মনে করো, তোমার নাম নিলয়। তোমার গ্রামের বাড়ি রতনপুর। সাম্প্রতিক বন্যায় তোমার
এলাকা খুব ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত জনজীবনের বিবরণ দিয়ে দৈনিক
পত্রিকায় প্রকাশের উপযোগী একটি প্রতিবেদন রচনা করো।
বা, মনে করো, তুমি একটি দৈনিক পত্রিকার নিজস্ব প্রতিবেদক। সাম্প্রতিক বন্যায়
জনজীবনের দুর্ভোগ সম্পর্কে একটি প্রতিবেদন রচনা করো।
বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত রতনপুরের জনজীবন
সুলতান মাহমুদ : ৪ঠা আগস্ট, ২০২১ :
সর্পিল গতিতে বয়ে যাওয়া ব্রহ্মপুত্র নদীর তীরে অবস্থিত রতনপুর গ্রামটি জামালপুর
জেলার অন্তর্গত। বন্যার প্রকোপ প্রতিবছরই এ এলাকায় পড়ে এবং ক্ষতিগ্রস্ত হয় এলাকার
মানুষ। কিন্তু এবারের বন্যা স্মরণকালের ভয়াবহ এবং করালগ্রাসী রূপ নিয়ে এ অঞ্চলের
মানুষের সামনে আবির্ভূত হয়েছে। বন্যার তীব্রতায় মানুষ শুধু আতঙ্কিত হয়নি, হয়ে
পড়েছে হতবিহ্বল। নদীর পাড় ভেঙেছে, বৃক্ষ উপড়ে গেছে, রাস্তা ভেঙেছে, মাঠের পর
মাঠের সোনালি ফসল সব ডুবে যায় বিশাল জলরাশির তলে। মনে হয় যেন দিগন্তজোড়া নদী,
মাঝে মাঝে বাড়িগুলোকে দূর থেকে দেখে মনে হয় সমুদ্রের মাঝে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র দ্বীপ।
এ অবস্থায় মানুষের আশ্রয় নেওয়ার জায়গা নেই, প্রাণ বাঁচানোর মতো খাদ্য নেই,
চিকিৎসার ওষুধ নেই, শিশুদের জন্য পর্যাপ্ত খাদ্য নেই – শুধু নেই আর নেই, যেন
গগনবিদারী হাহাকার।
সর্বনাশা, সর্বগ্রাসী বন্যায় এ অঞ্চলের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ অভাবনীয়। ঘরবাড়ি ধ্বংস
হয়েছে ২০০টি, পাকা রাস্তা ধ্বংস হয়েছে ৫ কি. মি. কাঁচা রাস্তা ১২ কি.মি., পানির
প্লাবনে নষ্ট হয়েছে প্রায় ৩০০ একর জমির ফসল। দীর্ঘদিন জমে থাকা দূষিত পানির কারণে
শুরু হয়েছে ডায়রিয়া, উদরাময়, আমাশয়ের মতো রোগ, যা বর্তমানে মহামারি আকার ধারণ
করেছে। এসব জটিল রোগের শিকার হয়ে এ পর্যন্ত মারা গেছে ১৫ জন, তার মধ্যে অধিকাংশই
শিশু। স্কুল কলেজ ভবন নষ্ট হয়েছে প্রায় ২০টি, নষ্ট হয়েছে এ প্রতিষ্ঠানসমূহের
প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ও আসবাবপত্র। সাধারণ মানুষ এখন জামালপুর-শেরপুর রোডে খোলা
আকাশের নিচে মানবেতর জীবনযাপন করছে।
ভয়াবহ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত রতনপুর গ্রামের অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানোর মতো
মানুষের বড় অভাব। সরকারি সাহায্য-সহযোগিতার নামে যে ত্রাণসামগ্রী দেওয়া হচ্ছে তা
পর্যাপ্ত নয়।
রতনপুর গ্রামের বন্যাদুর্গত মানুষের দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেওয়ার জন্য জেলা
প্রশাসকের নিকট এলাকার সকল মানুষের পক্ষ থেকে অনুরোধ করছি। যাতে অবিলম্বে জেলা
প্রশাসনের নিজস্ব উদ্যোগে চিকিৎসার জন্য চিকিৎসকদল পাঠানো হয়। নিরন্ন মানুষের
খাবারের জন্য প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রী, শিশুখাদ্য (যেমন – গুঁড়ো দুধ, বার্লি) ও
বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা করা অতীব জরুরি। গৃহহীন মানুষের জন্য গৃহনির্মাণের
ব্যবস্থা করা, রাস্তাঘাট মেরামত করে দুর্গত মানুষের পাশে দাঁড়ানো অতি জরুরি।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর সংস্কার সাধন প্রয়োজন, যাতে ছাত্রছাত্রীদের লেখাপড়ায় কোনো
ব্যাঘাত না ঘটে।
Thanks :)
ReplyDeleteThanks
ReplyDelete