প্রতিবেদন : সড়ক দুর্ঘটনার বিবরণ দিয়ে

একটি মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনার বিবরণ দিয়ে দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশের উপযোগী একটি প্রতিবেদন রচনা করো।

অথবা, একটি মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনার বিবরণ দিয়ে সংবাদ পত্রে প্রকাশের জন্য প্রতিবেদন প্রণয়ন করো।

অথবা, গত বৎসরের ৫ সেপ্টেম্বর রংপুর জেলা শহর থেকে পাঁচ কি.মি. দূরে লালবাজার নামক স্থানে একটি মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে। এই মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনার বিবরণ দিয়ে দৈনিক ‘প্রথম আলো’ পত্রিকার সম্পাদক বরাবর একটি প্রতিবেদন রচনা করো।

অথবা, গত সেপ্টেম্বর মাসে সিলেট শহরের আম্বরখানা পয়েন্টে একটি মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে। এই মর্মান্তি সড়ক দুর্ঘটনার বিবরণ দিয়ে দৈনিক সিলেটের ডাক পত্রিকার সম্পাদক বরাবরে একটি প্রতিবেদন রচনা করো।


তরায় মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনা


জেলা প্রতিনিধি : মানিকগঞ্জ : ১৮ই জুলাই, ২০২১ : গত ১৪ জুলাই, ২০২১ সকাল ৯টায় মানিকগঞ্জ শহর থেকে পাঁচ কিলোমিটার পশ্চিমে তরা নামক স্থানে এক মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় ১৫ জন নিহত ও ২০ জন আহত হয়েছে। ঢাকাগামী একটি মিনিবাস (ঢাকা মেট্রো ল-XXXXX) নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার পার্শ্ববর্তী মেহগনি গাছের সাথে প্রচণ্ডভাবে ধাক্কা খেয়ে পাশের খাদে পড়ে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ঘন কুয়াশার ভেতর দ্রুতগতিতে বাঁক নেওয়ার সময় গাড়ির চালক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেললে এ দুর্ঘটনা ঘটে। এতে কোনো ব্যক্তিই অক্ষত থাকতে পারেনি। প্রচণ্ড শব্দ এবং মর্মান্তিক চিৎকার শুনে আশপাশের গ্রামের লোকজন ছুটে আসে এবং উদ্ধারকাজ শুরু করে। ঘটনাস্থলে পাঁচ জনের লাশ দেখে স্থানীয় জনগণ শোকে বাকরুদ্ধ হয়ে যায়। বাসযাত্রীদের ২৮ জনকে আহত অবস্থায় মানিকগঞ্জ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

সাথে সাথে মানিকগঞ্জ সদর হাসপাতাল থেকে আরো অ্যাম্বুলেন্স আসে। পুলিশও দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁচে মৃতদেহগুলোর দায়িত্ব গ্রহণ করে। পরবর্তীতে মানিকগঞ্জ সদর হাসপাতালে আটজন ও হাসপাতালে নেওয়ার পথে দুইজন মারা যায়। আশ্চর্যজনকভাবে বেঁচে যান এক মহিলা যাত্রী। তিনি শিবালয় থানা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা মিসেস শারমিন নাহার রূপা। তিন ঘণ্টা পর মানিকগঞ্জ সদর হাসপাতালে তাঁর জ্ঞান ফেরার পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তাঁকে স্থানান্তর করা হয়। তিনি জানান, যদিও নিয়মানুসারে মিনিবাসটির যত্রতত্র থামা উচিত নয় তবুও অতিরিক্ত আয়ের লোভে তারা সব স্টপেজ থেকে যাত্রী তুলেছে। এর ফলে যাত্রাবিলম্ব ঘটেছে। সিন্ডিকেটের নির্ধারিত সময়সীমা লঙ্ঘিত হলে ফাইন দিতে হয়। পথে সময়ক্ষেপণ করে পরবর্তীতে দ্রুত চালিয়ে সে সময়টুকু বাঁচাতে গিয়েই এ মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটে। মিনিবাসের ধারণক্ষমতা ২০জন, কিন্তু আহত ও নিহতের সংখ্যা যোগ করলে হয় ৩৫ জন। অর্থাৎ অতিরিক্ত যাত্রী বহন ছিল এ দুর্ঘটনার মূল কারণ।

স্থানীয় জনগণের অকুণ্ঠ ও আন্তরিক সহযোগিতা প্রমাণ করেছে মানবতার মৃত্যু নেই। যার যতটুকু সামর্থ্য তারা তা প্রয়োগ করেছেন। অবশ্য এর মাঝেও হাতঘড়ি, গলার হার, মোবাইল ফোন ও আংটিসহ অন্যান্য জিনিস খোয়া গেছে বলে জানা যায়।


একই প্রতিবেদন আবার সংগ্রহ করে দেওয়া হলো


তরা'য় মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনা


জেলা প্রতিনিধি : মানিকগঞ্জ : গত ১১ জানুয়ারি, ২০২১ সকাল ৯টায় মানিকগঞ্জ শহর থেকে ৫কিলোমিটার পশ্চিমে তরা নামক এক মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় ১৫জন নিহত ও ২০ জন আহত হয়েছে। ঢাকাগামী একটি মিনিবাস (ঢাকা মেট্রো ল -৭১৭২৭) নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার পার্শ্ববর্তী মেহগনি গাছের সাথে প্রচন্ডভাবে ধাক্কা খায় এবং পাশের খাদে পড়ে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ঘন কুয়াশার ভেতর দ্রুতগতিতে বাঁক নেওয়ার সময় গাড়ির চালক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেললে এ দুর্ঘটনা ঘটে। এতে কোনো ব্যক্তি অক্ষত থাকতে পারেনি। প্রচন্ড শব্দ এবং মর্মান্তিক চিৎকার শুনে আশে পাশের গ্রামের লোকজন ছুটে আসেন এবং উদ্ধার কাজ শুরু করেন। ঘটনাস্থলে ৫ জনের লাশ দেখে স্থানীয় জনগণ শোকে বাকরুদ্ধ হয়ে যান। চালক ঘটনাস্থলেই নিহত হন। বাস যাত্রীদের ২৮ জনকে আহত অবস্থায় মানিকগঞ্জ সদর হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।

তরা থেকে টেলিফোনে খবর পেয়ে মানিকগঞ্জ হাসপাতাল থেকে অ্যাম্বুলেন্স আসে। পুলিশও দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে মৃতদেহগুলোর দায়িত্ব গ্রহণ করে। পরবর্তীতে মানিকগঞ্জ সদর হাসপাতালে ৮জন ও হাসপাতালে নেওয়ার পথে ২ জন মারা যায় বলে মনে হচ্ছে। আশ্চর্যজনকভাবে বেঁচে যান এক মহিলা যাত্রী। তিনি শিবলায় থানা মহিলা বিষয়ক অফিসার মিসেস শারমিন নাহার রূপা। তিন ঘন্টা পর মানিকগঞ্জ সদর হাসপাতালে তাঁর জ্ঞান ফেরার পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তাঁকে স্থানান্তর করা হয়। তিনি জানান, যদিও নিয়মানুসারে মিনিবাসটির যত্রতত্র থামা উচিত নয় তবুও অতিরিক্ত আয়ের লোভে তারা সব স্টপেজ থেকে যাত্রী ওঠা নামা করিয়েছে। এর ফলে যাত্রা বিলম্বে ঘটেছে। সিন্ডিকেটের নির্ধারিত সময়সীমা লঙ্ঘিত হলে ফাইন দিতে হয়। পথে সময়ক্ষেপণ করে পরবর্তীতে দ্রুত চালিয়ে সে সময়টুকু বাঁচাতে গিয়েই এ মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটে। মিনিবাসের ধারণক্ষমতা ২০জন যাত্রী, কিন্তু আহত ও নিহতের সংখ্যা যোগ করলে হয় ৩৫ জন ছাত্রী। অর্থাৎ যাত্রীবহন ছিল এ দুর্ঘটনা মূল কারণ। 

স্থানীয় জনগণের অকুন্ঠ ও আন্তরিক সহযোগিতা প্রমাণ করেছে মানবতার মৃত্যু নেই। যার যতটুকু সামর্থ্য তাঁরা তা প্রয়োগ করেছেন। অবশ্য এর মাঝেও হাতঘড়ি, গলার হার, আঙুলের আংটিসহ অন্যান্য জিনিসপত্র খোয়া গেছে বলে জানা যায়।

আলোর পাশে অন্ধকার থাকবেই-তবু এ জাতীয় মনুষ্য নামধারী জীবের প্রতি ঘৃণা পোষণ করতেও কুন্ঠা জাগে। এ প্রতিবেদক সকালেই ঘটনাস্থলে পরিদর্শন করে শিউরে ওঠেন। জমাটবাঁধা রক্ত, দুমড়ানো-মোচড়ানো মিনিবাস, সবকিছু মিলিয়ে বীভৎস এক দৃশ্য।

2 Comments

Post a Comment
Previous Post Next Post