আনিসুজ্জামান
আনিসুজ্জামানের প্রকৃত নাম কী? — এ.টি.এম. আনিসুজ্জামান।
তাঁর পিতা–মাতা এবং স্ত্রীর নাম কী? — পিতার নাম : এ.এটি.এম. মোয়াজ্জেম ; মাতার নাম : সৈয়দা খাতুন ; স্ত্রীর নাম : সিদ্দিকা জামান।
তিনি কোথায়, কবে জন্মগ্রহণ করেন? — ১৮ ফেব্রুয়ারি, ১৯৩৭ সালে কলকাতায়।
লেখক আনিসুজ্জামানের প্রকৃত পরিচয় কী? — তিনি মূলত একজন শিক্ষাবিদ ; ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এমিরিটাস প্রফেসর (ডিপার্টমেন্টে বাংলা) এবং তিনি একজন জাতীয় অধ্যাপক।
তিনি কোথায় থেকে ডক্টরেট ডিগ্রি লাভ করেন? — ১৯৬২ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে 'ইংরেজ আমলের বাংলা সাহিত্যে বাঙালি মুসলমানের চিন্তাধারা (১৭৫৭–১৯১৮) শিরোনামে। এই গবেষণাপত্রকে তিনি 'মুসলিম মানস ও বাংলা সাহিত্য' নামে গ্রন্থে প্রকাশ করেন এবং উক্ত গ্রন্থটি ১৯৬৪ সালে প্রকাশিত হয়।
তাঁর রচিত বিখ্যাত কিছু গ্রন্থের নাম উল্লেখ কর। — 'স্বরূপের সন্ধানে' (১৯৭৬) ; 'আঠারো শতকের বাংলা চিঠি' (১৯৮৩) ; 'বাঙালি নারী : সাহিত্যে ও সমাজে' (২০০০) ; এবং 'কাল নিরবধি' (২০০৩) ইত্যাদি সব উল্লেখযোগ্য।
তিনি কী কী পদক ও পুরস্কার লাভ করেন? — তাঁর উল্লেখযোগ্য পদক ও পুরস্কার হলো — বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার (১৯৭০); একুশে পদক (১৯৮৫) ; আনন্দ পুরস্কার (১৯৯৪) ; ভারত সরকার কর্তৃক পদ্মভূষণ (২০১৪) ; স্বাধীনতা পুরস্কার (২০১৫)। রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সম্মানিত ডি.লিট. উপাধি পান ২০১৫ সালে।
'জাদুঘরে কেন যাব'
থেকে গুরুত্বপূর্ণ জিজ্ঞাসা
পাশ্চাত্যদেশে কোনগুলো স্বতন্ত্র বিদ্যায়তনিক বিষয় বা শৃঙ্খলা হিসেবে বিকশিত? — জাদুঘরতত্ত্ব–মিউজিওলজি, মিউজিওগ্রাফি বা মিউজিয়াম স্টাডিজ।
পৃথিবীর বৃহত্তম জাদুঘর কোথায়? — আলেকজান্দ্রিয়ায়।
পৃথিবীর প্রথম জাদুঘর আলেকজান্দ্রিয়া কী কাজে ব্যবহৃত হতো? — এটি ছিল নির্দশন–সংগ্রহশালা ও গ্রন্থাগার। ছিল উদ্ভিদউদ্যান ও উন্মুক্ত চিড়িয়াখানা। তবে সেখানে মূলত দর্শন চর্চা হতো।
আলেকজান্দ্রিয়া গড়ে ওঠার পিছনে কি কারণ আছে বলে মনে করা হয়? — এটি গড়ার পিছনে ২ টি কারণ ভাবা হয়। এক, এটি প্রতিষ্ঠাতার রুচিমাফিক গড়ে ওঠে। দুই, দর্শকরা সেখানে যেত নিজের ইচ্ছে অনুযায়ী বিশেষ বিশেষ অংশে আবার কেউ পুরোটাই ঘুরে বেড়াতো।
জাদুঘর গড়ে ওঠার ভিত্তি কী ছিল? — জগতের সাথে তাল মিলিয়ে প্রাচীন জিনিসের প্রতি মানুষের আগ্রহ–আকর্ষণ বেশি থাকে। সেজন্য ব্যক্তি সম্পন্ন মানুষ কখনো নিজে বা পারিবারিক উদ্যোগে জাদুঘর গড়ে তোলেন এাব প্রদর্শনের জন্য।
পাশ্চাত্যে কখন প্রাচীন জিনিস সংগ্রহ করা শুরু হয়? — ইউরোপীয় রেনেসাঁসের পর থেকে। আবার অনেকে ভাবেন তারও অনেক আগে থেকে।
রাজ–রাজারা কেন প্রাচীন জিনিস সংগ্রহ করতো? — তারা মূলত এসব সংগ্রহ করতো তাদের পরাক্রম, শৌর্য–বীর্য, সম্পদ ও গৌরবগাথার অংশীদার হিসেবে।
যৌথ কিংবা নাগরিক সংস্থান উদ্যোগে কখন প্রাচীন জিনিস সংগ্রহ করা হয় বলে মনে করা হয়? — ষোল শতকের পরে।
ল্যুভ বা ল্যুভর মিউজিয়াম কখন গড়ে ওঠে? — ফরাসি বিপ্লবের পর প্রজাতন্ত্রের সাহায্যে।
ভের্সাই প্রাসাদের দ্বার উন্মোচিত হয় কখন? — ফরাসি বিপ্লবের পর।
লেনিনগ্রাদের রাজপ্রাসাদ গড়ে ওঠে কখন? — রুশ বিপ্লবের পর।
ক্রমবর্ধমান গণতন্ত্রয়াণের ফল হিসেবে চিহ্নিত করা হয় কোনটিকে? — টাওয়ার অব লন্ডনকে।
সতেরো শতকে ব্রিটেনে প্রথম পাবলিক মিউজিয়াম কোথায় গড়ে ওঠে? — অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে।
অ্যাশমোলিয়ান মিউজিয়াম কিভাবে সৃষ্টি হয়? — পিতাপুত্র দুই ট্রাডেসান্ট এবং অ্যাশমোল এই ৩ জনের সংগ্রহে।
ব্রিটিশ মিউজিয়াম কার তত্ত্বাবধানে প্রতিষ্ঠিত হয়? — আঠারো শতকে রাষ্ট্রীয় প্রচেষ্টায়।
জাদুঘরে সংগৃহীত বিষয় বৈচিত্র্যের চিত্র তুলে ধর। — জাদুঘরের বৈচিত্র্য হয় দেখার মতো। এর বৈচিত্র্য একদিকে যেমন সংগ্রহে অন্যদিকে তেমনি গঠনগত এবং প্রশাসনগত। বর্তমান সময়ে জাদুঘর গুলো একক বৈশিষ্ট্য নিয়ে গড়ে ওঠছে। প্রত্নতত্ত্ব ও ইতিহাস, মানববিকাশ ও নৃতত্ত্ব, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, সামরিক ইতিহাস, পরিবহন ব্যবস্থা, কৃষি, উদ্ভিদবিজ্ঞান, পরিবেশ ও নানারকমের শিল্পকলা নিয়ে বিভিন্ন বিভাগ–উপবিভাগ।
জাদুঘরে কোন বিষয় কে লক্ষ করে জিনিস সংগ্রহ করা হয়? — জাদুঘরে সাধারণত যা চমকপ্রদ, যা অনন্য, যা লুপ্তপ্রায়, যা বিস্ময়কর এমন সব বস্তু সংগ্রহ করা হয়।
'জাদু' কোন ভাষার শব্দ? — ফারসি।
জাদুঘর থেকে কী লাভ করতে পারি? — বঙ্গের হাজার হাজার বছরের পুরনো ইতিহাস ও সমৃদ্ধ সংস্কৃতির নমুনা থেকে আমরা আমাদের অর্থাৎ বাঙালির আত্মপরিচয় লাভ করতে পারি।
কোহিনূর দেখতে সবাই কোথায় ভিড় করে? — টাওয়ার অব লন্ডনে।
ব্রিটিশ ভারতীয় মুদ্রার সযত্ন স্থান কোথায় লক্ষ করা যায়? — কুয়েতের জাদুঘরে।
ইউরোপীয় রেনেসাঁস কী? — রেনেশাঁস অর্থে রিবার্থ বা পুর্নজন্ম। অর্থাৎ খ্রিষ্টীয় চৌদ্দ হতে ষোল শতক ধরে ইউরোপে শিল্প–সাহিত্য, জ্ঞানচর্চা ও চিন্তা–চেতনার ক্ষেত্রে নবজাগরণের মাধ্যমে মধ্যযুগ থেকে আধুনিক যুগে উত্তরণই ইউরোপীয় রেনেসাঁস।
ফরাসি বিপ্লব কী? — ইউরোপের প্রথম বুর্জোয়া বিপ্লব। ১৭৮৯ সালের ১৪ জুলাই ফরাসি জনগন সেখানকার কুখ্যাত বাস্তিল দুর্গ ও কারাগার দখল করে নেয় এবং সমস্ত বন্দিকে মুক্তি দেয়। এর মাধ্যমে এই বিপ্লবের সূচনা হয়। এই বিপ্লবে নেতৃত্ব দেয় ধনিক শ্রেণি এবং অত্যাচারিত কৃষকরা ছিল তাদের সহযোগিতা। বিপ্লবের মূল বাণী ছিল : 'মুক্তি, সাম্য, ভ্রাতৃত্ব ও সম্পত্তির পবিত্র অধিকার।' এই বিপ্লবের ফলে সামন্তবাদের উৎপাটন হয়।
রুশ বিপ্লব কী? — ১৯১৭ সালে ৭ নভেম্বর বিপ্লবী নেতা লেনিন রাশিয়ায় সর্বহারার দল বলশেভিক পার্টি সেখানকার জারতন্ত্রকে হটিয়ে ক্ষমতা দখল করে। এই বিপ্লবের ফলে রাশিয়ায় সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়।
টাওয়ার অব লন্ডন কী? — লন্ডনের টেমস নদী উত্তর তীররবর্তী রাজকীয় দুর্গ। এর মূল অংশে আছে সাদা পাথরের গম্বুজ। এটি ১০৭৮ খ্রি. নির্মিত। এটি একসময় রাজজীয় ভবন ও কারাগার হিসেবে ব্যবহৃত হতো। তবে বর্তমানে এটি অস্ত্রশালা এবং জাদুঘর হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে।
ব্রিটিশ মিউজিয়াম সম্পর্কে লিখ? — প্রত্নতত্ত্ব ও পুরাকীর্তি সংক্রান্ত জাদুঘর। এটি ব্রিটেনের জাতীয় জাদুঘর। প্রতিষ্ঠাতা কাল ১৭৫৩।
হার্মিটেজ কী? — সন্ন্যাসীর নির্জন আশ্রম।
বাংলাদেশের জাতীয় জাদুঘর সম্পর্কে লিখ। — বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় জাদুঘর এটি। এখানে আমাদের দেশের ইতিহাস, প্রত্নতত্ত্ব, নৃতত্ত্ব, শিল্পকলা ও নানারকম প্রাকৃতিক নিদর্শন আছে। এটি নিদর্শন সংগ্রহ, সংরক্ষণ, প্রদর্শন ও গবেষণার কাজে ব্যবহৃত হয়। এটি ঢাকায় শাহবাগে অবস্থিত।
বলধা গার্ডেন কোথায় ও কেন খ্যাত? — ঢাকার ওয়ারিতে এর অবস্থান। এটা একাধারে উদ্ভিদ উদ্যান ও জাদুঘর।এখানে মূলত অনেক প্রজাতির দেশি বিদেশী গাছপালার আকর্ষণীয় সংগ্রহ রয়েছে।