↬ জাতীয় উন্নয়নে শ্রমের গুরুত্ব
ভূমিকা : অলসতার গহিন পাথরে গা ভাসিয়ে না দিয়ে কোনো কর্মে নিজেকে নিয়োজিত
রাখার নামই শ্রম। প্রাণী মাত্রই কোনো কাজ করে জীবন ধারণ করে। এজন্য মানুষকে কঠোর
পরিশ্রম করতে হয়। প্রাচীনকাল থেকে মানুষ কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে নিজের অস্তিত্বকে
টিকিয়ে রাখার প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছে। অণু থেকে অট্টালিকা পর্যন্ত, বিশ্বসভ্যতার
প্রতিটি সৃষ্টির মূলে রয়েছে শ্রম। জন্ম থেকে শুরু করে মৃত্যু পর্যন্ত এই পৃথিবীর
সব কাজে— খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, চিকিৎসা এবং শিক্ষা যা কিছু আছে সবই অর্জিত
হয়েছে শ্রমের দ্বারা। পবিত্র কুরআনে ঘোষিত হয়েছে —
“মানুষের জন্যে শ্রম ব্যতিরেকে কিছুই নেই।”
জ্ঞানীর জ্ঞান, বিজ্ঞানের অত্যাশ্চর্য আবিষ্কার, ধর্মসাধকের আত্মোপলদ্ধি,
ধনীর ধনৈশ্বর্য, যোদ্ধার যুদ্ধে জয়লাভ সবকিছুই শ্রমলব্ধ। সুতরাং পরিশ্রমের
কোনো বিকল্প নেই। এবং যথার্থ পরিশ্রমী ব্যক্তি তার জীবনে সৌভাগ্য বয়ে আনতে
পারে।তাই কবির ভাষায় বলতে হয়—
“কৃষকের পুত্র কিংবা রাজার কুমার
সবারই রয়েছে কাজ এ বিশ্ব মাঝার।”
শ্রমের গুরুত্ব : মানুষ নিজেই তার নিজের ভাগ্য নির্মাতা। আর এই
ভাগ্যকে নির্মাণ করতে হয় নিরলস শ্রম দিয়ে। কর্মই সাফল্যের চাবিকাঠি। পরিশ্রমই
মানুষের যথার্থ শাণিত হাতিয়ার। জীবনের কোনো কাজের ক্ষেত্রই কুসুমাস্তীর্ণ নয়।
সর্বত্রই কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে জীবনযুদ্ধে নিয়োজিত থাকতে হয়। তাই, জগৎ
কর্মশালা এবং জীবমাত্রই পরিশ্রমের ক্ষেত্র। মানবজীবনে শ্রমের প্রয়োজন
অপরিসীম। পরিশ্রম ব্যতিত জীবনের উন্নতি কল্পনাতীত। জীবনে আত্নপ্রতিষ্ঠা করতে
হলে এবং যথাযোগ্য মর্যাদায় প্রতিষ্ঠিত হতে হলে মানুষকে নিরলস পরিশ্রম করতে
হয়। তাই শ্রমেই সফলতা, শ্রমেই সুখ, শ্রমই জীবন। আমরা সবাই শ্রমসৈনিক। এজন্য
বিজ্ঞানী আইনস্টাইন বলেছেন —
‘ ..... a hard-working street–cleaner is a better man than a lazy
scholar.’
কর্মের সুফল : সংসার নামক কর্মক্ষেত্রে নানা পেশার মানুষ নানা কাজে
ব্যস্ত। উদয়াস্ত শ্রম বিলিয়ে মানুষ ঘরে ফেরে ঘর্মাক্ত হয়ে। এ অপমানের নয়,
গৌরবের। এ দুঃখবোধের নয়, পরম প্রাপ্তির। কবির ভাষায় —
“চাষি খেতে চালাইছে হাল,
তাঁতি বসে তাঁত বোনে, জেলে ফেলে জাল,
বহুদূর প্রসারিত এদের বিচিত্র কর্মভার।”
কর্মই কর্মীর জীবনের শ্রেষ্ঠ সাধনা। কর্মের মধ্যেই তার ব্যক্তিসত্তার পূর্ণ
বিকাশ ঘটে। উদ্যোগী পুরুষ সিংহই নির্মাণ করে সুখ–সভ্যতা। পরিশ্রমই খুলে দেয়
জাতীয় উন্নয়ন ও অগ্রগতির সিংহদ্বার।
শ্রমের প্রকারভেদ : গায়ে গতরে খাটা শ্রম আর মানসিক শ্রম— দুটোরই গুরুত্ব রয়েছে। আমাদের মানব
সমাজে শ্রম দুই ভাগে বিভক্ত। যথা : কায়িক শ্রম এবং মানসিক শ্রম। যে শ্রমে
দেহের হাত, পা এবং অন্যান্য অঙ্গ–প্রত্যঙ্গ চালনা করতে হয়, তাকে দৈহিক বা
কায়িক শ্রম বলে। আর যে কাজে মস্তিষ্ক চালনা করতে হয়, তাকে মানসিক শ্রম বলে।
দৈহিক শ্রম এবং মানসিক শ্রম একে অপরের পরিপূরক। একটিকে বাদ দিয়ে অন্যটির
কথা চিন্তা করা যায় না। একটি জাতিকে এগিয়ে নিতে হলে অবশ্যই দুধরনের সমন্বয়
প্রয়োজন। কেননা কায়িক শ্রমকে প্রাধান্য না দিলে তৃণমূল পর্যায়ে দেশের
ভিত্তি সুদৃঢ় করা সম্ভব নয়। অন্যদিকে মানসিক শ্রমকে প্রাধান্য না দিলে একটি
দেশের তৃণমূল পর্যায়ের ভিত সুদৃঢ় থাকলেও প্রকৃতপক্ষে সামাজিক, রাজনৈতিক,
অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও নৈতিক মূল্যবোধকে সুদৃঢ় করা সম্ভব নয়। ফলে সে
জাতির বা দেশের বিপর্যয় অনিবার্য। মোট কথা এ দুটি শ্রমের একটিকেও অবহেলা
করলে কেউ উন্নতির শিখরে উপনীত হতে পারে না।
শ্রম ও সভ্যতা : যুগে যুগে মানবসভ্যতার যে ক্রমবিস্তার, শ্রীবৃদ্ধি,
তা লক্ষ–কোটি মানুষের তিল তিল শ্রমেই সম্ভব হয়েছে। একুশ শতকের সভ্যতার চরম
উন্নতির দিকে তাকিয়ে আমরা মাঝে মাঝে বিস্ময়ে হতবাক হয়ে যাই। সভ্যতার এ চরম
বিকাশের মূলে রয়েছে যুগে যুগান্তরের লক্ষ–কোটি মানুষের অফুরন্ত শ্রম। বহু
মানব তাদের বহু দিনের শ্রম তিলে তিলে দান করে গড়ে তুলেছে সভ্যতার তিলোত্তমা
মূর্তি। তাদের নাম ইতিহাসে লেখা হয় নি। তারা পাহাড় ভেঙে পথ প্রস্তুত করেছে,
সেতু বন্ধনে বেঁধেছে নদীর উভয় তটভূমিকে। নির্মাণ করেছে প্রাসাদ অট্টালিকা।
ফলিয়েছে সোনার ধান, কেউ বুনিয়েছে লজ্জা নিবারণের বস্ত্র। কেউবা তৈরি করেছে
জীবনকে সুন্দর ও আকর্ষণীয় করার নানা দ্রব্যসামগ্রী। সবার পরিশ্রমের যৌথ
প্রয়াসে সভ্যতার এ অনবদ্য বিকাশ হয়েছে। সভ্যতা মানুষের পরিশ্রমের সম্মিলিত
যোগফল।
বাংলাদেশে শ্রম সম্পর্কে ধারণা : আমাদের দেশে শ্রমবিভাগ ছিল প্রধানত
বর্ণগত। এ বর্ণপ্রথা আমাদের শ্রমবিমুখ করে রেখেছে। উচ্চরর্ণের লোকেরা শ্রম
বিমুখ থাকবে আর নিম্নবর্ণের লোকেরা সর্বদা কর্মে নিয়োজিত থাকবে— এ জাতীয়
চেতনা আমাদের দেশে প্রাচীনকাল হতে চলে আসছে। অবশ্য আশার কথা হচ্ছে আধুনিক
যুগের ছোঁয়ায় বর্তমানে পরিবর্তন পরিলক্ষিত হচ্ছে।
ব্যক্তিগত জীবনে শ্রমচেতনা : আমাদের দেশের অধিকাংশ মানুষের ধারণা
দৈহিক শ্রম আত্মসম্মানের ক্ষেত্রে হানিকর। কিন্ত এ চেতনা আমাদের সমাজের জন্য
অত্যন্ত ক্ষতিকর এবং ভ্রান্ত। দৈহিক শ্রম আমাদের আত্মসম্মানের পরিপন্থি নয়,
বরং তা সমাজে আত্মপ্রতিষ্ঠার প্রধান উপায়। তাই প্রতিনিয়ত মানুষ নিজ নিজ
কর্মক্ষেত্রে শ্রমজীবী হয়ে জীবিকা নির্বাহের কঠের প্রয়াস চালাচ্ছে। শ্রমের
সাথে আমাদের জীবনের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বিদ্যমান। তাই কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
বলেছেন —
“ভদ্র মোরা শান্ত বড় পোষমানা এ প্রাণ
বোতাম আটা জামার নিচে শান্তিতে শয়ান।”
জাতীয় জীবনে শ্রমের গুরুত্ব : ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যাকে দক্ষকর্মীর হাতে
পরিণত করতে পারলে তারা সমস্যা না হয়ে বরং শক্তিতে রূপান্তরিত হয়। শতকোটি
লোকের দেশ চীন তার বিপুল জনসংখ্যাকে পরিণত করেছে উন্নতির হাতিয়ারে। আমাদেরও
হতে হবে কঠোর পরিশ্রমী। উৎপাদন ও বন্টনে মনোদৈহিক শ্রম নিবিড়ভাবে বিনিয়োগ
করতে পারলে ভোগের অধিকার আপনা থেকেই জন্মাবে। জাতীয় জীবনে শ্রমের গুরুত্বকে
অস্বীকার করে আধুনিক সভ্য দুনিয়া গড়ে তোলা সম্ভব নয়।
প্রতিভা বিকাশের হাতিয়ার : পরিশ্রম সৌভাগ্যের প্রসূতি। মানুষ আজ কঠোর
পরিশ্রমের দ্বারা উন্নতির চরম উচ্চাসনে আরোহন করতে সক্ষম হয়েছে। পৃথিবীকে
বাসযোগ্য করার জন্য নতুন নতুন শহর ও নগর নির্মাণ করেছে, আবিষ্কার করেছে অনেক
যন্ত্র ও যানবাহন। পরিশ্রম ও সাধনার বলেই এসব আবিষ্কারের প্রতিভা সৃষ্টি হয়।
উন্নত দেশে শ্রমের মর্যাদা : বিশ্বের উন্নত দেশসমূহে শ্রমকে শ্রম
হিসেবেই বিবেচনা করা হয়। সেখানে কাজের প্রকৃতি বিচার করে সম্মান আর অসম্মান
নির্ধারিত হয় না। অর্থাৎ পৃথিবীর উন্নত দেশসমূহের প্রতি দৃষ্টি নিক্ষেপ করলে
দেখা যায় যে, তারা শ্রমের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তারা আজ শ্রমের মর্যাদা ও
মূল্যায়নের গুণেই উন্নতির সুউচ্চ শিখরে আরোহন করতে পেরেছে। যুক্তরাষ্ট্র,
জাপান, রাশিয়া, চীন, মিসর, জার্মানি, ফ্রান্স, ইতালি প্রভূতি দেশের মানুষ
কঠোর পরিশ্রমের দ্বারা আজ উন্নত ও সুসভ্য জাতি হিসেবে খ্যাতি লাভ করেছে।
শ্রমশীল ব্যক্তির দৃষ্টান্ত : বিশ্ববরেণ্য ব্যক্তি ও মনীষীগণের
জীবনসাধনা ও সাফল্যের কারণ নিরলস পরিশ্রম। জর্জ ওয়াশিংটন, আব্রাহাম লিংকন,
বৈজ্ঞানিক আলবার্ট আইনস্টাইন প্রমুখ ব্যক্তিবর্গ এর উজ্জল দৃষ্টান্ত। ইসলাম
ধর্মপ্রবর্তক সর্বকালের সর্বযুগের সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানব হযরত মুহাম্মাদ (সঃ)
ছিলেন কঠোর পরিশ্রমী। তিনি বলেছেন,
“নিজ হাতে কাজ করার মতো পবিত্র জিনিস আর কিছু নেই।”
—আল হাদিস
বৈজ্ঞানিক আইনস্টাইন শ্রমের গুরুত্ব ও মর্যাদাকে অকুণ্ঠচিত্তে মর্যাদা দিয়ে
বলেছেন,
ধর্মীয় দৃষ্টিভঙ্গিতে শ্রম : শ্রমের কোনো বিকল্প নেই। সকল ধর্মে
শ্রমের কথা গুরুত্বের সাথে উল্লেখ করা হয়েছে। সকল ধর্মের প্রবর্তকগণ নিজেরা
যেমন পরিশ্রম করতেন তেমনি তাদের সঙ্গীদের বলতেন নিজের কাজ নিজে করতে। পৃথিবীর
প্রাণীকূলের ভেতর শুধু যে মানুষই শ্রম দান করে এমনটা কিন্তু নয়। বরং মানুষ
অপেক্ষা অধিকতর পরিশ্রম প্রাণী রয়েছে। ছোট্ট প্রাণী পিপীলিকা কে বলা হয়
পরিশ্রমী কর্মী। একটি পিঁপড়া তার দেহের ওজনের প্রায় ৪০ গুণ বেশি ভার বহন করতে
পারে। আবার মৌমাছি নামক পতঙ্গটি বছরের পর বছর অন্যের জন্য শ্রম দিয়ে মধু
সংগ্রহ করে কখনো কাজে বিমুখ কিংবা অলসতা আনে না। এজন্য আমাদের শ্রম দেওয়া
অবশ্যই পালনীয় কর্তব্য। কারণ পবিত্র কুরআনে বর্ণিত আছে —
“মানুষ তাই পায় যা সে করে।”
সুতরাং আমরা আমাদের শ্রম দিয়েই আমাদের ভাগ্য নির্মানের কারিগর হতে পারি।
শ্রম ও লিঙ্গভেদ : জগতে পুরুষ এবং নারী উভয়ে স্ব স্ব অবস্থান থেকে
অবদান রেখে জগতকে করেছে সুন্দর ও বাসযোগ্য ধরণী। পুরুষের শারিরীক কাঠামো এবং
নারীর শারীরিক কাঠামোর প্রকৃতিগতভাবেই বেশকিছু পার্থক্য বিদ্যমান। পুরুষ এবং
নারী তাদের ক্ষমতা এবং শক্তি অনুযায়ী কাজ করবে এটাই স্বাভাবিক। নারীর কাজ বা
শ্রম কোনো অংশেই পুরুষের শ্রমের চেয়ে গুরুত্বহীন নয়। নারস তার শ্রমের
দিগন্তে আপন মহীমায় উজ্জল। কিন্তু অবগ্রসর দেশগুলোতে নারীর শ্রমের গুরুত্ব
দেওয়া হয় না। ফলে নারী ও পুরুষের শ্রমের মধ্যে বিস্তার বৈষম্য বিরাজ করে যা
শ্রমের মর্যাদা প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে অন্তরায়। নারী ও পুরুষের শ্রমের সমান
মূল্যায়ন ও মর্যাদা প্রতিষ্ঠা হওয়া দরকার। আমাদের দেশে তৈরি পোশাকের ক্ষেত্রে
নারীদের অবদান অনেক। সে তুলনায় নারী শ্রমিকদের মূল্যায়ন করা হয় না। এটা
অনভিপ্রেত।
শ্রমের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ : আমাদের প্রতিটি নাগরিকের শ্রমের প্রতি
শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করা উচিত। কারণ শ্রম আমাদের জীবনে নিয়ে আসে গৌরবের ও সাফল্যের
প্রাচুর্য। শ্রমজীবী মানুষ দেশ ও দশের কল্যাণের প্রয়োজনে পরিশ্রম করে থাকে।
ছোট বলে কাজকে অবহেলার দৃষ্টিতে গণ্য করা ঠিক নয়। প্রতিটি কাজের মর্যাদা আছে।
যে লোক শ্রমের মর্যাদা দিতে জানে না, সেই লোক সময়ের মূল্য দিতে জানে না।
এমনকি সে নিজের মর্যাদাও দিতে জানে না।
শ্রমশীল ব্যক্তির প্রতি শ্রদ্ধাবোধ : শ্রমের মতো শ্রমশীল ব্যক্তির
প্রতি শ্রদ্ধাবোধ জ্ঞাপন করা প্রতিটা মানুষের কর্তব্য। শ্রমজীবী মানুষ অর্থাৎ
চাষি, কামার, কুমার, জেলে, তাঁতি, কুলি, মজুর, শ্রমিক কাউকে ঘৃণার চোখে দেখা
ঠিক নয়। কারণ দেশ ও জাতিকে রক্ষার দায়িত্ব তাদের ওপরই ন্যস্ত। যে লোক শ্রমকে
মর্যাদা দিতপ জানে সেই লোক অবসরকে যথার্থ কাজে লাগাতে পারে। জীবনকে করে তুলতে
পারে সুন্দর ও গতিশীল। শ্রম আনে গতি, আলস্য আনে স্থিতি। গতিতেই জীবন, স্থিতি
আনে মরণ। আমাদের মনে রাখা উচিত —
শ্রমই উন্নতির মূল : ব্যক্তিগত ও জাতীয় সকল উন্নয়নের মূলই হচ্ছে শ্রম
ও কঠোর সাধনা। পরিশ্রমের কোনো বিকল্প নেই। বিশ্বে ক্রমেই শ্রমের মর্যাদা ও
গুরুত্ব বৃদ্ধি পাচ্ছে। সাম্প্রতিক এ বিশ্ব ভাবনা থেকে আমরাও পিছিয়ে থাকতে
পারি না। শ্রম বিনিয়োগের সাথে সাথে আমাদেরও রচিত করতে হবে উন্নয়ন অগ্রগতির
বিজয়রথ।
শ্রমের উপকারিতা : শ্রমের গুরুত্ব অপরিসীম। কথায় বলে, শ্রম ছাড়া শ্রী
হয় না। যে জাতি বেশি পরিশ্রমী, সেই জাতি বেশি উন্নত। পরিশ্রম করা মোটেই
আত্নসম্মানের জন্য হানিকর নয়। বরং এর দ্বারা ব্যক্তি ও দেশের কল্যাণ হয়।
দৈহিক এবং মানসিক উভয় দ্বারাই একজন ব্যক্তি ও দেশ মাথা উঁচু করে চলতে পারে।
শ্রমবিমুখ জাতির ধ্বংস অনিবার্য। জগতের মনীষীরা পরিশ্রমের মাধ্যমে অমর হয়ে
আছেন। বিশ্বে যেকোনো মহৎ কীর্তির পেছনে রয়েছে মানুষের সূক্ষ্ম চেতনা, পরিশ্রম
ও অধ্যবসায়।
শ্রমবিমুখতার পরিমাণ : যারা অদৃষ্টবাদী, অলস, শ্রমবিমুখ তারা জীবনের প্রতি
পদক্ষেপে ব্যর্থ হয়। ঈশ্বর কারো হাতে সম্পদ তুলে দেন না। কুপুরুষেরাই দৈবের
দোহাই দিয়ে অলস জীবনাচারে ব্যাপৃত থাকে। ফলে দৈন্য, ব্যর্থতা ও পরাজয় হয়
তাদের নিত্যসঙ্গী। সম্পদ কিংবা সাফল্য এমনি এমনিই হস্তান্তর হয় না, নিরলস
শ্রম আর সংগ্রাম দিয়ে তা অর্জন করতে হয়। শ্রমবিমুখতা মানসিক উন্নতির এক চরম
অন্তরায়। কথায় বলেন —
“An idle brain is the devil's workshop.”
অর্থাৎ “অলস মস্তিষ্ক শয়তানের কারখানা।”
কেননা শ্রমহীন লোকের প্রচুর সময় থাকে। সময় কাজে লাগাতে না পারলে মানুষ তার
সহজাত প্রবৃত্তি অনুযায়ী কাজ করে। আর অলস ব্যক্তির এই সকল কাজ হচ্ছে অপকর্ম।
শ্রমবিমুখ মানুষের মাথায় সুচিন্তা চেতনার উদয় হয় না। বরং সর্বদা তারা অপকর্মে
নিজেকে নিয়োজিত করার চেষ্টা করে। যে ছাত্র পরিশ্রম করে না, সেই ছাত্র কোনোদিন
পরীক্ষায় কৃতকার্য হতে পারে না। যে কৃষক পরিশ্রম করে না, সেই কৃষকও কোনোদিন
ভালো ফসল ফলাতে পারে না। পরবর্তীকালে তারা ব্যর্থ হয়ে পরনির্ভরশীল হয়ে পড়ে।
তাদের মনে রাখা উচিত—
“খেটে খাটায় লাভের গাঁতী
তার অর্ধেক কাঁধে ছাতি,
ঘরে বসে পুঁছে বাত
তার কপালে হা–ভাত।”
শ্রমবিমুখতা ও আলস্য জীবনে বয়ে আনে নিদারুণ অভিশাপ। শ্রমহীন জীবনে ব্যর্থতা
এসে অক্টোপাসের মতো ঘিরে ধরে ফেলে। কথায় বলে,
‘পরিশ্রমে ধন আনে, পুণ্য আনে সুখ’
— এ কথা তর্কাতীতভাবে সত্য। যে ব্যক্তি শ্রমকে অবজ্ঞা করে, তার শ্রম সমন্ধে
কোনো অভিজ্ঞতা নেই, তার জীবনের কোনো মূল্য নেই।
উপসংহার : বৃক্ষ যেমন নীরব সাধনায় ফুল ফোটায়, ফল ফলায়, মানুষকেও তেমনি
নিষ্ঠাবান কর্মের মধ্যদিয়ে দেশ ও জাতির উন্নয়নে ব্রতী হতে হবে। শ্রমের ফসলের
সম্ভার নিয়েই ব্যক্তি, সমাজ ও দেশ এগিয়ে যায় উত্তরোত্তর সমৃদ্ধির সোনালি
দিগন্তে। তাই নিশ্চিত করে একথা বলা যায়, জাতীয় উন্নয়ন ও অগ্রগতির নেপথ্যে
শ্রমের গুরুত্ব অনস্বীকার্য। সবশেষে বলা যায় — মানুষ একদিকে যেমন সভ্যতার
স্রষ্টা তেমনি আপন ভাগ্যের নির্মাতা। নিজের ভাগ্যকে মানুষ নিজেই নির্মাণ করতে
পারে। আর তার ভাগ্য নির্মাণের হাতিয়ার হলো পরিশ্রম।
Thanks ☺️👍☺️👍👍👍👍☺️👍☺️👍👍👍👍👍👍👍
ReplyDeleteLove it 😊😊😊😊
It's to much better to observe good mark.......
Thank youuuuuuuuuuu🥰🥰🥰🥰🥰🥰🥰🥰💖💖💖💖💖💖♥️♥️♥️♥️♥️♥️❤️❤️❤️🧡🧡❤️🤎💜💛💙
Etto boro? Pagol???
ReplyDeleteযারা বড় লিখতে চায় এটা তাদের জন্য। আপনার যদি ছোট প্রয়োজন হয় তবে রচনাটির নিচের
Deleteরচনা : শ্রমের মর্যাদা (৩টি রচনা) তে ক্লিক করুন। ঐখানে ছোট ছোট তিনটি রচনা আছে।
Thank you very much......... It is very needed for good marks
DeleteThanks. I think that will help us to acquire better marks in examination
DeleteOto beshi borou na lekhar somoy emniteo kome jabe😑😑😑😑
DeleteThanks🥰
ReplyDeletevery nice 🙂🙂
ReplyDeleteKhuv valo hiice kibtu bujeci na ami karon ami pora lekha korina 🤣🤣🤣
ReplyDeleteAta onek valo ekta rochona.valo nambar paoa jabe.. But likhi onek aste ami...🥲
ReplyDeletePora lekha o kori na... 🙃
it so helpful for me thank you so much....
ReplyDelete