৮ম শ্রেণি : এ্যাসাইনমেন্ট : কৃষি শিক্ষা : ৩য় সপ্তাহ
এ্যাসাইনমেন্ট বা নির্ধারিত কাজের ক্রম :
অ্যাসাইনমেন্ট বা নির্ধারিত কাজ - ১
এ্যাসাইনমেন্ট বা নির্ধারিত কাজ
রুমির বাবা একজন কৃষি বিজ্ঞানী। তিনি মিষ্টি ও উচ্চফলনশীল আমের একটি জাত উদ্ভাবন করেন যা বারি-৪ নামে মাঠ পর্যায়ে সফলভাবে উৎপাদিত হচ্ছে। গত ১৬ই ডিসেম্বর ২০২০ সালে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর এই অবদানের জন্য তাঁকে রাষ্ট্রপতি পদক প্রদান করে সম্মানিত করেন। রুমির বাবার এমন সম্মান প্রাপ্তির পিছনে নিম্নলিখিত বিষয়গুলো তার মনে যে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে সে ব্যাপারে তোমার সুচিন্তিত মতামত উল্লেখ কর-
১. ধান, পাট, গম, আখ, চাষযোগ্য কৈ মাছ, মিষ্টি জাতের আম, মাল্টা ইত্যাদি উদ্ভাবনে কাদের নিরলস পরিশ্রম ও গবেষণায় অবদান রয়েছে?
২. কোন কোন প্রতিষ্ঠান গবেষণার মাধ্যমে এসব নতুন জাত উদ্ভাবন করেছেন?
৩. ধান গবেষণা প্রতিষ্ঠান (BRRI) থেকে ধানের কোন কোন জাত উদ্ভাবন করেছেন?
৪. কৃষি বিজ্ঞানীরা ধান ছাড়াও অন্যান্য কি কি জাত উদ্ভাবন করেছেন-যা কৃষকেরা মাঠে চাষাবাদ করে বাংলাদেশের অর্থনীতিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন?
৫. এ সমস্ত কৃষিজাত দ্রব্য উৎপাদনের মাধ্যমে মানুষের কোন ধরনের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে?
৮ম শ্রেণির ৩য় সাপ্তাহের অ্যাসাইনমেন্ট-এর কৃষি শিক্ষা প্রশ্ন দেয়া হলো :
[ ১ ]
বর্তমানে কৃষির অবদান ব্যাপক এই সভ্যতার উন্নয়নে। কৃষি বিজ্ঞানীরা প্রতিনিয়ত সহজ ও সুলভ মূল্যে কীভাবে কৃষি পন্য উৎপাদন করা যায় তা নিয়েই ব্যস্ত আছে।
ধান, গম, পাট, আঁখ চাষ যোগ্য কৈ মাছ, মিষ্টি জাতের আম মাল্টা ইত্যাদি উৎপাদনে কৃষি বিজ্ঞানীদের পরিশ্রম ও গবেষণা ব্যাপক। প্রতিনিয়ত তারা নতুন নতুন বিষয় কৃষির সাথে যুক্ত করছে। বর্তমানে কৃষির আধুনিকায়নে কৃষি বিজ্ঞানীদের অবদান ব্যাপক।
[ ২ ]
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর বাংলাদেশকে দুভিক্ষ গ্রাস করে। এ দুর্বিষহ অবস্থার মাঝে ও ব্রিটিশ সরকার এক চরম সিদ্ধান্তের ফলে কৃষি ইন্সটিটিউট চালু হয় ঢাকায় এবং কুমিল্লায়। যেখানে আলাদা করে কৃষি অনুষদ বিভাগ চালু করা হয়। ১৯৬১ সালে পাকিস্তানি আমলে একটি কৃষি বিদ্যালয় স্থঅপন করা হয। এদের নির্দেশনায় তৃণমূল পর্যায়ে কাজ করার দক্ষ মাঠ কর্মী তৈরি করতে কিছু কৃষি সম্প্রসারণ ট্রেনিং ইন্সটিটিউট ও পশু চিকিৎসা ট্রেনিং ইন্সটিটিউট চালু করা হয়। এর পর থেকে গাজীপুর কৃষি গবেষণা ও ধান গবেষণা ইন্সটিটিউট স্থাপন করা হয়। সে থেকে সকল জেলায় এসব প্রতিষ্ঠান ছড়িয়ে পরে। যা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে কৃষির আয় বৃদ্ধি ও গ্রামীণ জীবনের বিস্তারে।
[ ৩ ]
ধান গবেষণা প্রতিষ্ঠান BRRI থেকে ধানের বিভিন্ন জাতের উদ্ভাবন করেছেন। এখন পর্যন্ত ১০৬টি ভিন্ন জাতের ধান উদ্ভাবন করেছে। তার মধ্যে ৯৯টি ইনব্রিড ও ৭টি হাইব্রিড।
তার মধ্যে ৪৬টি জাত বোরো মৌসুমের জন্য, ২৬টি জাত বোনা এবং রোপা আউশ মৌসুমের উপযোগী। ৪৬টি জাত রোপা আমন, ১২টি জাত বোরো ও আউশ উভয় মৌসুম। ১টি জাত বোরো, আউশ এবং রোপা আমন মৌসুম আর শেষ একটি জাত আমন মৌসুম উপযোগী।
[ ৪ ]
কৃষি বিজ্ঞানীরা উচ্চফলনশীল ধান ছাড়া ও নানা ধরনের ফুল, ফল, শাকসবজি, মুরগি, গরু, মাছ ও বৃক্ষ বিদেশ থেকে এনে কৃষিতে সংযোজন করেছে। এগুলোর সাথে সংকরায়ণ করে দেশয়ি পরিবেশ সহনীয় নতুন জাত উদ্ভাবন করছেন। যা দেশকে কৃষির সাথে এগিয়ে নিতে সহায়তা করে। ফলে বাড়ছে উৎপাদনশীলতা। বর্তমানে মাছ, মুরগি ডিম উৎপাদন শিল্পের পর্যায়ে পৌঁছে গেছে। কৃষি উৎপাদন গ্রামীণ জীবনে পরিবর্তন এনেছে। শিক্ষাও দক্ষতা অর্জনের চাহিদা গ্রামীণ জীবনে দ্রুততার সাথে বেড়ে চলছে।
[৫ ]
এ সমস্ত কৃষিজাত দ্রব্য উৎপাদনের মাধ্যমে মানুষের আত্মনির্ভরশীল হওয়ার মতো কর্মসংস্থান সৃষ্টি হচ্ছে তাছাড়া যারা অর্থের অভাবে কৃষিতে ব্যয় করতে পারে না তার অন্যদের অধীনে থেকে কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করছে।
একটি ফসল রোপনের আগ মূহূর্ত হতে সে ফসল বাজার জাতকরণ অবধি কিছু মানুষের প্রয়োজন পড়ে একাকি সুষ্ঠভাবে কাজ সম্পন্ন হয় না তাই বলা যায় সে কৃষি আত্মকর্মসংস্থানের পাশাপাশি অন্যদেরও কাজ শেখার এবং অর্থ উপার্জনের পথ সুগম করে।
আরো দেখুন :
৪র্থ সপ্তাহের নমুনা সমাধান :
৩য় সপ্তাহের অন্যান্য বিষয়ের নমুনা সমাধান :