সাধারণ জ্ঞান : আখতারুজ্জামান ইলিয়াস [ রেইনকোট ]

আখতারুজ্জামান ইলিয়াস

আখতারুজ্জামান ইলিয়াসের জন্ম কোথায়? — ১৯৪৩ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি গাইবান্ধা জেলার গোহাটি নামক গ্রামে। (তার মামার বাড়ী)

আখতারুজ্জামান ইলিয়াসের মূল পরিচয় কী? — একজন কথা সাহিত্যিক।

আখতারুজ্জামান ইলিয়াস কোন বিখ্যাত উপন্যাসগুলো লিখেছেন? — চিলেকোঠার সেপাই (১৯৮৭); খোয়াবনামা (১৯৯৬)।

আখতারুজ্জামান ইলিয়াসের রচিত বিখ্যাত ছোটগল্পসমূহ উল্লেখ কর। — অন্য ঘরে অন্য স্বর (১৯৭৬); খোঁয়ারি (১৯৮২) ; দোজখের ওম (১৯৮৯)।

আখতারুজ্জামান ইলিয়াসের রচিত গল্প ও উপন্যাসের মূল উপজীব্য কী? — অনাহার, অভাব, দারিদ্র্য, শোষণ — নিপীড়িত হয়ে যেসব মানুষ জীবনযাপন করছে সেসব মানুষের জীবনের গল্প তার রচিত গল্পসমূহে এবং উপন্যাসে পাওয়া যায়।

আখতারুজ্জামান ইলিয়াসের কোন দুটি উপন্যাস কে মহাকব্যোচিত উপন্যাস বলে ধরা হয়? — 'চিলেকোঠার সেপাই'; 'খোয়াবনামা' কে।

'চিলেকোঠার সেপাই' উপন্যাসের বিষয়বস্তু সংক্ষেপে আলোচনা কর।
এটি মূলত ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থানের পটভূমি নিয়ে রচিত মহাকাব্যিক উপন্যাস। একটি বাড়ির চিলেকোঠাতে বাস করা এক যুবকের স্বাধীন হওয়ার চেতনা কে তুলে ধরা হয়েছে। বাসস্থান যেমনই হোক স্বাধীনতার লক্ষ্যে গড়ে ওঠা বৃহত্তর আন্দোলনের জোয়ারে সেদিন সমবেত হয়েছিল ওসমান। জনজীবনের সমগ্রতাকে, বিশেষ করে গ্রামীণ জনপদ ও শহরের সব মানুষ এই উপন্যাসে ঠাঁই পেয়েছে। যুবক ওসমান দেশ বিভাগের ফলে উদ্বাস্তু হয়ে ঢাকায় এসেছে। সে এতটাই বিচ্ছিন্ন এবং ছিন্নমূল যে তাকে বাড়ীর চিলেকোঠায় বাস করতে হচ্ছে। কিন্তু তারপরেও তার সাথে বিভিন্ন রাজনৈতিক সংগঠন, ছাত্রলীগ নেতা, ছাত্রনেতা এমনকি তার বাড়িওয়ালা কন্যাসহ রিক্সাওয়ালার সাথে তার নিবিড় যোগাযোগ। ওসমান কে উপন্যাসে অনেক ছোট ছোট কাহিনীর সূত্রধর হিসেবে তুলে ধরা হয়েছে। আবার এইসব ছোট ছোট কাহিনীর একটা মহা সম্মিলন সাহিত্যিক আখতারুজ্জামান ইলিয়াস খুব সুন্দরভাবে রূপ দিয়েছেন। এখানে একটি ইতিবাচক রাজনীতির মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশের স্বাধীনতার পূর্ব রূপরেখা তুলে ধরা হয়েছে।সর্বোপরি এসব কারণেই এই উপন্যাসটি মহাকাব্যিক উপন্যাসের রূপ পেয়েছে।

'খোয়াবনামা'র বিষয় নিয়ে আলোচনা কর।
গ্রাম বাংলার নিম্নবিত্ত শ্রমজীবী মানুষের জীবনালেখ্যসহ ফকির–সন্ন্যাসী বিদ্রোহ, আসামের ভূমিকম্প, তেভাগা আন্দোলন, ১৯৪৩ সালের মন্বন্তর, পাকিস্তান আন্দোলন ও সাম্প্রতিক দাঙ্গা ইত্যাদি ঐতিহাসিক উপাদান নিয়ে এই উপন্যাস নিপুনভাবে সাজানো হয়েছে। এইসব উপাদানসমূহ অবলম্বন করে বাঙালি তথা মানবজীবনের সংগ্রাম ও এগিয়ে যাওয়ার মূলমন্ত্র নিয়ে উপন্যাসটি রচিত হয়েছে।

'অন্য ঘরে অন্য স্বর' গল্পগ্রন্থের পরিচয় দাও।
১৯৬৫ থেকে ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত রচিত 'নিরুদ্দেশ যাত্রা, উৎসব, প্রতিশোধ, যোগাযোগ, ফেরারি, অন্য ঘরে অন্য স্বর ইত্যাদি গল্প নিয়ে সাহিত্যিক আখতারুজ্জামান ইলিয়াস এই গল্পগ্রন্থটি প্রকাশ করেন ১৯৭৬ সালে। এছাড়া প্রথম বারের মতো এখানে পুরানো ঢাকার জনজীবন গল্পগুলোতে বিশেষত্ব পেয়েছে যা বাংলাদেশের কথাসাহিত্যিে নতুন মাত্রা যোগ করে।

আখতারুজ্জামান ইলিয়াস প্রধান কোন পুরস্কার লাভ করেন? — বাংলা একাডেমি পুরস্কার (১৯৮২ সালে)।

আখতারুজ্জামান ইলিয়াস কবে মৃত্যুবরণ করেন? — ৪ জানুয়ারি, ১৯৯৭ (ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে)।

'রেইনকোট'
গল্প থেকে গুরুত্বপূর্ণ জিজ্ঞাসা

'রেইনকোট' গল্পটি কার লেখা? — আখতারুজ্জামান ইলিয়াসের লেখা।

এটি কবে প্রকাশিত হয়? — ১৯৯৫ সালে।

'রেইনকোট' গল্পের কথকের নাম কি? — নুরুল হুদা।

মিসক্রিয়ান্ট শব্দের অর্থ কী? — দুষ্কৃতকারী।

কাদের সাথে নুরুল হুদার আঁতাত আছে? — ছন্মবেশী কুলিদের সাথে।

'রেইনকোট' গল্পটি কোন গল্পগ্রন্থের অন্তর্ভুক্ত? — 'জাল স্বপ্ন স্বপ্নের জাল'।

কার জন্য নুরুল হুদাকে তটস্থ থাকতে হয়? — মুক্তিযোদ্ধা শ্যালক মিন্টুর জন্য।

কে এপ্রিলের শুরু থেকে বাংলা বলা ছেড়েছে? — পিয়ন ইসহাক।

'রেইনকোট' গল্পে কখন থেকে বৃষ্টি শুরু হয়? — ভোররাত থেকে।

কিসের শব্দ লেখকের সমস্ত আয়েশ ছিঁড়ে ফালাফালা করে? — দরজায় কড়া নাড়ার শব্দ।

রাস্তায় বারোলে নুরুল হুদা সবসময় কী রেডি রাখেন? — পাঁচ কালেমা।

দরজার কপাট খুলতেই নুরুল হুদার ঘরে কে প্রবেশ করল? — প্রিন্সিপালের পিয়ন।

কলেজের জিমনেশিয়ামে এখন কারা অবস্থান করে? — পাকিস্তানি মিলিটারি।

পাকিস্তানের জন্য প্রিন্সিপাল কী করছেন? — দিনরাত দোয়া দুরুদ পড়ছেন।

পাকিস্তানকে বাঁচাতে প্রিন্সিপাল মিলিটারির বড় কর্তাকে কী পরামর্শ দিয়েছিলেন? — দেশের সব স্কুল-কলেজ থেকে শহীদ মিনার ভাঙার পরামর্শ।

পাকিস্তানের ভালোর জন্য কলিগদের গালাগালি করেন কে? — পিন্সিপাল ডক্টর আফাজ আহমদ।

মিলিটারিরা প্রথমেই কোন দিকে কামান তাক করেছে? — শহীদ মিনারের দিকে।

'রেইনকোট' গল্প অনুসারে রেডিও টেলিভিশনে হরদম কী বলছে? — 'সিচুয়েশন নর্ম্যাল'।

রেইনকোট পরার পর নুরুল হুদাকে কার মতো দেখাচ্ছিল? — মিন্টুর মতো।

'রেইনকোট' গল্পে লেখক কোন ঋতুর কথা বলেছেন? — হেমন্ত।

নুরুল হুদার সঙে আর কাকে মিলিটারি জিপে তোলা হয়? — আব্দুস সাত্তার মৃধাকে।

পাকিস্তানের গাঁয়ের কাটা কি ছিল? — শহীদ মিনার।

প্রিন্সিপাল আফাজ আহমদ মিলিটারির বড় কর্তাদের কাছে কী নিবেদন করেছিলেন? — পাকিস্তান বাঁচাতে সব স্কুল কলেজ হতে শহীদ মিনার উচ্ছেদ করা।

মগ বাজার বাসা হতে মিন্টু কবে চলে গিয়েছিল? — ২৩ জুন।

যুদ্ধ শুরু হবার পর হুদা সাহেব কতবার বাসা পাল্টান? — ৪ বার।

কার শ্বশুর বড় গোছের রাজাকার? — ওয়েলডিং ওয়ার্কশপের মালিকের।

হুদা সাহেবের মেয়ের বয়স কত? — আড়াই বছর।

হুদা সাহেবের ছেলের বয়স কত? — পাঁচ বছর।

স্টেট বাসগুলোর রঙ কেমন? — লাল রঙের।

আসাদ গেটে বাস থামলে সেখান হতে কজন লোক বাসে উঠেছিল? — ৯ জন।

মসজিদের ছাদ থেকে মুয়াজ্জিন সাহেব নিচে পড়ে গিয়ে ছিল কেন? — মিলিটারীদের গুলিতে।

প্রিন্সিপালের চেয়ার দেখতে কেমন ছিল? — সিংহাসন মার্কা।

কলেজের জন্য কতটি আলমারি কেনা হয়? — ১০ টি।

মুক্তিযোদ্ধা তথা মিলিটারীদের ভাষায় মিসক্রিয়েন্টরা কী বেশে কলেজে ঢুকেছিল? — কুলির বেশে।

'বর্ষাকালেই তো জুৎ' কথাটি কবার বলা হয়েছে? — ২ বার।

'ক্রাক ডাউনের রাত' কথাটির মানে কি? — ১৯৭১ সালের ২৫ শে মার্চ কালরাত বুঝানো হয়েছে।

গল্পের নাম 'রেইনকোট' হবার কারণ কী? — মুক্তিযোদ্ধা শ্যালকের রেইনকোট গায়ে দিয়ে ভীতু মানুষ নুরুল হুদার ভেতর সাহস, স্বাধীনচেতা দেশপ্রেম ফুটে ওঠায় এই ব্যঞ্জনাত্নক নাম ব্যবহার করা হয়।

গল্পে মিলিটারী ক্যাম্প কোথায় স্থাপিত হয়েছিল? — কলেজের জিমন্যাসিয়ামে।

প্রিন্সিপালের পিওনের নাম কী? — ইসহাক মিয়া।

মিন্টুর বোনের নাম কী? — আসমা।

উর্দু বিভাগের অধ্যাপকের নাম কী? — আকবর সাজিদ।

ইসহাক মিয়া কখন থেকে বাংলা বলা ছেড়ে দেয়? — এপ্রিল মাসের শুরু থেকে।

জেনারেল স্ট্রেটমেন কথার অর্থ কী? — সাধারণ বিবৃতি।

প্রিন্সিপাল কাকে তোয়াজ করতেন? — মজিদ আকবরকে।

রেইনকোট পরার পর লেখকে কেমন লাগছিলো দেখতে? — শ্যালক মিন্টুর মতো।

কোথায় অর্ধেকের বেশি জায়গা স্বাধীন? — রংপুর, দিনাজপুর।

নুরুল হুদার সাথে আর কাকে মিলিটারীর জিপে তোলা হয়? — আব্দুস সাত্তার মৃধাকে।

কতদিন ধরে বৃষ্টি চলছিল? — টানা ৩ দিন।

নুরুল হুদা কোন বিষয়ের লেকচারার? — রসায়নের।

রেইনকোটের ওপর চাবুকের বাড়ি নুরুল হুদার কাছে স্রেপ উৎপাত মনে হয়েছিল কেন? — মুক্তিযুদ্ধার ব্যবহৃত জিনিস তাকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জীবিত করে। তাই পাকিস্তানি যখন তাকে চাবুক মারতে থাকে তখন তা তার কাছে স্রেপ উৎপাত বলে মনে হতে থাকে।

নুরুল হুদা কেন ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে যায়? — ড্রেসিং টেবিলের সামনে দাড়িয়ে নিজের চেহারার নতুন রূপ দেখে।

পাকিস্তানিদের জন্যে প্রিন্সিপাল দিনরাত কি করত? — দোয়া–দরুদ পড়তো।

'সাবভার্সিভ অ্যাকটিভিটিজ' কথাটির মানে কী? — 'সাবভার্সিভ অ্যাকটিভিজ' কথাটির অর্থ রাষ্ট্র বিরোধী কার্যক্রম।মুক্তিযোদ্ধাদের তৎপরতাকে পাকিস্তান ও তাদের সমর্থকরা ১৯৭১ সালে উক্ত নামে অভিহিত করতো।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় হিটলারের বাহিনী পরাজিত হয়েছিল কাদের কাছে? — রাশিয়ার রুশ বাহিনীর কাছে।
Post a Comment (0)
Previous Post Next Post