এসিড সন্ত্রাস
এসিড নিক্ষেপ আমাদের সবচেয়ে নিষ্টুরতম অপরাধগুলোর মধ্যে অন্যতম। এটি একটি জঘন্য কাজ। অন্য কথায় এটি কাপুরুষোচিত আচরণের ন্যাক্কারজনক বহিঃপ্রকাশ। দুর্ভাগ্যজনকভাবে আমাদের দেশে এর প্রকোপ দিনদিন বেড়ে চলেছে। এসিডের অগ্নি ছোঁয়ায় মুহুর্তের মধ্যের ঝলসে যায় মানুষের একটি সুন্দর চেহারা। এর শিকার হচ্ছে তরুনী ও গৃহ বধুরা। বিশেষ করে স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীরা। প্রেমের প্রস্তাব প্রত্যাখান করলে এসব বখাটেরা এসিড নিক্ষেপ করে ঝলসে দেয় তরুণীর মুখ। এছাড়া জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধ ও ব্যক্তিগত প্রতিহিংসা থেকেও এসিড নিক্ষেপ করা হয়। এসিডের সহজলভ্যতা ও ব্যবহারের জটিলতা কম থাকায় প্রতিহিংসাপরায়ণ হয়ে এসব বখাটে তরুণরা এসিডকেই বেছে নেই অস্ত্র হিসেবে। এতে করে সারাজীবনের জন্য পঙ্গু হয়ে যায় এসিড ঝলসানো মেয়েটি। এসিড নিক্ষেপ কারির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের ক্ষেত্রে শিথিলতা এ সন্ত্রাসের বিস্তৃতির জন্য দায়ী। যদিও এসিড অপরাধ দমনের আরো কঠোর করার জন্য সরকার প্রণোয়ন করে 'এসিড সন্ত্রাস দমন আইন ২০২১'। এই আইনে এসিড নিক্ষেপজনিত অপরাধের জন্য সর্বোচ্চ শাস্তি নির্ধারন করা হয়েছে মৃত্যুদণ্ড এবং গঠিত হয়েছে এসিড সন্ত্রাসের জন্য পৃথক আদালত। এসিড সন্ত্রাস রোধ ও এসিড সন্ত্রাসের স্বীকাত ব্যক্তিদের পুর্ণবাসন ও যথাযথ চিকিৎসা প্রদানের জন্য গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নেয়া উচিত। এছাড়া এর বিরুদ্ধে সামাজিক আনন্দোলন গড়ে তোলা উচিত। যেকোন মূল্যে এই সন্ত্রাস রুখতে হবে। মানুষের বিরুদ্ধে মানুষের এই দুর্বৃত্তপনা কোনভাবেই মেনে নেয়া যায় না। অপরাধীকে তা অপরাধকর্ম থেকে নিবৃত্ত রাখতে অপরাধের হাতিয়ার এসিডকে রাখতে হবে তাদের নাগালের বাইরে। এসিড নামের যে আতঙ্ক আমাদের ক্রমাগ মত গ্রাস করছে তা থেকে আমরা সবাই মুক্ত থাকব এমন প্রত্যাশা আমাদের সবার।