শীতের পিঠা
আমাদের সংস্কৃতিতে বিভিন্ন ধরনের পিঠা বিশেষ স্থান দখল করে আছে। পিঠা তৈরির ঐতিহ্যও আমাদের বহু পুরনো। বিভিন্ন ঋতুতে আমাদের দেশে বিভিন্ন রকমের পিঠা তৈরি হয়। তবে শীতের পিঠার চাহিদা বেশি। শীতকালে আমাদের দেশে বিভিন্ন রকমের পিঠা তৈরী হয়। গ্রামের বাড়িতে বাড়িতে যেন পিঠা তৈরির ধুম পড়ে যায়। শীতের সকালে ধোঁয়া-ওঠা গরম ভাপা পিঠা খুবই সুস্বাদু। যেসব পিঠা আমাদের খুব পরিচিত সেগুলো হলো- চিতই, দুধ চিতই, ম্যারা পিঠা, বড়াপিঠা ও পাটিসাপটা। এছাড়া দুধপুলি, ক্ষীরপুলি, চন্দ্রপুলি, মালপোয়া, আন্দেশা, এলাকেশী ও পাকোয়ান পিঠাও বেশ নাম রয়েছে। আমাদের দেশে নানা রকম নকশি পিঠাও তৈরি হয়। এসব পিঠায় আঁকা থাকে হরেক রকমের নকশা। খেজুর কাটা, মন-কাটা ও বাঁশের ছিলকা দিয়ে নকশা করা হয়। পিঠার গায়ে এসব নকশা ছবির মতো ফুঠে থাকে। নানা রকমের গাছের পাতা, কুঁড়েঘর, ঘুড়ি, পাখা আঁকা হয় পিঠার গায়ে। নকশি পিঠার নাম কাজল লতা, শঙখলতা, সাজনীবাহার, বানভাসি ও মেঘডুমুর। পাতা আঁকা পিঠার নাম হিজলপাতা, সজনেপাতা ও মইফুলি। সব বয়সের মানুষই পিঠা খেতে ভালোবাসে। পিঠা তৈরি করতেও গ্রামের বৌঝিরা আনন্দ পান। এজন্য শীতকালে বিভিন্ন রকম পিঠা বানিয়ে পাড়া-প্রতিবেশী ও আত্মীয় - স্বজনদের দাওয়াত করে খাওয়ান। এক এক রকম পিঠার এক এক রকম স্বাদ। কোন পিঠা শক্ত করে ভাজা হয়, কোনো পিঠা হয় নরম। আবার কোনো পিঠা মিষ্টি, কোনটা বা ঝাল। আমাদের দেশের গ্রামগুলোতে পিঠাপুলি তৈরি হয় বেশি। শহরের মানুষও পিঠা পছন্দ করে। আজকাল শহরে পিঠার দোকান রয়েছে যেখানে শীতকালে নানা ধরনের পিঠা পাওয়া যায়। পিঠা প্রদর্শনী বা পিঠা মেলারও আয়োজন হয় শহরে।
আরো দেখুন :