তোমাদের বিদ্যালয়ে সম্প্রতি ইভটিজিং বিরোধী শিক্ষক-অভিভাবক-শিক্ষার্থী সমাবেশ
অনুষ্ঠিত হয়েছে। উক্ত অনুষ্ঠানমালার বর্ণনা দিয়ে প্রধান শিক্ষক বরাবর একটি
প্রতিবেদন রচনা কর।
১৯ অক্টোবর, ২০২১
বরাবর
প্রধান শিক্ষক,
বাংলাদেশ মহিলা সমিতি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ (বাওয়া স্কুল ও কলেজ)।
চট্টগ্রাম।
বিষয় : বিদ্যালয়ে আয়োজিত ইভটিজিং বিরোধী সমাবেশ সংক্রান্ত প্রতিবেদন।
সূত্র: বা.ম.স.বা.উ.বি.ক./২০২১/১০(১৯)
জনাব,
বাওয়া স্কুল ও কলেজের বার্ষিক সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সপ্তাহ সম্পর্কে প্রতিবেদন
তৈরির জন্য আদিষ্ট হয়ে নিচের প্রতিবেদনটি উপস্থাপন করছি।
নিবেদক-
তাসফিয়া জাহান
বিজ্ঞান শাখা, দশম শ্রেণি,
বাওয়া স্কুল ও কলেজ
প্রতিবেদকের নাম ও ঠিকানা : তাসফিয়া জাহান, বিজ্ঞান বিভাগ, দশম শ্রেণি।
প্রতিবেদনের শিরোনাম : বাওয়া স্কুল ও কলেজে ইভটিজিং বিরোধী সমাবেশ।
প্রতিবেদন তৈরির সময় : সকাল ৯.০০টা।
প্রতিবেদন রচনার তারিখ : ১৯ অক্টোবর, ২০২১।
বাওয়া স্কুল ও কলেজে ইভটিজিং বিরোধী সমাবেশ
১. গত ১৮ অক্টোবর, ২০২১, বাওয়া স্কুল ও কলেজের অডিটোরিয়ামে
“ইভটিজিং বিরোধী মনোভাব গড়ে তোলার লক্ষ্যে ছাত্র, শিক্ষক ও অভিভাবকদের
ভূমিকা”
শীর্ষক একটি মুক্ত সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন চট্টগ্রাম
কোতয়ালি থানা শিক্ষা অফিসার। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মাধ্যমিক ও
উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ড চট্টগ্রামের মাননীয় চেয়ারম্যান। বাওয়া স্কুল ও
কলেজের সকল শিক্ষক, প্রত্যেক শ্রেণির শিক্ষার্থী ও তাদের পিতামাতা এই মুক্ত
সমাবেশে উপস্থিত হন।
২. সকাল ১০টায় আলোচনা সভা উদ্বোধন করেন মাননীয় বোর্ড চেয়ারম্যান। এরপর
স্বাগত ভাষণ দেন অনুষ্ঠানের সভাপতি। তারপর শুরু হয় মুক্ত সমাবেশ। এই মুক্ত
সমাবেশের ব্যাপ্তি ছিল চার ঘণ্টা।
৩. মুক্ত সমাবেশের প্রধান পর্যায়ে কথা বলে ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণিতে
অধ্যয়নরত প্রথম স্থান অধিকারীগণ। তারা স্ব স্ব শ্রেণির প্রতিনিধিত্ব করে। ষষ্ঠ
শ্রেণির প্রতিনিধি বলে,
“ইভটিজিং প্রতিরোধে দরকার নৈতিক আচরণের চর্চা করা।” সপ্তম শ্রেণির
প্রতিনিধি বলে, “ইভটিজিং প্রতিরোধে শিষ্টাচার মেনে চলা উচিত।” অষ্টম
শ্রেণির প্রতিনিধি বলে,
“নৈতিকতা হরণকারী অনুষ্ঠান, সংবাদ অর্থাৎ অপসংস্কৃতির প্রতিরোধ করা
উচিত।”
নবম শ্রেণির প্রতিনিধি বলে,
“সকল স্তরের মানুষকে আমাদের আবহমান সংস্কৃতির প্রতি উদ্বুদ্ধ করতে হবে, যাতে
পাশ্চাত্য সংস্কৃতির অপপ্রভাব তাদের মাঝে বিস্তার করতে না পারে।”
দশম শ্রেণির প্রতিনিধি বলে,
“ইভটিজিং প্রতিরোধে সর্বস্তরের জনগণ, সরকার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে
স্বতঃস্ফুর্ত ভূমিকা পালন করতে হবে।”
যাতে যথাযথ আইন প্রয়োগ ও কার্যকরণের মধ্য দিয়ে প্রতিবাদী মনোভাব গড়ে তোলা যায়।
৪. মুক্ত সমাবেশের দ্বিতীয় পর্যায়ে কথা বলেন নির্বাচিত অভিভাবকবৃন্দ।
অভিভাবকদের মধ্যে জনাব মঈনুল হাসান বলেন-
‘শিক্ষার আলো মানুষের মনুষ্যত্ব বিকাশে সাহায্য করে। এই শিক্ষার আলো যদি
যুবসমাজে ছড়িয়ে দেয়া যায়, তাহলে তারা ভালো-মন্দের পার্থক্য করতে পারবে এবং
খারাপ পথ থেকে সরে আসবে।’
ইসমাত জারিন বলেন,
‘পুরুষ যখন নারীকে সম্মান করতে শিখবে কেবল তখনই নারীর প্রতি অশালীন আচরণ
করতে তার বিবেক বাধা দেবে। সুতরাং নারীর মর্যাদা বৃদ্ধির জন্য পদক্ষেপ নিতে
হবে।’
৫. সমাবেশের তৃতীয় পর্যায়ে বিশ্লেষণী আলোচনা করেন জেলা স্কুলের বাংলা,
ইংরেজি, গণিত, ধর্ম ও বিজ্ঞানের সিনিয়র শিক্ষকবৃন্দ। বাংলার শিক্ষক রনক জাহান
বলেন,
“অধ্যয়ন, সৃজনশীলতা এবং ধর্মীয় ও সামাজিক মূল্যবোধে যুবসমাজকে তথা
সর্বস্তরের জনগণকে উদ্বুদ্ধ করতে হবে।”
ইংরেজির শিক্ষক হাসান শেখ বলেন,
“বর্তমান বিশ্বায়নের যুগে ইন্টারনেটের ব্যবহার সবকিছু নিমিষেই হাতের মুঠোয়
এনে দিচ্ছে। সেক্ষেত্রে ইন্টারনেটের ব্যবহারের ভালো দিকটি গ্রহণ করে যথাসম্ভব
খারাপ দিক বর্জনের মানসিকতা গড়ে তুলতে হবে যুবসমাজের মাঝে।”
বিজ্ঞানের শিক্ষক শামীম হক বলেন,
“মাদকাসক্ত যুবসমাজ তাদের বিবেক হারিয়ে নারীকে ইভটিজিং করে যাচ্ছে। তাই
মাদকদ্রব্যের নিয়ন্ত্রণ করা প্রয়োজন।”
ধর্মের শিক্ষক হাসান আলী বলেন,
“নৈতিক শিক্ষা ও প্রেরণামূলক কর্মকাণ্ডের চর্চা পরিবারকে নিশ্চিত করতে হবে।
যাতে শিশুর মনুষ্যত্ব বিকশিত হয় পূর্ণভাবে, তাহলে ইভটিজিং কমে আসবে।”
৬. মুক্ত সমাবেশের চতুর্থ পর্যায়ে কথা বলেন, মাননীয় প্রধান অতিথি এবং
সমাবেশের সভাপতি। তাঁদের কথায় বেকার যুবকের কর্মসংস্থান এবং স্কুল, কলেজ,
ব্যস্ততম সড়কের মোড় ইত্যাদি স্থানে পুলিশের তৎপরতা বৃদ্ধির কথা গুরুত্ব পায়।
সভাপতির বক্তব্য শেষে দুপুর ১টায় সমাবেশের সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়।
প্রতিবেদকের নাম ও ঠিকানা : তাসফিয়া জাহান, বিজ্ঞান বিভাগ, দশম শ্রেণি।
প্রতিবেদনের শিরোনাম : বাওয়া স্কুল ও কলেজে ইভটিজিং বিরোধী সমাবেশ।
প্রতিবেদন তৈরির সময় : সকাল ৯.০০টা।
প্রতিবেদন রচনার তারিখ : ১৯ অক্টোবর, ২০২১।