আবু জাফর ওবায়দুল্লাহ
জন্ম : ১৯৩৪ সালের ৪ঠা ফেব্রুয়ারি, বরিশালের গির্জামহল্লায়।
পুরো নাম : আবু জাফর মুহাম্মদ ওবায়দুল্লাহ খান (ডাকনাম— সেন্টু)।
কর্মজীবন : বাংলাদেশ সরকারের প্রাক্তন সচিব এবং স্বৈর শাসক হুসেইন মুহম্মদ
এরশাদের একজন মন্ত্রী এবং এফএও—র অতিরিক্ত পরিচালক। এসবের পরেও তাঁর আসল পরিচয়
তিনি একজন কবি।
তাঁর মৃত্যু : ২০০১ সালে।
তাঁর প্রথম প্রকাশিত গ্রন্থের নাম ও গ্রন্থের প্রকৃতি? —
সাতনরী হারন(১৯৫৫ সালে)। এটি একধরনের কাব্যগ্রন্থ।
তাঁর উল্লেখযোগ্য একটি কবিতা হলো —
আমি কিংবদন্তীরন কথা বলছি ও কোন এক মাকে (কুমড়ো ফুলে ফুলে নুয়ে পড়েছে
লতাটা)।
আবু জাফর ওবায়দুল্লাহর কাব্যগ্রন্থসমূহের পরিচয় দাও। —
কখনো রং কখনো সুর (১৯৭০); কমলের চোখ (১৯৭৪); আমি কিংবদন্তীর কথা বলছি (১৯৮১)
ইত্যাদি।
‘আমি কিংবদন্তীর কথা বলছি’ কাব্যগ্রন্থের সংক্ষিপ্ত পরিচয় দাও। —
আবু জাফর ওবায়দুল্লাহর এই গ্রন্থটি ১৯৮১ সালে প্রকাশিত হয়। এটিতে মোট
উনচল্লিশটি কবিতা আছে। বাঙালি জাতিসত্ত্বার মৃত্তিকামূলে শিকড় সঞ্চার করে এ
কাব্যগ্রন্থে কবি ঐক্যবদ্ধ চেতনায় সাহসী মানুষের সম্ভাবনার ছবি এঁকেছেন। ' আমি
কিংবদন্তীর কথা বলছি ' কাব্যগ্রন্থের নাম কবিতায় আছে— “আমি কিংবদন্তীর কথা
বলছি/ আমি আমার পূর্ব পুরুষের কথা বলছি/ তার বুকে রক্তজবার মতো ক্ষত ছিল।”
‘আমি কিংবদন্তীর কথা বলছি’
গ্রন্থ থেকে গুরুত্বপূর্ণ জিজ্ঞাসা
শ্বাপদ শব্দের অর্থ কী? — হিংস্র মাংসাশী শিকারী জন্তু।
কিংবদন্তী অর্থের তাৎপর্য লিখ। —
জনশ্রুতি লোকপরম্পরায় শ্রুত ও কথিত বিষয় যা একটি জাতির ঐতিহ্যের পরিচয় বহন
করে। (মনে রাখুন— কিংবদন্তী এবং কিংবদন্তি দুটোই শুদ্ধ বানান।)
প্রবহমান নদী কাকে ভাসিয়ে রাখে? — যে সাঁতার জানে না।
কবিতার মুক্ত শব্দগুলো কোথা হতে উচ্চারিত হয়ে থাকে? — জিহ্বা হতে।
কার পিঠে রক্তজবার মতো ক্ষত রয়েছে? — কবির পূর্বপুরুষের পিঠে।
কে সন্তানের জন্য মরতে পারে না? —
যে কবিতা শুনতে জানে না, সে সন্তানের জন্য মরতে জানে না।
কর্ষিত জমির কবিতা কোনটি? — প্রতিটি শস্যদানা কবিতা।
কে আজন্ম ক্রীতদাস রয়ে যাবে? — যে কবিতা শুনতে জানে না।
কবি কার মৃত্যুর কথা বলেছেন? — গর্ভবতী বোনের মৃত্যুর কথা।
কবির পূর্বপুরুষদের করতলে কী ছিল? — পলিমাটির সৌরভ।
যে কবিতা শুনতে জানে না, সে কিসের আর্তনাদ শুনবে? — ঝড়ের।
রক্তজবার মতো প্রতিরোধের উচ্চারণকে কী বলে? — কবিতা।
ভালোবাসা দিলে মা মরে যায়— কথাটির অর্থ বুঝিয়ে লিখ। —
দেশমাতার প্রতি ভালোবাসা জাগ্রত হলে জন্মদাত্রী মা প্রায়শ তুচ্ছ হয়ে যায়।
যুদ্ধ আসে ভালোবেসে— এর অর্থ কী? —
যখন একজন মানুষ তার অধিকার হতে বঞ্চিত হতে থাকে, হতে থাকে নিপীড়িত ও
নির্যাতিত। মূলত তখন আর যুদ্ধের বিকল্প থাকে না। তখন যুদ্ধ নিজেই যেন ভালোবেসে
আবির্ভূত হয়।