আল মাহমুদ
আল মাহমুদ কবে কোথায় জন্ম গ্রহণ করেন? — ১৯৩৬ সালের ১১ জুলাই ব্রাহ্মণবাড়িয়ায়।
আল মাহমুদের প্রকৃত নাম কী? — মির আব্দুল শুকুর আল মাহমুদ
তাঁর শিক্ষাগত যোগ্যতা কি ছিল? — মাধ্যমিক পাস।
তাঁর প্রকাশিত শ্রেষ্ঠ কাব্যগ্রন্থ কোনটি? — সোনালী কাবিন (১৯৭৩)।
তার অন্যান্য গ্রন্থসমূহের পরিচয়
কাব্যগ্রন্থ : লোক লোকান্তর (১৯৬৩), কালের কলস (১৯৬৬), সোনালী কাবিন (১৯৭৩),
দোয়েল ও দয়িতা (১৯৯৭), পাখির কাছে ফুলের কাছে (২০০২), প্রেমের কবিতা (২০০২),
দ্বিতীয় ভাঙন (২০০২) ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য।
গল্পগ্রন্থ : পানকৌড়ির রক্ত (১৯৭৫), সৌরভের কাছে পরাজিত (১৯৮৩), গন্ধবণিক
(১৯৮৬), ময়ূরীর মুখ (১৯৯৪)।
উপন্যাস : ডাহুকী (১৯৯২), উপমহাদেশ (১৯৯৩), আগুনের মেয়ে (১৯৯৫), কাবিলের বোন
(২০০১) ইত্যাদি।
আল মাহমুদ রচিত 'সোনালী কাবিন' কাব্যগ্রন্থের সংক্ষিপ্ত পরিচয় দাও। — 'সোনালী কাবিন' আল মাহমুদের কবি প্রতিভার শ্রেষ্ঠ পরিচয়। এটি মূলত প্রকাশিত
হয় ১৯৭৩ সালে। এই গ্রন্থে বিভিন্ন শিরোনামের সঙ্গে 'সোনালী কাবিন' নামে চৌদ্দটি
সনেটের সমন্বয়ে একটি দীর্ঘ কবিতাও অন্তভুক্ত। এটিকে একটি ক্ষুদ্র কাব্যগ্রন্থও
বলা যেতে পারে। আবার অনেকে একে বীজ কাব্যগ্রন্থও বলে থাকে। এই গ্রন্থের অন্যসব
কবিতা হলো— জাতিস্মর, পালক ভাঙার প্রতিবাদে, ক্যামোফ্লোজ, শোণিতে সৌরভ, তোমার
আড়ালে ইত্যাদি। পুরো কাব্যগ্রন্থ জুড়ে বঞ্চিত মানুষের ক্ষোভ, শ্রমিকের কষ্টার্জিত
ঘাম, কৃষকের পরিশ্রম এবং গ্রামীণ জীবনের আবহাওয়া ইত্যাদি ফুটে ওঠেছে। অসাধারন
কাব্যভাষা, গীতল, অনুভবযোগ্য। গ্রন্থে যৌন প্রসঙ্গও বাদ যায়নি। তবে তা করেছেন
শ্রেণিচেতনার নিরিখে। যেমন— 'তারপর তুলতে চাও কামের প্রসঙ্গ যদি নারী/ ক্ষেতের
আড়ালে এসে নগ্ন করো যৌবন দরদ/ শস্যের সপক্ষে থেকে যতটুকু অনুরাগ পারি/ তারো বেশি
ঢেলে দেবো আন্তরিক রতির দরদ।'
মার্কসবাদীরা অবশ্য শ্রেণিচেতনার নামে রতি শক্তির এ ধরনের প্রদর্শন প্রশয় দেন না।
যৌবনকালে আল মাহমুদ মার্কসবাদের নামে সো স্বাধীনতা নিয়েছেন। বৃদ্ধ বয়সে এসে তিনি
অবশ্য ভালো হয়ে ওঠেছেন। তিনি লিখেছেন— 'আমার বুকের ভেতর ধর্মের কল বাতাসে নড়ে
ওঠে।' এই গ্রন্থের কবিতগুলো ১৯৬৯ থেকে ১৯৭৩ সালের ভেতর লেখা।
স্বাধীনতা উত্তরকালে তিনি কোন পত্রিকার সম্পাদক ছিলেন? — দৈনিক গণকন্ঠ (অধুনালুপ্ত)।
তাঁর কবিতার বিশেষত্ব কি ছিল? — তিনি তাঁর কবিতায় বাংলাদেশের লোকজ ঐতিহ্য ও লোকশব্দ ব্যবহারে বিশেষ কৃতিত্ব
দেখিয়েছেন।
তিনি কবে মৃত্যু বরণ করেছেন? — ২০১৯ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি।
'লোক—লোকান্তর' কবিতা থেকে গুরুত্বপূর্ণ কিছু
লোক—লোকান্তর' কাব্যটি কোন গ্রন্থের অন্তর্ভুক্ত? — লোক—লোকান্তর'।
এটি কি জাতীয় কবিতা? — আত্নপরিচয়মূলক।
কবির চেতনায় পাখিটি কেমন? — সাদা সত্যিকার। নখ দেখেতে লাল। ঠোঁট সুগন্ধ পরাগের মাখা। দুটি চোখের কোটরে
কাটা সুপারির রং, পা সবুজ।
কবির চেতনায় রূপ পাখি কিসের ডালে বসে আছেন? — সবুজ অরণ্যে এক চন্দনের ডালে।
লোক থেকে লোকান্তরে কবি কি শুনেন? — আহত কবির গান।
বনচারী বাতাসের তালে কী দোলে? — বন্য পানলতা দোলে। কবির মাথার উপরে ও নিচে দোলে।
কবিতার আসন্ন বিজয় বলতে কি বুঝানো হয়েছে? — কবির চেতনায় সমাজ সংস্কার ও ধর্ম তুচ্ছ হয়ে ভিন্নতর অভিব্যক্তি লাভ করে তখনই
কবিতাট জন্ম হওয়ার বিষয়টি বোঝানো হয়েছে।
কবি কেন লোক—লোকান্তরে স্তব্ধ হয়ে আছেন? — আহত কবির গান শোনার জন্য। অর্থাৎ সৃষ্টি কর্মের জয়ধ্বনি শোনার জন্য। যা কবিকে
পৃথিবীতে অমরত্ব গনক দিতে পারে।
সুগন্ধ পরাগে মাখামাখি হয়ে আছে তার ঠোঁট— এটি কি জাতীয় উপস্থাপনা? — চিত্রকল্প।