ব্যাকরণ : কারক ও বিভক্তি

কারক ও বিভক্তি

কারক অর্থ কি?

'কারক' শব্দটির অর্থ — যা ক্রিয়া সম্পাদন করে।

কারক কাকে বলে?

বাক্যস্থিত ক্রিয়াপদের সাথে নামপদের যে সম্পর্ক, তাকে কারক বলে।

কারক কত প্রকার ও কি কি?

কারক ছয় প্রকারের হয়ে থাকে। যথা:
১. কর্তৃকারক
২. কর্মকারক
৩. করণ কারক
৪. সম্প্রদান কারক
৫. অপাদান কারক
৬. অধিকরণ কারক

কারক নির্ণয় করতে যে প্রশ্ন করা যায়


কারক ক্রিয়ার সঙ্গে নির্দিষ্ট পদের (সাধারণত নিচে দাগ দেওয়া থাকে) সম্পর্ক বোঝায়। তাই বাক্যস্থিত ক্রিয়াপদকে যেভাবে প্রশ্ন করলে জানা যায় সেটি কোন কারণ —

(১) কে / কারা দিয়ে প্রশ্নের উত্তরে কর্তৃকারক

(২) কি / কাকে দিয়ে প্রশ্নের উত্তরে কর্মকারক

(৩) কীসে / কীসের সাহায্যে / কার সাহায্যে দিয়ে প্রশ্ন উত্তরে করণকারক

(৪) কার জন্য দিয়ে প্রশ্নের উত্তরে (যদি স্বত্ব ত্যাগ করে দান করা বুঝায়) সম্প্রদান কারক

(৫) কোথা থেকে / কী হতে / কীসের হতে দিয়ে প্রশ্নের উত্তরে অথবা ভয়–ডর–শঙ্কা–ভীতি প্রকাশ পেলে অপাদান কারক

(৬) কোথায় / কীসে / কখন দিয়ে প্রশ্নের উত্তরে অর্থাৎ স্থান–কাল–পাত্র–সময়–বিষয় বোঝালে অধিকরণ কারক হবে।

বিভক্তি

বিভক্তি কাকে বলে?

শব্দকে বাক্যে ব্যবহার উপযোগী পদে রূপান্তরিত করার জন্যে শব্দের সঙ্গে যা যোগ করতে হয় তাকে বিভক্তি বলে। যেমন: মাকে > এখানে 'কে' বিভক্তি।

খাঁটি বাংলা শব্দে বিভক্তিগুলো কি কি?

শূন্য বা অ, এ, (য়), তে (এ), কে (এ), রে, র (এরা)।

বাংলায় বিভক্তি কতটি?

বাংলায় বিভক্তি মোট সাতটি৷ যথা:

১) প্রথমা বিভক্তি → ০, অ, রা, এরা, গুলি, সমূহ

২) দ্বিতীয়া বিভক্তি → কে, রে, য়ে, দের, দিগকে,

৩) তৃতীয়া বিভক্তি → দ্বারা, দিয়ে, কর্তৃক, দিগের দ্বারা, দের দ্বারা

৪) চতুর্থী বিভক্তি → দ্বিতীয়ার মতো

৫) পঞ্চমী বিভক্তি → হতে, থেকে, চেয়ে, দিগ হতে, দের থেকে

৬) ষষ্ঠী বিভক্তি → র, এর, দিগের, দের

৭) সপ্তমী বিভক্তি → এ, য়, তে, দিগে, দিগেতে ইত্যাদি।

বিভক্তি বোধক চিহ্নের মধ্যে যেগুলো কারক–অব্যয় উভয়ই: দ্বারা, দিয়া, কর্তৃক, হইতে, থেকে এই ৫ টি হল কারক + অব্যয়।

কোন কারক দুটিতে কোনো পৃথক বিভক্তি নেই?

করণ ও অপাদান কারকে কোনো পৃথক বিভক্তি নেই।

শূন্য বিভক্তি কাকে বলে?

বাক্যের কোনো পদে যখন কোনো বিভক্তি দৃশ্যমান হয় না, সেই আপাত বিভক্তিহীন পদকে তখন শূন্য বিভক্তি বলে। যেমন:
ছেলেটি সকালের চা নিজে করে।
এই বাক্যে চা–এর সাথে শূন্য বিভক্তি আছে। অর্থাৎ বিভক্তি স্পষ্ট না হলে তখন শূন্য বিভক্তি আছে বলে মনে করা হয়।

বিভক্তি যোগের নিয়ম

অপ্রাণী বা ইতর প্রাণিবাচক শব্দের বহুবচনে 'রা' যুক্ত হয়না, গুলি, গুলো যুক্ত হয়। যেমন— পাথরগুলো, গরুগুলি ইত্যাদি।

অপ্রাণিবাচক শব্দের উত্তর 'কে' বা 'রে' বিভক্তি হয় না, শূন্য বিভক্তি হয়। যেমন— কলম দাও।

স্বরান্ত শব্দের উত্তর 'এ' বিভক্তির রূপ হয়— 'য়' বা 'য়ে'। 'এ' স্থানে 'তে' বিভক্তিও যুক্ত হতে পারে। যেমন: মা + এ = মায়ে, ঘোড়া + এ = ঘোড়ায়, পানি + তে = পানিতে।

Related Links
Post a Comment (0)
Previous Post Next Post