হেমন্তের বিকেল
কর্মচঞ্চল জীবন ও যান্ত্রিকতার চাপে মানুষের মন ছন্নছাড়া হয়ে পড়ে। বিকেল আমাদের এই উচ্চসিত মনকে ঘরে ফেরার আহবানে আকর্ষণ করে। হেমন্তের বিকেল এই মহিমাকে পরিপূর্ণভাবে ধারণ করে। হেমন্তের বিকেলে আকাশে জলহারা মেঘের আনাগোনা। মেঘ আর রোদ্দুর যেন লুকোচুরি খেলায় মেতে উঠে। হেমন্তের বিকেলে উত্তরের হিমেল হাওয়ায় শীতের আগমনী বার্তা ধারণ করে। হিমের কুয়াশা ভর করে এই বিকেলে কিছুটা ঠান্ডাও অনুভূত হয়। আর গোধূলির আলোর সাথে মিলেমিশে হরিৎ শস্যখেত পায় এক ভিন্নধর্মী বৈশিষ্ট্য, যা সৌন্দর্যে অতুলনীয়। প্রকৃতি জুড়ে যেন অবস্থান করে এক বিরাগী সত্তা। অন্য যেকোনো ঋতুর তুলনায় হেমন্তের বিকেলের রূপ অতি মনোহর। এটি সৌন্দর্যের পসরা সাজিয়ে প্রকৃতিকে অপরূপ করে তোলে, যা চিরকাল কবি ও ভাবুককে আনন্দ দিয়েছে, রসিক চিত্তকে করেছে বিমুগ্ধ। হেমন্তের বিকেল আমারও অনেক প্রিয়। বিকেল বলতে যে চিত্রকল্প আমার মানসপটে উঁকি দেয়, তা মূলত স্নিগ্ধ, আলোকিত, স্বর্ণালী আভামন্ডিত একটি বিশেষ ক্ষণ- যা হেমন্তের বিকেলেরই প্রতিরূপ। এ বিকেল আনন্দের প্রতীক হয়ে, জীবনের প্রতীক হয়ে দোলা দিক প্রতিটি ভাবুক চিত্তকে।