মন খারাপের ওষুধ

মন খারাপ?
কিন্তু কেন?
অনেকগুলো কারণ আছে।
যেমন..................


আপনার সাথে কখনো এমন হয়েছে— আপনি যাকে মন থেকে খুব করে চাচ্ছেন বিপরীতে সে আপনাকে খুব করে দূরে ঠেলতে চাচ্ছে। আবার ধরুন, আপনার ভালো মানুষটি না–চাইতেও বারবার তার কাছেই খারাপ মানুষটি হয়ে যাচ্ছে।

অনেক খারাপ লাগে তখন যখন নিজেকে অবহেলায় দেখতে পান!সাথে যদি একাকিত্ব জুড়ে যায় তাহলে আপনাকে পিনিকে ফেলতে স্রেফ কয়েকটা মুহূর্তে দরকার। কথা হল কেন এমন হয়?

নিরাপরাধ মানুষটার যখন হাজারটা শুদ্ধ কারণের বিপরীতে একটা বদগুণ তার সকল শুদ্ধতা অশুদ্ধ করে দেয় কিংবা যার কাছে সবচেয়ে ভালোর এক্সপেকটেশন করেছেন অথচ তার কাছেই সবচেয়ে খারাপের পাত্র বনে গেছেন। কি করবেন এমতাবস্থায়?

মাঝেমধ্যে সবারই কষ্ট লাগে যখন দেখে চারপাশে এতো ব্যস্তটার মাঝে নিজের শূন্যতা! তখন নিজের একাকিত্বটা তাকেও কষ্টের সাগরে সাঁতরায়!খুব করে অবচেতন মন তখন চেতন মনের নিজেকে রিড করার মতো আপনজন খোঁজে। আমাদের পৃথিবীটা বড্ড নিষ্ঠুর। এখানে স্বার্থছাড়া কেউ আসেনা। আবার স্বার্থ দিলেও সে আসেনা যাকে আপনি চান। হাজার জনকে নিমিষে মোটিভেট করা ছেলেটাও একটা সময় নিজেকে অসহায়ত্বে আবিষ্কার করে। দুনিয়ার যাবতীয় অশান্তি বিশৃঙ্খলা কথার ম্যাজিকে শান্ত–শৃঙ্খল করতে পারলেও পারেনা নিজেকে মোটিভেট দেওয়ার ম্যাজিক!কিন্তু কেন এমন হয়?

দু'একটি কারণ এবার বলবো। প্রথমত সুখী হতে হলে আমাদের দুটো রূপ বা প্রকারভেদ থাকতে হবে। একটি যান্ত্রিক রূপ অপরটি সরল সোজা স্রষ্টার দেওয়া আপনার ভালো মানুষটি। জায়গা আর সময়ভেদে আপনাকে আপনার রূপটি ব্যবহার করতে পারলে–ই বাজিমাত। পৃথিবীতে সবাই আপনারজন নয়। সুতরাং এক্সট্রা বেনিফিট সবাইকে নয়। যে পর সে পরই থাকে যতোই আপনার কাছে আসুক না কেন  পৃথিবীর সকল সম্পর্ক একটা জায়গায় দাঁড়িয়ে যায়। থেমে যায় জীবন। স্থবির হয় পথচলা। কাজেই বুদ্ধিমানের মতো আপনার প্রয়োজন সেরে নিতে যতটুকু না করলে হয়না অতটা করুন।

আপনার পৃথিবীতে আসার কারণ যদি বাবা এবং মা হয়ে থাকে তবে কেন ছেড়ে যাবার কারণ অন্য কেউ হবে। আপনাকে যারা ভালোবেসে পৃথিবীতে এনেছে তারাই আপনার উপর বেশি অধিকার রাখে। তাদের মূল্য সবার আগে দিন। আপনার সকল ভালো-মন্দ তাদের সাথে শেয়ার করুন। তাদের হাতে আপনার ভালোর চেয়ে খারাপ হবেনা এটা নিয়ে শতভাগ নিশ্চিত থাকুন। বোকার মতো মার কথা শুনে বউকে এবং বউয়ের কথা শুনে মাকে বিচার করতে যাবেন না। দুটো নিয়েই আপনাকে থাকতে হবে। সুতরাং এটা আস্তে স্কিপ করে চলুন।

পরিবারের ভেতর একজন বন্ধু বানান। এক্ষেত্রে বাবা–মা কিংবা আপনার রুচিমত কাউকে বেছে নিন। পরিবারে বন্ধু থাকার উপকারিতা অনেক। আপনার ক্ষতিগ্রস্ত হবার সম্ভাবনা এক্ষেত্রে জিরোর কাছাকাছি। জীবনে সবকিছু আবেগ দিয়ে বিচার করবেন না। আপনার যেখানে ভালোর সম্ভাবনা নেই সেখানে নিজেকে কম্প্রোমাইজ করতে যাবেন না।

পৃথিবীতে যখন এসেই পড়েছেন তখন এমনি করে চলে যাবেন কেন। কোনো একটা কারণ রেখে যান আপনার উপস্থিতি জানান দিতে। জন্ম–মৃত্যু এই দুইয়ের কিছু কাজ করে যান। আপনার জন্ম তার পিছনে কোনো না কোনো কারণ আছে। জন্ম থেকে মৃত্যু অবধি আপনি পৃথিবীতে যে যুদ্ধে প্রতিনিয়ত সামিল হচ্ছেন এই যুদ্ধই নির্ধারিত করে দিবে আপনার অবস্থান। তাই নিজেকে সৎ রাখুন, বুকে সাহস রাখুন এবং দৃঢ় মনোবল নিয়ে লড়াই করে যান। ইনশাআল্লাহ আপনি জিতবেন। আপনার নিজের লক্ষ্য এবং উদ্দেশ্য কে বাস্তবায়ন করার সময় এটা। এখানে আপনার কোনোভাবে হার মানা যাবেনা। তবেই আপনি জীবন যুদ্ধে জয়ী হবেন।

আমাদের চারপাশে ভালোবাসা–প্রেম–বিরহ এসব একেকটা ট্রেন্ড। এগুলো এক ধরনের ফোবিয়া।  এগুলোতে আপনার নিজের জ্ঞান বাদ দিয়ে পৃথিবীর সকল জ্ঞান আপনাকে দিলেও আপনি বিচারে অবুঝ। তাই এসব সেন্সিটিভ বিষয়গুলোর থোড়াই কেয়ার করতে শিখে ফেলুন। আপনার এগুলো করার অনেক সময় আসবে। এগুলো কোনো বয়সের বন্ধনে আবদ্ধ নয়। কিন্তু আপনার নিজের জীবন আপনার ক্যারিয়ার এগুলো গড়ে তোলার একটা উপযুক্ত বয়স আছে। তাই যেটার জন্যে যেসময় সেইসময়েই সেটা করা বুদ্ধিমানের কাজ। আমাদের সমাজে একজন পুরুষের মানদণ্ড ধরা হয় তারা অর্থকে। সুতরাং সময় থাকতে নিজের একটা স্থায়ী পরিচয় বানিয়ে ফেলুন।

জীবনের কোনো অবস্থাতেই এমন কোনো কাজ করবেন না যেটায় জীবন বিপন্ন হয়ে পড়ে। আমাদের এই পৃথিবী একটা নাট্যমঞ্চ। এখানে প্রতিনিয়ত অভিনয়ের খেলা চলে। দিনশেষে সেরা অভিনেতা জীবনযুদ্ধে জিতে যায়....

3 Comments

Post a Comment
Previous Post Next Post