আহসান হাবিব
আহসান হাবিব কবে, কোথায় জন্মগ্রহণ করেন? — ১৯১৭ সালের ২ জানুয়ারী পিরোজপুরের শঙ্করপাশা গ্রামে।
তিনি মূলত কি ছিলেন? — সাংবাদিক ও কবি।
তাঁর শিক্ষা জীবন কতদূর পর্যন্ত? — বরিশালের ব্রজমোহন কলেজ থেকে আই.এ পাশ করেন।
তিনি কোন গুরুত্বপূর্ণ সমাবেশে তার নিজের লেখা কবিতা পাঠ করেন? — সামরিক শাসক এরশাদ বিরোধী সমাবেশে পাঠ করেন। এটি ঢাকা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বুদ্ধিজীবীদের সমাবেশ ছিল। (১৯৮৩ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি।)
তাঁর ১ম প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থের নাম কী? — রাত্রিশেষ (১৯৪৭)।
তাঁর প্রকাশিত অন্যান্য গ্রন্থসমূহের পরিচয় দাও।
- কাব্যগ্রন্থ : ছায়া হরিণ (১৯৬২), সারা দুপুর (১৯৬৪), আশায় বসতি (১৩৮১), মেঘ বলে চৈত্রে যাবো (১৯৭৬), দুই হাতে দুই আদিম পাথর (১৯৮০), প্রেমের কবিতা (১৯৮১), বিদীর্ণ দর্পণে মুখ (১৯৮৫) ইত্যাদি।
- উপন্যাস : অরণ্যে নীলিমা (১৯৬২), রানী খালের সাঁকো (১৯৬৫)।
- শিশুতোষ গ্রন্থ : ছোটদের পাকিস্তান (১৯৫৪), বৃষ্টি পড়ে টাপুর টুপুর (১৯৭৭), ছুটির দিন দুপুরে (১৯৭৮) ইত্যাদি।
'রাত্রিশেষ' কাব্যগ্রন্থের সংক্ষিপ্ত পরিচয় দাও।
— এটি কবির প্রথম প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ। প্রকাশকাল— ১৯৪৭ সালের এপ্রিল মাস। এই কাব্যগ্রন্থে প্রহর, প্রান্তিক, প্রতিভাস পদক্ষেপ এই চারভাগে কবিতাগুলো বিন্যস্ত। এখানে মোট ২৮ টি কবিতা আছে। কাব্যগ্রন্থে কবি আত্মাসন্ধানে ব্রতী। নগর এবং গ্রামীণ উভয় কেন্দ্রিক কবিতা আছে এই গ্রন্থে।
'ছায়াহরিণ' কাব্যগ্রন্থের পরিচয় দাও।
— 'ছায়াহরিণ' গ্রন্থটি ১৯৬২ সালে ঢাকা থেকে প্রকাশিত হয়। এতে মোট ২৪ টি কবিতা আছে। এ কাব্যে তার সমাজ সচেতনতা প্রকাশিত হয়েছে। ঐতিহ্যাশ্রয়ী কবি এখানে বণিক সভ্যতার রুদ্র রূপ দেখেছেন। পাশাপাশি গ্রামীণ অনুষঙ্গে স্হিত হতে চেয়েছেন।
'সারাদুপুর' কাব্যগ্রন্থের পরিচয় দাও।
— ১৯৬৪ সালে ঢাকা থেকে গ্রন্থটি প্রকাশিত হয়। অনেকের মতে এটি কবির শ্রেষ্ঠ কাব্যগ্রন্থ। এতে মোট ২৬ টি কবিতা আছে। কাব্যভাষা, ঐতিহ্যান্বেষণ ও বক্তব্য প্রকাশে কবি এখানে পরিপক্ক।
'আমি কোন আগন্তক নই' কবিতার বিষয়বস্তু কী? — 'আমি কোন আগন্তক নই' এটি 'দুই হাতে দুই আদিম পাথর' কাব্যগ্রন্থের কবিতা। কবিতাতে শহরের মানুষদের গ্রামে ফিরে যাবার কথা আছে।
'অরণ্যে নীলিমা' উপন্যাসের পরিচয় দাও।
— উদীয়মান বাঙালি মুসলমান মধ্যবিত্ত সমাজের এক প্রতিনিধি তরুণ চিত্রশিল্পী ও তাঁর স্ত্রীর মনোহাগতিক সংকটকে উপজীব্য করে রচিত কবির 'অরণ্যে নীলিমা' উপন্যাসটি। এটি কবির একমাত্র উপন্যাস।
তিনি কোন পত্রিকার সম্পাদক ছিলেন? — অধুনালুপ্ত 'দৈনিক বাংলা' পত্রিকার।
তিনি কবে মৃত্যুবরণ করেন? — ১০/০৭/১৯৮৫ সালে।
'সেই অস্ত্র' কবিতা থেকে গুরুত্বপূর্ণ কিছু
আহসান হাবিবের কাব্যের মূল বৈশিষ্ট্য কী? — গভীর জীবনবোধ ও আশাবাদ।
'সেই অস্ত্র' কবিতা কোন কাব্যগ্রন্থের অন্তর্ভুক্ত? — বিদীর্ণ দর্পণের মুখ।
জাত্যভিমান কী? — কোন যুক্তি ছাড়াই নিজ জাতিকে সর্বশ্রেষ্ঠ জ্ঞান করার অহংকারী মনোভাব।
অমোঘ অনন্য অস্ত্র কী? — ভালোবাসা।
অবিনাশী শব্দের অর্থ কী? — শাশ্বত বা যা বিনাশ করা যায় না।
সেই অস্ত্র কবিতায় কবির প্রত্যাশা কী? — ভালোবাসা নামের সেই মহান অস্ত্রকে আবার পৃথিবীতে ফিরিয়ে আনা।
ভালোবাসা কিসের লোভকে চিহ্নিত করে? — আধিপত্যের লোভকে।
কবি ভালোবাসা কে অমোঘ অনন্য অস্ত্র বলেছেন কেন? — ভালোবাসা মানুষকে সকল অমঙ্গল থেকে উত্তরণের পথ দেখায় বলে ভালবাসাকে অমোঘ অনন্য অস্ত্র বলেছেন।
'সেই অস্ত্র' কোন ধরনের কবিতা? — প্রার্থনামূলক কবিতা।
কবিতাটি কোন ছন্দে রচিত? — অন্ত্যমিলহীন অক্ষরবৃত্ত ছন্দে রচিত।
'আমি কোন আগন্তক নই' কবিতা থেকে গুরুত্বপূর্ণ কিছু প্রশ্ন
কবি কোন বাগানকে সাক্ষী রেখে বলেছেন যে তিনি কোন আগুন্তক নন? — বাঁশবাগান।
কবি কোন নিয়মে বাংলায় থাকেন? — স্বাপ্নিক নিয়মে।
কোন পাখিরা কবিকে চেনেন? — মেঘ কান্ত বিকেলের পাখি।
কোন সময়ের ধানের মঞ্জরীকে কবি সাক্ষী মেনেছেন? — কার্তিক মাসের ধানের মঞ্জরীকে।
কবি কার চিরচেনা স্বজন? — অকাল বার্ধক্যে নত কদম আলীর।
কার মা কবিকে চেনেন? — জমিলার মা।
কবির শরীরে কিসের গন্ধ রয়েছে? — সিন্ধ মাটির।
জলজ বাতাস কী? — জলজ অর্থে জলে জন্মে যা। এখানে জলবাহী আর্দ্র সুশীতল গ্রামীণ বায়ুকে বোঝানো হয়েছে।
নিশিন্দা কী? — এক প্রকার গাছ যাকে গুল্ম ও বৃক্ষের সংকর বলা হয়৷
উধাও নদী কী? — উধাও অর্থ নিরুদ্দেশ। নদী যেহেতু নিরুদ্দেশে ধাবিত হয়, সেহেতু বহমানতা বোঝাতে কবি লিখেছেন 'উধাও নদী'।
আগন্তক অর্থ কী? — অতিথি।
কোন পত্রিকার সম্পাদক থাকাকালীন সময়ে কবি মৃত্যুবরণ করেন? — দৈনিক বাংলা।'