুর্যোগ, গবাদিপশুর মড়ক, পোকাড় আক্রমন ইত্যাদি কারণেও দুর্ভিক্ষ সংগঠিত হয়।১৭৭০ সালে বাংলাদেশে এক ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ দেখা দিয়েছিল।সময়টি বাংলা ১১৭৬ সাল হওয়ায় এই দুর্ভিক্ষ ছিয়াত্তরের মন্বন্তর নামে পরিচিত হয়।অতি বৃষ্টি ও বন্যার কারণে কৃষি ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হওয়ায় সমগ্র দেশজুড়ে চরম অর্থনৈতিক মন্দা দেখা দেয়।
চার : চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত (১৭৯৩ সাল) —
চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত ১৭৯৩ সালে কর্নওয়ালিস প্রশাসন কর্তৃক ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি সরকার ও বাংলার ভূমি মালিকদের (সকল শ্রেণির জমিদার ও স্বতন্ত্র তালুকদারদের) মধ্যে সম্পাদিত একটি স্থায়ী চুক্তি।এই চুক্তির প্রবক্তা লর্ড কর্নওয়ালিস।এ চুক্তির আওতায় জমিদার ঔপনিবেশিক রাষ্ট্রব্যবস্থায় ভূ-সম্পত্তির নিরঙ্কুশ স্বত্বাধিকারী হন।
জমিদারদের জমি বিক্রয়, বন্ধক, দান ইত্যাদি উপায়ে অবাধে হস্তান্তরের অধিকার থাকলেও তাদের প্রজা বা রায়তদের সে অধিকার দেওয়া হয়নি।
পাঁচ : শ্রীরামপুরে মুদ্রণযন্ত্র স্থাপন (১৮২১ সাল) —
বাংলার নবজাগরণের ক্ষেত্রে শ্রীরামপুরে প্রতিষ্ঠিত মুদ্রণযন্ত্রের ভূমিকা ছিল অনন্য।১৮২১ সালে শ্রীরামপুরে মুদ্রণযন্ত্র স্থাপন বাংলার মানুষের মনকে মুক্ত করা ও জাগিয়ে তোলার ক্ষেত্রে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করে।এতে বই-পুস্তক ছেপে জ্ঞানচর্চাকে শিক্ষিত ও সাধারণ মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়ার পথ সুগম হয়। এ সময় অনেকে বাংলা ভাষায় সংবাদপত্র প্রকাশ করে জনমত সৃষ্টিতে এগিয়ে আসেন।
ছয় : সিপাহি বিদ্রোহ (১৮৫৭ সালের ১০ মে) —
সিপাহি বিদ্রোহ বা সৈনিক বিদ্রোহ ১৮৫৭ সালের ১০ মে মিরাট শহরে শুরু হওয়া ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির সেনাবাহিনীর সিপাহিদের বিরুদ্ধে একটি বিদ্রোহ।যার মধ্যে আলেম ওলামাদের অবদান অপরিসীম। ক্রমশ এই বিদ্রোহ গোটা উত্তর ও মধ্য ভারতে (অধুনা উত্তরপ্রদেশ, বিহার, উত্তর মধ্যপ্রদেশ ও দিল্লি অঞ্চল ) ছড়িয়ে পড়েছিল।এই সব অঞ্চলে বিদ্রোহীদের দমন করতে কোম্পানিকে যথেষ্ট বেগ পেতে হয়।
সিপাহি বিদ্রোহকে ভারতের প্রথম স্বাধীনতা যুদ্ধ, মহাবিদ্রোহ, ভারতীয় বিদ্রোহ, ১৮৫৭ সালের বিদ্রোহ নামেও অভিহিত করা হয়ে থাকে।
সাত : বঙ্গীয় আইন সভা (১৮৬১ সাল ) —
বঙ্গীয় আইন সভা (Bengal Legislative Assembly) ভারত শাসন সংক্রান্ত ধারাবাহিকভাবে সাংবিধানিক সংস্কারের চূড়ান্ত পরিণতি স্বরূপ গঠিত হয়েছিল।১৮৬১ সাল থেকে শুরু করে ১৯৩৫ সালের ভারত শাসন আইন প্রণয়ন পর্যন্ত শাসন সংস্কারের শেষ পর্যায় হিসেবে বঙ্গীয় আইন সভার আত্মপ্রকাশ।
আট : বঙ্গভঙ্গ (১৯০৫ সালের ১৬ অক্টোবর ) —
উপমহাদেশে ব্রিটিশদের শাসনতান্ত্রিক ও রাজনৈতিক ইতিহাসের একটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা বঙ্গভঙ্গ।১৯০৫ সালের ১৬ অক্টোবর ব্রিটিশ ভারতের ভাইসরয় লর্ড জর্জ ন্যাথানিয়েল কার্জন শাসনকাজ পরিচালনার সুবিধার্থে তৎকালীন বাংলা প্রেসিডেন্সিকে ভেঙ্গে পূর্ববঙ্গ ও পশ্চিমবঙ্গ নামে দুটি নতুন প্রদেশে বিভক্ত করেন।
নয় : লাহোর প্রস্তাব (১৯৪০ সালের ২৩ মার্চ ) —
লাহোর প্রস্তাব বা পাকিস্তান প্রস্তাব, যাকে পাকিস্তানের স্বাধীনতার ঘোষণাও বলা হয়, তা হচ্ছে ভারতীয় উপমহাদেশে বসবাসকারী মুসলিমদের জন্য একটি পৃথক রাষ্ট্রের দাবী জানিয়ে উত্থাপিত প্রস্তাবনা।১৯৪০ সালের ২৩ মার্চ লাহোরে অনুষ্ঠিত মুসলীম লীগের অধিবেশনে মুহাম্মদ আলী জিন্নাহ এর সভাপতিত্বে মুসলিম লীগের পক্ষ হতে ঐতিহাসিক লাহোর প্রস্তাবের প্রারম্ভিক খসড়া তৈরি করেন পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী সিকান্দার হায়াত খান যা আলোচনা ও সংশোধনের জন্য নিখিল ভারত মুসলিম লীগের সাবজেক্ট কমিটি সমীপে পেশ করা হয়।মূল প্রস্তাবটি ছিল উর্দু ভাষায়।
এই সম্মেলনে ফজলুল হককে “শেরে বাংলা” উপাধি দেয়া হয়।
দশ : ভারত বিভাজন (১৯৪৭ সালের ১৫ আগস্ট ) —
ভারত বিভাজন বা দেশভাগ হল ব্রিটিশ সরকার কর্তৃক ভারতীয় উপমহাদেশকে ভাগ করা। এটি মূলত ভারতের রাজনৈতিক বিভাজন।১৯৪৭ সালের ১৫ আগস্ট ব্রিটিশ ভারত ভেঙে হয়ে গঠিত হয় পাকিস্তান ও ভারত নামে দুটি সার্বভৌম রাষ্ট্র।পাকিস্তান পরবর্তীকালে আবার দ্বিধাবিভক্ত হয়ে পাকিস্তান ও বাংলাদেশ নামে দুটি রাষ্ট্রে পরিণত হয়।১৯৪৭ সালের ভারত বিভাজনের ফলে ব্রিটিশ ভারতের বেঙ্গল প্রেসিডেন্সি ও পাঞ্জাব প্রদেশও দ্বিখণ্ডিত হয়।বেঙ্গল প্রেসিডেন্সি ভেঙে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য (ভারত) ও পূর্ব বাংলা/পূর্ব পাকিস্তান প্রদেশ (পাকিস্তান) গঠিত হয়।
আজিবুল হাসান
২৬শে মার্চ, ২০২১
কিভাবে পোস্টার বানাবেন? / পোস্টার তৈরির নিয়ম :
[পোস্টার সাধারণত এক পৃষ্ঠায় লিখতে বা আঁকতে হয়। এই জন্য কাগজের সাথে কাগজ জুড়ে বড় করে
নিতে হবে। এবং সেখানে নিজের দৃষ্টিতে সুন্দর লাগে এমন করে বিভিন্ন জায়গায় লিখা
গুলো গুচ্ছ গুচ্ছ করে সাজিয়ে লেখতে হয়।]
আরো দেখুন :
৩য় সপ্তাহের নমুনা সমাধান :
২য় সপ্তাহের অন্যান্য বিষয়ের নমুনা সমাধান :