নারী দিবস
দীর্ঘদিনের বৈষম্যের পরাধীনতার বেড়াজাল ভেঙ্গে বর্তমানে নারী প্রতিবাদী চেতনায় উজ্জীবিত। ইতিহাসের পাতায় আন্দোলনের নতুন মাত্রা হিসেবেব যুক্ত হয়েছে। ১৯৭৫ সালে জাতিসংঘে ঘোষণার পর থেকে সারাবিশ্বে প্রতিবছর এ দিনটি পালিত হয়। আন্তর্জাতিক নারী দিবসের প্রেক্ষাপটে তৈরি হয়েছিল ১৮৫৭ সালে। অমানবিক পরিবেশ ও ১২ ঘন্টা কাজের বিরুদ্ধে নিউইয়র্ক শহরে নারী শ্রমিকরা প্রতিবাদের সূচনা করে। ১৮৫৭ সালের ৮ই মার্চ কারখানার মহিলা শ্রমিকরা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে আন্দোলনের কর্মসূচি হিসেবে শান্তিপূর্ণ মিছিল করলে পুলিশ মিছিলে হামলা চালায়। তিন বছর পর একই দিনে কারখানার মহিলা শ্রমিকরা ওকটি 'মহিলা শ্রমিক ইউনিয়ন' গঠন করে। সেই ধারাবাহিকতায় ১৯০৮ সালের ৮ই মার্চ আবার নিউইয়র্ক শহরে নারী শ্রমিকরা মিছিল বের করে। তারই প্রেক্ষিতে ১৯১০ সালের জার্মান সমাজতান্ত্রিক নেত্রী ক্লারা জেটকিন ৮ই মার্চকে আন্তর্জাতিক নারী দিবস পালনের প্রস্তাব দেন। তারপর থেকেই নারী সংগঠনগুলো আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে দিবসটি পালন করতে শুরু করে। কিন্তু দীর্ঘদিন বাদে জাতিসংঘ ১৯৭৫ সালে এ দিনটিকে নারী দিবসে স্বীকৃতি দেয়। বিশ্বের অন্যান্য দেশের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে আমাদের দেশেও সরকারি-বেসরকারিভাবে বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে 'নারী দিবস' পালন করা হয়। সমাজের প্রতিটি ক্ষেত্রে নারী-পুরুষের সমঅধিকার প্রতিষ্ঠা এবং তাদের যাবতীয় সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত করার মধ্যেই নারী দিবসের তাৎপর্য নিহিত। তাই দিনটিকে শুধু আনুষ্ঠানিকতার মধ্যে সীমাবদ্ধ না রেখে নারীর স্বাধীনতা ও সম্মান প্রতিষ্ঠায় সামগ্রিকভাবে গুরুত্ব দিলেই নারী দিবসের প্রকৃত তাৎপর্য যথার্থভাবে মূল্যায়িত হবে।