HSC : বাংলা : ৩য় সপ্তাহ : ২০২১

HSC : বাংলা : ৩য় সপ্তাহ

১. ব-ফলার উচ্চারণসূত্র লেখা।
২. পুনর্বিন্যাসকৃত পাঠ্যসূচির গদ্য ও কবিতা থেকে ব-ফলাযুক্ত শব্দ বাছাই করে উচ্চারণ লেখা।
৩. ম-ফলার উচ্চারণসূত্র লেখা।
৪. পুনর্বিন্যাসকৃত পাঠ্যসূচির গদ্য ও কবিতা থেকে ম-ফলাযুক্ত শব্দ বাছাই করে উচ্চারণ লেখা।
৫. য-ফলার উচ্চারণসূত্র লেখা।
৬. পুনর্বিন্যাসকৃত পাঠ্যসূচির গদ্য ও কবিতা থেকে য-ফলাযুক্ত শব্দ বাছাই করে উচ্চারণ লেখা।

নমুনা সমাধান

শব্দের যথাযথ উচ্চারণের জন্য নিয়ম বা সূত্রের সমষ্টিকে উচ্চারণনীতি বলে। ভাষাতত্ত্ববিদ ও ব্যাকরণবিদগণ বাংলা ভাষার প্রতিটি শব্দের যথাযথ সঠিক উচ্চারণের জন্য কতকগুলো নিয়ম বা সূত্র প্রণয়ন করেছেন। এই নিয়ম বা সূত্রের সমষ্টিকে বলা হয় বাংলা ভাষার উচ্চারণনীতি। নিম্নে ব-ফলা, ম-ফলা ও য-ফলাযুক্ত শব্দের উচ্চারণের নিয়ম এবং পূনর্বিন্যাসকৃত পাঠ্যসূচির গদ্য ও কবিতা থেকে কিছু শব্দের উচ্চারণ দেওয়া হলো :

ব-ফলা উচ্চারণের সূত্র

নিম্নে উদাহরণসহ ব-ফলা উচ্চারণের ৫টি নিয়ম তুলে ধরা হলো :

(১) পদের আদিতে অবস্থিত ব্যঞ্জনবর্নে ব-ফলা যুক্ত হলে ব-ফলার কোনো উচ্চারণ হয় না। যেমন : জ্বলন্ত (জলোনতো), স্বাগত (শাগতো), ইত্যাদি।

(২) পদের মধ্যে বা শেষে অবস্থিত কোনো বর্ণের সঙ্গে ‘ব-ফলা’ যুক্ত হলে সংযুক্ত বর্ণটির দ্বিত্ব উচ্চারণ হয়। যেমন : আশ্বিন (আশশিন), অশ্ব (অশশো) ইত্যাদি।

(৩) ম-ব্যঞ্জনের সঙ্গে ব-ফলা যুক্ত হলে ব-এর উচ্চারণ অবিকৃত থাকে। যেমন : লম্বা (লমবা), কম্বল (কমবোল) ইত্যাদি।

(৪) ব-ব্যঞ্জনের সঙ্গে ব-ফলা যুক্ত হলে ব-এর উচ্চারণ অবিকৃত থাকে। যেমন : আব্বা (আববা), ডিব্বা (ডিববা) ইত্যাদি।

(৫) ব-ফলা অন্য কোনো যুক্ত ব্যঞ্জনের সঙ্গে যুক্ত হলে ব-এর উচ্চারণ অনুচ্চারিত থাকে। যেমন : সান্ত্বনা (শানতোনা), দ্বন্দ্ব (দনদো) ইত্যাদি।

পূনর্বিন্যাসকৃত পাঠ্যসূচির গদ্য ও কবিতা থেকে ব-ফলাযুক্ত কিছু শব্দের উচ্চারণ :
জিহ্বা = জিওভা
গহ্বর = হওভর
আহ্বান = আহবান
তিব্বত = তিব্ বত
লম্ব = লম্ বো
ক্বচিৎ = কোচিৎ
দ্বিত্ব = দিততো
শ্বাস = শাশ্

ম-ফলা উচ্চারণসূত্র

নিম্নে ম-ফলা উচ্চারণের পাঁচটি নিয়ম উদাহরণসহ তলে ধরা হলো :

(১) শব্দের মধ্যে কিংবা শেষে অবস্থিত ম-ফলা যুক্ত বর্ণের উচ্চারণ দ্বিত্ব হয় ও কিছুটা নাসিক্য প্রভাবিত হয়। যেমন : পদ্ম (পদদোঁ), ভস্ম (ভশশোঁ) ইত্যাদি।

(২) কোনো শব্দের প্রথম বর্ণে ম-ফলা যুক্ত হলে ম-ফলা অনুচ্চারিত থাকে এবং কিছুটা নাসিক্যরূপে উচ্চারিত হয়। যেমন : শ্মাশান (শঁশান), স্মরণ (শঁরোন) ইত্যাদি।

(৩) গ, ঙ, ট, ণ, ন, ম ও ল বর্ণের সঙ্গে ম-ফলা যুক্ত হলে ম-এর উচ্চারণ অবিকৃত থাকে। যেমন : যুগ্ন (জুগমো), তন্ময় (তনময়) ইত্যাদি।

(৪) শব্দের শেষে ম-ফলা যুক্ত হলে ম-এর উচ্চারণ অবিকৃত থাকে। যেমন : বাগ্মী (বাগমি), যুগ্ম (জুগমো) ইত্যাদি।

(৫) কিছু সংস্কৃত শব্দে ম-ফলার উচ্চারণ অবিকৃত থাকে। যেমন : কুস্মাণ্ড (কুশমাণডো) সুস্মিতা (শুসমিতা) ইত্যাদি।

পূনর্বিন্যাসকৃত পাঠ্যসূচির গদ্য ও কবিতা থেকে ম-ফলাযুক্ত কিছু শব্দের উচ্চারণ :
শ্মশান = শঁশান্
স্মরণ = শঁরোন্
স্মৃতি = সৃঁতি
আত্মীয় = আত্ তিঁয়
পদ্ম = পদ্ দোঁ
বিস্ময় = বিশ্ শঁয়
ভস্ম = ভশ্ শোঁ
রশ্মি = রোশ্ শিঁ
বাগ্মী = বাগ্ মি
যুগ্ম = যুগ্ মো

য-ফলা উচ্চারণের সূত্র

নিম্নে য-ফলা উচ্চারণের সাতটি নিয়ম উদাহরণসহ তলে ধরা হলো :

(১) য-ফলার পর ব্যঞ্জনধ্বনি বা অ, আ ও ধ্বনি থাকলে য-ফলা ‘অ্যা’ উচ্চারিত হয়। যেমন- ব্যবহার (ব্যাবোহার্), ব্যস্ত (ব্যাস্‌তো) ইত্যাদি।

(২) য-ফলার পরে ‘ই’ ধ্বনি থাকলে য-ফলা ‘এ’ উচ্চারিত হয়। যেমন- ব্যক্তি (বেক্‌তি), ব্যতীত (বেতিতো) ইত্যাদি।

(৩) য-ফলা শব্দের মাঝে বা শেষে থাকলে ‘দ্বিত্ব’ উচ্চারিত হয়। যেমন- বিদ্যুৎ (বিদ্‌দুত্), বিদ্যা (বিদ্‌দা) ইত্যাদি।

(৪) শব্দের প্রথমে য-ফলার সাথে উ-কার, ঊ-কার, ও-কার থাকলে য-ফলার উচ্চারণ হয় না। যেমন- দ্যুতি (দুতি), জ্যোতি (জোতি) ইত্যাদি।

(৫) ‘হ’-এর পর য-ফরা থাকলে হ + য-ফলা ‘জ্‌ঝ’ উচ্চারিত হয়। যেমন- সহ্য (শোজ্‌ঝো), গ্রাহ্য (গ্রাজ্‌ঝো) ইত্যাদি।

(৬) উদ্যোগ শব্দটির উচ্চারণ বাংলায় দুটি পাওয়া যায়- উদ্‌দোগ ও উদ্‌জোগ। তবে জনমনে বেশি প্রচলিত উদ্‌দোগ। অনেকের মতে উদ্যোগকে যদি সংস্কৃত ভেঙে উদ্‌যোগ রূপে লেখা হয়-তবে এর উচ্চারণ উদ্‌জোগ হবে।

(৭) য বা য-ফলার আদি বা সংস্কৃত উচ্চারণ ‘ইঅ (ইয়)’। যেমন- যামিনী (ইয়ামিনি), শ্যাম (শিয়াম) ইত্যাদি।

পূনর্বিন্যাসকৃত পাঠ্যসূচির গদ্য ও কবিতা থেকে য-ফলাযুক্ত কিছু শব্দের উচ্চারণ :
ব্যবহার = ব্যাবোহার্
ব্যস্ত = ব্যাস্ তো
ব্যক্তি = বেক্ তি
বিদ্যা = বিদ্ দা
দ্যুতি = দুতি
সহ্য = শোজ্ ঝো
বিদ্যুৎ = বিদ্ দুত


আরো দেখুন :
Post a Comment (0)
Previous Post Next Post