ভাবসম্প্রসারণ : ফ্যাশনটা হলো মুখোশ স্টাইলটা হলো মুখোশ্রী

ফ্যাশনটা হলো মুখোশ স্টাইলটা হলো মুখোশ্রী

মূলভাব : ফ্যাশন হলো মুখোশের মতো। কারণ এটি প্রকৃত রূপ বা সৌন্দর্যকে আড়াল করে রাখে। আর স্টাইল হলো মুখশ্রী। কারণ এর দ্বারা প্রকৃত রূপ-সৌন্দর্য তথা সত্তা আরও সৌন্দর্যমন্ডিত হয়ে ওঠে।

সম্প্রসারিত ভাব : মানুষ নতুনের পূজারি। আর নতুনকে বরণ করতে গিয়ে সে তার অঙ্গে ও পোশাকে নতুনত্ব আনয়ন করে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে এই নতুনত্ব পরিবর্তনশীল ও অভিনব, কখনো বা অসঙ্গতিপূর্ণ। আর মানুষের এই পরিবর্তনশীল, অভিনব ও অসঙ্গতিপূর্ণ সাজ সজ্জাও আঙ্গিক বাহ্যিক প্রকাশকে ফ্যাশন বলা হয়। মানুষ তার ফ্যাশনের মধ্যে অভিনবত্ব আনতে গিয়ে অহরহ এতে পরিবর্তন আনছে। আর অভিনব বিষয় বলে ফ্যাশনটা অনেক সময় সমাজের অন্য দশজন সচেতন মানুষের চাল-চলন ও সাজ সজ্জা ব্যাতিক্রম ধর্মী হয়ে থাকে। তাই অনেক ক্ষেত্রে ফ্যাশনটা একেবারে খাপছাড়া মনে হয়। এজন্যে পরিবর্তনশীল ও অভিনব অভিধার পাশাপাশি একে অসঙ্গতিপূর্ণ অভিধায়ও অভিহিত করা যায়। তাছাড়া ফ্যাশন অনেকটা অনুকরণ থেকে উৎসারিত। প্রায়ই এর স্বকীয়তা থাকে না। মুখোশের ন্যায় এটি যেন ব্যক্তির প্রকৃত রূপ ও সত্তাকে আড়াল করে রাখে। স্টাইল মানে রীতি বা পদ্ধতি। মানুষকে সব ক্ষেত্রেই রীতি-নীতি মেনে চলতে হয়। আর রীতি-নীতি অনুসরণের মধ্য দিয়ে মানুষের বিবেক, সচেতনতা, সৌন্দর্যবোধ, রুচি ও পরিবেশ-সচেতনতা প্রভৃতি দিক প্রকাশ পায়। কারণ পরিবেশ পরিস্থিতি বিবেচনা করে পোশাক-আশাক পরিধান এবং আঙ্গিক ও বাচিক উপস্থাপনার নামই স্টাইল। তাই বলা যায় যে, স্টাইল সচেতনতা মানুষকে যে কোনো পরিস্থিতির উপযোগী করে তোলে। মানুষের যথার্থতাও এর মধ্যে বহুলাংশে নিহিত। এককথায়- স্টাইল বলতে কারও অন্ধ অনুকরণ বোঝায় না। এটা একান্তই আপন রুচি ও সৌন্দর্য -ভাবনা নির্মিত হয়। স্টাইল ফ্যাশন সৃষ্টি করে, কিন্তু ফ্যাশন অনুকরণ হয়।

মন্তব্য : ফ্যাশন আরোপিত। আর স্টাইল হলো মানুষের স্বরূপ প্রকাশের শ্রেষ্ঠ মাধ্যম। তাই মানুষের উচিত স্টাইল অর্জন করে ফ্যাশন সৃষ্টি করা অন্যথায় ফ্যাশন কেবল মুখোশ হয়ে থাকবে, তাতে স্বরূপ প্রতিফলিত হবে না।
إرسال تعليق (0)
أحدث أقدم