কর্তৃকারক
কর্তৃকারক কাকে বলে?
বাক্যস্থিত যে বিশেষ্য বা সর্বনাম পদ ক্রিয়া সম্পন্ন করে তাকে ক্রিয়ার কর্তা বা
কর্তৃকারক বলে।
ক্রিয়াকে 'কে' বা 'কারা' দ্বারা প্রশ্ন করলে যে উত্তর পাওয়া যায় তাই কর্তৃকারক।
যেমন:
খোকা বই পড়ে।
(কে পড়ে? খোকা— কর্তৃকারক)
মেয়েরা ফুল তোলে।
(কারা তোলে? মেয়েরা— কর্তৃকারক)
কর্তৃকারক কত প্রকার ও কি কি?
ক্রিয়া সম্পাদনের বৈচিত্র্য অনুসারে কর্তৃকারক চার প্রকার। যথা:
১) মুখ্য
কর্তা২) প্রযোজক কর্তা
৩) প্রযোজ্য কর্তা
৪) ব্যতিহার কর্তা
১) মুখ্যকর্তা : যে নিজে নিজেই ক্রিয়া সম্পাদন করে সে মুখ্য কর্তা। যেমন:
ছেলেরা ফুটবল খেলছে।
২) প্রযোজক কর্তা : মূল কর্তা যখন অন্য কাউকে কোনো কাজে নিয়োজিত করে
তা সম্পন্ন করে তা করায়, তখন তাকে প্রযোজক কর্তা বলে। যেমন:
শিক্ষক ছাত্রদের ব্যাকরণ পড়াচ্ছেন।
৩) প্রযোজ্য কর্তা : মূল কর্তার করণীয় কার্য যাকে দিয়ে সম্পাদিত হয়
তাকে প্রযোজ্য কর্তা বলে।যেমন:
শিক্ষক ছাত্রদের ব্যাকরণ পড়াচ্ছেন।
৪) ব্যতিহার কর্তা : কোনো বাক্যে যে দুটো কর্তা একত্রে একজাতীয় ক্রিয়া
সম্পাদন করে, তাদের ব্যতিহার কর্তা বলে। যেমন:
বাঘে–মহিষে এক ঘাটে জল খায়।
রাজায়–রাজায় লড়াই, উলুখাগড়ায় প্রাণান্ত।
বাক্যের বাচ্য এবং প্রকাশভঙ্গি অনুসারে কর্তৃকারক আবার ৩ ধরনের হয়ে থাকে। যথা:
ক) কর্মবাচ্যের কর : কর্মপদের প্রাধান্যসূচক বাক্যে। যেমন —
পুলিশ দ্বারা চোর ধৃত হয়েছে।
খ) ভাববাচ্যের কর্তা : ক্রিয়ার প্রাধান্যসূচক বাক্যে। যেমন —
আমার যাওয়া হবে না।
গ) কর্ম–কর্তৃবাচ্যের কর্তা : বাক্যে কর্মপদই কর্তৃস্থানীয়। যেমন —
বাঁশি বাজে।
কলমটা লেখে ভালো।
কর্তৃকারকে বিভিন্ন বিভক্তি
প্রথমা / শূন্য বিভক্তি : হামিদ বই পড়ে।
দ্বিতীয়া বা কে বিভক্তি : বশিরকে যেতে হবে।
তৃতীয়া বা দ্বারা বিভক্তি : ফেরদৌসী কর্তৃক শাহনামা রচিত হয়েছে।
ষষ্ঠী বা র বিভক্তি : আমার যাওয়া হয়নি।
সপ্তমী বা এ বিভক্তি : গাঁয়ে মানে না, আপনি মোড়ল। পাগলে কী না বলে, ছাগলে কী না খায়। বাঘে– মহিষে খানা একঘাটে খাবে না।
য় — বিভক্তি : ঘোড়ায় গাড়ি টানে।
তে — বিভক্তি : গরুতে দুধ দেয়। বুলবুলিতে ধান খেয়েছে খাজনা দিব কিসে।