দ্বিতীয় অ্যাসাইনমেন্ট
অর্থনীতি (২য় পত্র)
৪র্থ সপ্তাহ
বাংলাদেশের কৃষিপণ্যের বিপণন ব্যবস্থাই কৃষি খাতের উন্নয়নের অন্যতম অন্তরায়
নমুনা সমাধান
ক) কৃষি পণ্যের বিপণন ধারণা : কৃষিপণ্যের বিপণন তথা বাজারজাতকরণ ব্যৰ হলাে এমন একটিঅর্থনৈতিক প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে উৎপাদিত কৃষিপণ্য উৎপাদনকারী কাছ থেকে চূড়ান্ত ভােক্তার কাছে পৌঁছায় এ প্রক্রিয়ায় বিভিন্ন কর্মস্তর অতিক্রম করতে হয়। এগুলাে হলাে: উৎপাদন শেষে পণ্য সংগ্রহ ও একত্রকরণ পণ্যের শ্রেণিবি ও নমুনাকরণ,গুদামজাতকরণ পরিবহন, ঝুঁকি বহন, বিজ্ঞাপন প্রদান, বাজার সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ, বণ্টন, বিক্রয় ইত্যাদি এগুলাে এগুলাে সুষ্ঠুভাবে সম্পাদিত হলে কৃষকরা পণ্যের উপযুক্ত দাম পায় এবং ভােক্তা সাধারণও তা যুক্তিসংগত দামে ক্রয় করতে পারে। কৃষিতে পণ্যের বিপণন ব্যবস্থার বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
খ) কৃষি পণ্যের বিপণন ব্যবস্থা : বাংলাদেশ একটি কৃষিপ্রধান দেশ হলেও এখানে কৃষিপণ্যের বিপণন তথা বাজারব্যবস্থা অনুন্নত, অসংগঠিত ও ত্রুটিপূর্ণ। আর্থিক অবস্থা দুর্বল থাকায় বেশিরভাগ কৃষক তাদের উৎপাদিত পণ্য মৌসুমের শুরুতেই অত্যন্ত কম দামে গ্রামের হাট-বাজারে বিক্রি করে দেন। অনেক সময় ফসল ক্ষেতে থাকা অবস্থায়ই আগাম বিক্রি করা হয়। ফড়িয়ারা তা কিনে উপজেল সদর -বন্দর ও ছােট শহরগুলাের পাইকার , আড়তদার, মহাজন ইত্যাদি মধ্যসত্বভােগীদের কাছে কিছু লাভে বিক্রি করেন। এরা আবার তাদের ক্রয়কত পণ্য।
গুদামজাত করেন এবং শহর ও বন্দরে চূড়ান্ত পর্যায়ের কাছে বিক্রি করেন। পণ্য বিপণ নর সমগ্র প্রক্রিয়ায় ধাপে ধাপে তার দাম বাড়তে থাকে কৃষকরা যে দামে তার পণ্য বিক্রয় করেন তার চেয়ে অনেক বেশি দামে ভােক্তারা ক্রয় করেন। এ প্রক্রিয়ায় অর্জিত মুনাফার সিংহভাগ মধ্যস্বত্বভােগীদের হস্তগত হয় কৃষক ও উভয়ই ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
গ) বাংলাদেশে কৃষিপণ্য বিপণনের সমস্যা সমূহ : বাংলাদেশের কৃষকরা নানা ধরনের সমস্যার মধ্যেও অক্লান্ত পরিশ্রম করে যে পণ্য উৎপাদন করেন তার উপযুক্ত দাম পান না ব্যবস্থায় বিদ্যমান বিভিন্ন সমস্যা এজন্য দায়ী। সমস্যা :
১. পণ্যের নিম্নমান এবং পণ্যের শ্রেণিবিভাগ ও নমুনাকরণের অভাব : দেশের সকল স্থানে উৎপাদিত কবি ষিপণ্যের মান একরূপ নয়। নিম্নমানের বীজ, উৎপাদনকালে প্রাকৃতিক বিপর্যয়, কীট পতঙ্গের আক্রমণ, সংরক্ষণের অভাব ইত্যাদি কারণে গুনগত মান নিম হয় ।তাছাড়া পণ্যেৰ সুষ্ঠু শ্রেণিবিভাগ মান নির্ধারণ ও শনাক্তকরণের অভাবেও কৃষকরা পণ্যের।
২. কৃষকের দরিদ্রতা : এদেশের কৃষকরা দারিদ্রের কারণে কৃষিপণ্য গুদামজাত বা সংরক্ষণ না করে ফসল ওঠার পরপরই তা বিক্রি করে দেন। ফলে তারা কৃষিপণ্যের উপযুক্ত দাম পায় না।
৩. অপ্রতুল বাজার সুবিধা : বেশিরভাগ কৃষিজাত পণ্যদ্রব্য গ্রামীণ প্রাথমিক বাজারে কেনাবেচা হয়। এ বাজারে ভৌত অবকাঠামাে খুবই দুর্বল। তাছাড়া টোল চাঁদা দেওয়ার কারণে কৃষকরা পণ্যদ্রব্য বিক্রি করে ন্যায্য দাম পায় না।
৪. দামের উত্থান-পতন : বাংলাদেশে কৃষিপণ্যের দাম খুব বেশি ওঠানামা করে। ফসল ওঠার মৌসুমে দাম কম থাকে আবার মৌসুম শেষে দাম যখন বেড়ে যায় তখন কৃষকের কাছে বিক্রয়যােগ্য কোন পণ্য থাকে না। এজন্যও তারা ক্ষতিগ্রস্ত হন।
৫. কৃষিপণ্যের বাজার সম্পর্কে অজ্ঞতা : বাংলাদেশের কৃষিপণ্যের বাজারগুলাে পরস্পর থেকে বিচ্ছিন্ন। এজন্য পণ্য কোনাে বাজারে চড়া দামে এবং কোনাে বাজারে কম দামে বিক্রি হয়। এতে কম দামের বাজারের বিক্রেতা কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত হন।
৬. বিপণন ঋণের অভাব : কৃষিপণ্য বিপণনের বিভিন্ন পর্যায় যেমন-সংরক্ষণ, পরিবহন, প্রক্রিয়াকরণ ইত্যাদি ক্ষত্রে অর্থের প্রয়ােজন হয়। কিন্তু কৃষকদের জন্য এরূপ ব্যবস্থা নেই কিংবা থাকলেও তা প্রয়ােজনের তুলনায় অনেক কম।
৭. অনুন্নত পরিবহন ব্যবস্থা : বিশেষ করে প্রত্যন্ত এলাকায় কৃষকরা অনুন্নত পরিবহন ব্যবস্থার জন্য তাদের উৎপাদিত পণ্য শহরে বা বড় বাণিজ্যিক কেন্দ্রে নিয়ে বেশি দামে বিক্রি করতে পারে না। তারা বাড়িতেই বা গ্রামের হাট বাজারে কম দামে মধ্যস্বত্বভােগীদের কাছে পণ্য বিক্রি করেন। ফলে কৃষকরা কৃষিপণ্যের উপযুক্ত দাম পান না ।
৮. মধ্যবর্তী ব্যবসায়ীদের অস্তিত্ব : কৃষিপণ্য বাজারজাতকরণ প্রক্রিয়ায় দালাল, ফড়িয়া, বেপারি, মজুতদার আড়তদার ইত্যাদি ধরনের মধ্যবর্তী ব্যবসায়ী শ্রেণির অস্তিত্ব আছে। এই ধ্যবর্তী সায়ীদের জন্যই কৃষক পণ্যের যে দাম পান এবং সর্বশেষ ভােক্তা যে দেন তার মধ্যে অনেক ব্যবধান থাকে। ফলে কৃষক ন্যায্য মূল্য পায়।
৯. গুদামজাতকরণ ও সংরক্ষণের অসুবিধা : দরিদ্র কৃষকদের কৃষিপণ্য সংরক্ষণের জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণে গুদামঘর, হিমাগার ইত্যাদি নেই। এ কারণে তারা ফসল তােলার মৌসুমের শুরু থেকেই কম দামে পণ্য বিক্রি করতে বাধ্য হন।
১০. ত্রুটিপূর্ণ ওজন ও পরিমাপ ব্যবস্থা : বাংলাদেশে বিভিন্ন প্রকারের ওজন ও পরিমাপ ব্যবস্থা প্রচলিত আছে। অনেক ক্ষেত্রে এগুলাে ত্রুটিপূর্ণ ও প্রতারণারমাধ্যম। ফলে কৃষকরা প্রায়ই ক্ষতির প্লিকার হন।
ঘ) কৃষিপণ্য বিপণন সমস্যা সমাধানে রাষ্ট্রের ভূমিকা : কৃষিপ্রধান বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন অনেকাংশেই কৃষি উন্নয়নের ওপর নির্ভরশীল। কবি ণ্যের সুষ্ঠু বিপণন ব্যবস্থা কৃষি উন্নয়নের অন্যতম পূর্বশর্ত ষ খাতে বিনিয়ােগ বৃদ্ধি , আধুনিক পদ্ধতির চাষাবাদ কার্যক্রম জোরদার করা, বাণ্যিজিক চাষাবাদের প্রসার, কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি , কৃষিপণ্যের সুষম যােগান ও রপ্তানি বৃদ্ধি ইত্যাদি সুবিধা কৃষিপণ্যের উন্নত বিপণন ব্যবস্থার মাধ্যমেই অর্জিত হয়। এ কারণে বলা যায় , কৃষিপণ্যের সুষ্ঠু বিপণন ব্যবস্থা নিশ্চিত করা না গেলে কৃষি উন্নয়নে তথা অর্থনৈতিক উন্নয়নের গতি ব্যাহত হবে। বাংলাদেশে কৃষিপণ্যের নিম্নমান, কষকদের দারিদ্র, বিপণন ব্যবস্থায় মধ্যস্বত্বভােগীদের দৌরাত্ম, অনুন্নত পরিবহন ব্যবস্থা, অসংগঠিত কৃষি বাজার ব্যবস্থা, পণ্য গুদামজাতকরণ ও সংরক্ষণ ব্যবস্থায় ঘাটতি, পণ্যের দামের ব্যাপক উত্থান-পতন ইত্যাদি সমস্যা কৃষিপণ্যের সুষ্ঠু বিপণনের ক্ষেত্রে অন্তরায় হয়ে আছে। কৃষকদের ব্যক্তিগত উদ্যোগ তার সমাধান সম্ভব নয়। একমাত্র রাষ্ট্রের সক্রিয় অংশগ্রহণের মাধ্যমেই পণ্য বিপণনের সমস্যাগুলাে দূর করে কৃষি উন্নয়নের পথ প্রশস্ত করা সম্ভব। কৃষিপণ্যের বিপণন সম্যাসা সমাধানের জন্য বিপুল মূলধনের প্রয়ােজন হয় এবং এ থেকে সরাসরি কোনাে মুনাফা পাওয়া যায় না বলে এক্ষেত্রে ব্যক্তিগত উদ্যোগ দেখা যায় না। তাই এ ব্যাপরে রাষ্ট্রকেই এগিয়ে আসতে হবে।
ঙ) সরকারের কৃষি বিপণন নীতি :
বাংলাদেশের কৃষি বিপণনের নীতি নিম্নরূপে বর্ণনা করা যায়। যেমন-
১. বাজার ব্যবস্থার উন্নয়ন : কৃষিপণ্যের বাজার ব্যবস্থার উন্নয়নের জন্য কতিপয় কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। এদের মধ্যে কৃষিপণ্যের শ্রেনিবিন্যাস ও নমুনাকরণ, পাইকারি বাজার উন্নয়ন, কৃষি প্রক্রিয়াজাত শিল্প স্থাপন ইত্যাদি উল্লেখযােগ্য।
২. বাজার নিয়ন্ত্রণ : কৃষিপণ্যের বাজার নিয়ন্ত্রণের দায়িত্বে নিয়ােজিত আছে। কৃষি বিপণন বিভাগ। এটা কৃষি মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ একটি বিভাগ। বাংলাদেশে প্রায় ২৪,০০০ টি প্রাথমিক ও দ্বিতীয় পর্যায়ের কৃষিপণ্যের বাজার আছে।
৩. মূল্য স্থিতিশীলকরণ : কৃষি বিপণন বিভাগের মাধ্যমে মূল্য স্থিতিশীল করণের উদ্দেশ্যে শস্য ক্রয় ও বিক্রয়ের কর্মসূচি রয়েছে। ফসল কাটার মৌসুমে সরকার নির্দিষ্ট দামে শস্যক্রয় করে। আবার বাজারে খাদ্যশস্যের দাম বেশি বৃদ্ধি পাওয়ার আশংকা দেখা দিলে তা দামে খােলা বাজারে বিক্রি করা হয়। সুষ্ঠুভাবে মূল্য স্থিতিশীলকর লক্ষ্যে সরকার কৃষি মূল্য কমিশন নামে একটি কর্তৃপক্ষ করেছে।
প্রথম অ্যাসাইনমেন্ট
অর্থনীতি (১ম পত্র)
১ম সপ্তাহ
একজন ভোক্তা মোট ৭ একক দ্রব্য ভোগের ক্ষেত্রে প্রথম, তৃতীয়, পঞ্চম ও সপ্তম একক ভোগের ক্ষেত্রে মোট উপযোগ যথাক্রমে ১২, ৩০, ৪০ ও ৪২ একক এবং দ্বিতীয় চতুর্থ ও ষষ্ঠ একক ভোগের ক্ষেত্রে প্রান্তিক উপযোগ যথাক্রমে ১০, ৬ ও ২ একক হয়। প্রদত্ত তথ্য ব্যবহার করে পূর্ণাঙ্গ সূচি প্রণয়ন সাপেক্ষে পাঠ্যপুস্তকের সংশ্লিষ্ট বিধিটি ব্যতিক্রমসহ রেখাচিত্রের সাহায্যে উপস্থাপন কর।
নির্দেশনা :
- উপযোগের ধারণা।
- মোট উপযোগ ও প্রান্তিক উপযোগের সম্পর্ক।
- ক্রমহ্রাসমান প্রান্তিক উপযোগ বিধি।
- ক্রমহ্রাসমান প্রান্তিক উপযোগ বিধির ব্যতিক্রম।
নমুনা সমাধান
প্রদত্ত তথ্য ব্যবহার করে পূর্ণাঙ্গ সূচি প্রস্তুত সাপেক্ষে পাঠ্যপুস্তকের সংশ্লিষ্ট বিধিটি ব্যতিক্রম সহ লেখচিত্রের উপস্থাপন:
ক) উপযােগের ধারণা : সাধারণ অর্থে উপযােগ বলতে উপকারিতা কে বুঝায়। কিন্তু অর্থনীতিতে উপযােগ বলতে কোনো দ্রব্য বা সেবার ওই বিশেষ মানকে বুঝায়, যা দ্বারা মানুষের বিশেষ অভাব মেটানাে সম্ভব হয়। উপযােগ একটি মনস্তাত্ত্বিক ব্যাপার হলেও অর্থনীতিতে উপযােগ্য সংখ্যা দ্বারা প্রকাশ করা হয়। হিসাবের সুবিধার্থে উপযােগ কে নিম্নোক্ত ভাগে ভাগ করা যায়।
১) মােট উপযােগ : কোনো নির্দিষ্ট সময়ে, একটি দ্রব্যের বিভিন্ন একক ভােগ থেকে প্রাপ্ত উপযােগের সমষ্টিকে মােট উপযােগ (TU) বলা হয়।
২) গড় উপযােগ : মােট উপযােগকে ভােগের সংখ্যা দ্বারা ভাগ করা হলে প্রাপ্ত ফলাফলকে গড় উপযােগ (AU) বলা হয়।
৩) প্রান্তিক উপযােগ : ভােগের পরিবর্তনের ফলে মােট উপযােগ এর পরিবর্তনের হারকে প্রান্তিক উপযােগ (MU) বলা হয়। অন্যভাবে বলা যায়, প্রতি একক ভােগের পরিবর্তনের ফলে মােট উপযােগ এর যে পরিবর্তন হয় তার হারকে প্রান্তিক উপযােগ বলা হয়।
খ) মােট উপযােগ ও প্রান্তিক উপযােগের সম্পর্ক : কোনো দ্রব্যের বিভিন্ন একক হতে প্রাপ্ত উপযােগের সমষ্টিকে মােট উপযােগ বলা হয়। পক্ষান্তরে, কোনো ভােগ এক একক বৃদ্ধির ফলে যে বাড়তি বা অতিরিক্ত উপযােগ পাওয়া যায় তাকে প্রান্তিক উপযােগ বলা হয়। নিম্নে মােট উপযােগ ও প্রান্তিক উপযােগের মধ্যে সম্পর্ক আলােচনা করা হলাে।
১) যদি মােট উপযােগ ক্রমবর্ধমান হারে বাড়ে : যদি মােট উপযােগ ক্রমবর্ধমান হারে বাড়ে তাহলে প্রান্তিক উপযােগ বাড়বে ফলে প্রান্তিক উপযােগ রেখা ঊর্ধ্বগামী হবে।
ভোগের একক | মোট উপযোগ | প্রান্তিক উপযোগ |
---|---|---|
১ একক | ১ একক | ১ একক |
২ একক | ৩ একক | ২ একক |
৩ একক | ৬ একক | ৩ একক |
চিত্রে ভুমি অক্ষে ভোগের একক এবং লম্ব অক্ষে মােট উপযােগ / প্রান্তিক উপযােগ ধরা হয়েছে। উপরের অংশে মোট উপযােগ রেখা এবং নিচের অংশে প্রান্তিক উপযোগ রেখা অঙ্কন করা হয়েছে।
২) যদি মােট উপযােগ স্থির হারে বাড়ে : যদি মােট উপযােগ স্থির হারে বাড়ে, তবে প্রান্তিক উপযােগ স্থির থাকবে। এক্ষেত্রে প্রান্তিক উপযােগ রেখা ভূমি অক্ষের সমান্তরাল হবে।
ভোগের একক | মোট উপযোগ | প্রান্তিক উপযোগ |
---|---|---|
১ একক | ৬ একক | ৩ একক |
২ একক | ৩ একক | ২ একক |
৩ একক | ৯ একক | ৩ একক |
চিত্রে ভূমি অক্ষে ভােগের একক এবং লম্ব অক্ষে মােট উপযােগ / প্রান্তিক উপযােগ ধরা হয়েছে। উপরের অংশে মােট উপযােগ রেখা এবং নিচের অংশে প্রান্তিক উপযােগ রেখা অঙ্কন করা হয়েছে।
৩) যদি মােট উপযােগ ক্রমহ্রাসমান হারে বাড়ে : যদি মােট উপযােগ ক্রমহ্রাসমান হারে বাড়ে, তবে প্রান্তিক উপযােগ হ্রাস পায়। এক্ষেত্রে প্রান্তিক উপযােগ রেখা নিম্নগামী হবে।
ভোগের একক | মোট উপযোগ | প্রান্তিক উপযোগ |
---|---|---|
১ একক | ৪ একক | ৪ একক |
২ একক | ৭ একক | ৩ একক |
৩ একক | ৯ একক | ২ একক |
৪ একক | ১০ একক | ১ একক |
৫ একক | ১০ একক | ০ একক |
৬ একক | ৯ একক | -১ একক |
চিত্রে ভূমি অক্ষে ভােগের একক এবং লম্ব অক্ষে মােট উপযােগ / প্রান্তিক উপযােগ
ধরা হয়েছে। উপরের অংশে মােট উপযােগ রেখা এবং নিচের অংশে প্রান্তিক উপযোগ রেখা
অঙ্কন করা হয়েছে।
গ) ক্রমহ্রাসমান প্রান্তিক উপযােগ বিধি সুচি, চিত্র ও ব্যাখ্যা : অন্যান্য
অবস্থা স্থির থেকে, কোনাে নির্দিষ্ট সময়ে কোনাে ব্যক্তি যখন একই দ্রব্য
ক্রমাগত ভাবে ভােগ করতে থাকে, তখন ঐ দ্রব্যের মােট উপযােগ বৃদ্ধি পেলেও
প্রান্তিক উপযােগ ক্রমশ হ্রাস পায়। অর্থাৎ ভােগের এককপ্রতি বৃদ্ধি ও
প্রান্তিক উপযােগ ক্রমান্বয়ে হ্রাস এ দুয়ের সম্পর্ককে অর্থনীতিতে
ক্রমহ্রাসমান প্রান্তিক উপযােগ বিধি বলে।অধ্যাপক আলফ্রেড মার্শাল ১৯৮০ সালে তার
বিখ্যাত গ্রন্থ ‘Principal of Economics’ -এ বলেন, কোন বিশেষ দ্রব্যের মজুত
বৃদ্ধির ফলে কোনাে ব্যক্তি যে অতিরিক্ত উপযােগ লাভ করে তা মজুত বৃদ্ধির সাথে
সাথে ক্রমশ হ্রাস পেতে থাকে।
অনুমিত শর্ত : ক্রমহ্রাসমান প্রান্তিক উপযােগ বিধিটি নিম্নোক্ত অনুমিত শর্তের
উপর প্রতিষ্ঠিত;
১) উপযােগের পরিমানগত পরিমাপ সম্ভব।
২) ভােক্তার পছন্দ, আয় অপরিবর্তিত।
৩) ভােক্তা যুক্তিশীল।
৪) উপযােগ অর্থের মাধ্যমে প্রকাশ করা যায়।
৫) অর্থের প্রান্তিক উপযােগ স্থির।
৬) নির্দিষ্ট সময় বিবেচ্য।
৭) দ্রব্যের বিভিন্ন একক সমজাতীয় হবে।
৮) দ্রব্যটি বিভিন্ন এককে বিভাজ্য হবে এবং ভােগের একক পর্যাপ্ত।
সূচির মাধ্যমে ক্রমহ্রাসমান প্রান্তিক উপযােগ বিধিটির ব্যাখ্যা
ভোগের একক | মোট উপযোগ | প্রান্তিক উপযোগ |
---|---|---|
১ম | ১২ একক | ১২ একক |
২য় | ২২ একক | ১০ একক |
৩য় | ৩০ একক | ৮ একক |
৪র্থ | ৩৬ একক | ৬ একক |
৫ম | ৪০ একক | ৪ একক |
৬ষ্ঠ | ৪২ একক | ২ একক |
৭ম | ৪২ একক | ০ একক |
চিত্রে ভূমি অক্ষে ভােগের পরিমাণ এবং লম্ব অক্ষে মােট উপযােগ ও প্রান্তিক উপযােগ ধরা হয়েছে। বিভিন্ন ভােগের এককের ফলে প্রাপ্ত মােট ও প্রান্তিক উপযােগ গুলাের মাধ্যমে মােট উপযােগ ও প্রান্তিক উপযােগ রেখা অংকন করি। দেখা যাচ্ছে যে মােট উপযােগ রেখা প্রথমে ক্রমবর্ধমান হলেও পরবর্তীতে তা আস্তে আস্তে ক্রমহ্রাসমান হয়ে এক সময় তা নিচের দিকে চলে এসেছে। অন্যদিকে প্রান্তিক উপযােগ রেখা বাম থেকে ডানে নিম্নগামী। এর মাধ্যমে বােঝা যায় যে, প্রান্তিক উপযােগ ক্রমহ্রাসমান। এটাই হলাে ক্রমহ্রাসমান প্রান্তিক উপযােগ বিধির চিত্রিত রূপ।
ঘ) ক্রমহ্রাসমান প্রান্তিক উপযােগ বিধির ব্যতিক্রম সমূহ :
ক) সময়ের ব্যবধান : দ্রব্য ভােগের বিভিন্ন একক এর মধ্যে সময়ের ব্যবধান থাকলে এই বিধি কার্যকর হয় না।
খ) উপযুক্ত একক : দ্রব্য ভােগের প্রাথমিক একক অপর্যাপ্ত হলে এ বিধিটি কার্যকর হবে না।
গ) পরিবর্তনীয়তা : ভােক্তার অভ্যাস, রুচি, পছন্দ ইত্যাদি যেকোনাে একটি পরিবর্তন হলে এই বিধিটি কার্যকর হয় না।
ঘ) শখের দ্রব্য: শখের দ্রব্য যেমন : ডাকটিকেট, মুদ্রা, ছবি ইত্যাদির ক্ষেত্রে এই বিধিটি কার্যকর হয় না।
ঙ) আয় এর পরিবর্তন : নির্দিষ্ট সময়ে আয়ের পরিবর্তন হলে এই বিধিটি কার্যকর হয় না।
চ) বিলাস দ্রব্য : বিলাসবহুল দ্রব্যের ক্ষেত্রে এই বিধিটি কার্যকর হয় না।
ছ) ভােক্তার যুক্তিশীলতা : ভােক্তা যদি যুক্তিশীল আচরণ না করে তবে এই বিধিটি কার্যকর হয়।
ক্রমহ্রাসমান প্রান্তিক উপযােগ বিধিটি চাহিদা তত্ত্বের ভিত্তি হিসেবে কাজ করে। কাজেই বলা যায়, কিছু ব্যতিক্রম থাকার পরেও এই তত্বের গুরুত্ব অপরিসীম।
এটা লিখলে কি ফুল নাম্বার পাওয়া যাবে?
ReplyDeletefull
Deleteঅবশ্যই পাবেন।
Delete