বাংলাদেশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের বর্ণনা দিয়ে বিদেশি বন্ধুকে পত্র

বাংলাদেশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের বর্ণনা দিয়ে তোমার কোনো বিদেশি বন্ধুর নিকট পত্র লেখো।


রংপুর, বাংলাদেশ 
২০শে মার্চ ২০১৫

প্রিয় রিচার্ড, 
আমার শুভেচ্ছা নিও। অনেকদিন পর গতকাল তোমার চিঠি পেলাম। আমার কাছে লেখা এটি তোমার চিঠি। শুনে ভালো লাগলো তুমি বাংলা পড়তে পারো। তাই এ চিঠি বাংলায় লিখছি। এতদিনের চিঠিতে শুধুই জানতে চেয়েছ আমার সম্পর্কে, আর এই প্রথম কি না জানতে চাইলে আমার দেশ, আমার দেশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য নিয়ে তোমার আগ্রহ আমাকে অনুপ্রাণিত করছে অনেক কিছু লিখবার। কিন্তু বাংলার এ অপূর্ব প্রাকৃতিক দৃশ্য ভাষায় আর কতটুকু বা ফুটিয়ে তোলা যায়।

তুমি মানচিত্রে নিশ্চয় খেয়াল করেছো বাংলাদেশ বিশ্বের বৃহত্তম ব-দ্বীপ। আমাদের দেশের মতো এমন সুন্দর দেশ বিশ্বে কী আর কোথাও আছে। ষড়ঋতুর এদেশ একেক সময় একেক রকমভাবে সজ্জিত হয়। একেক ঋতুর ফুল একেক রকম। এদেশের সব জেলাতেই ছড়িয়ে আছে নদী। যেন নদীর বুকেই এদেশ ভাসমান। অসংখ্য খালবিল, নদীতে জেলের মাছ ধরার নৌকা আর পাল তুলে মাঝির দাঁড় টানার দৃশ্য যে কী অপূর্ব হতে পারে তা নিজে না দেখে বিশ্বাস করা যায় না। এছাড়া বাংলাদেশের যে দিকেই তাকাও- শুধু সবুজ আর সবুজ। প্রকৃতি যেন নিজ হাতে প্রাণভরে দান করেছে এই তারুণ্যের প্রতীক ফসল তোলার সময়ে এ সবুজ মাঠ রূপান্তরিত হয় সোনালি প্রান্তরে। মাঠে মাঠে ছড়িয়ে থাকে সোনা আর সোনা। তুমি তো জানো, পৃথিবীর দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত এদেশেই অবস্থিত। বিশাল এই সমুদ্রের তীরে দাঁড়ালে পার্থিব ক্ষণস্থায়ী জীবন যেন হঠাৎ করে হোচট খায়। আর রয়েছে পাহাড়ি শহর সিলেট। এখানে শ্রীপুর নামে একটা জায়গা রয়েছে, যা শিলং পাহাড়ের খুব কাছাকাছি। এশিয়ান হাইওয়ে যখন পাহাড়ের উদ্দেশ্যে চলে তখন মনে হয়- আর কিছুক্ষনের মধ্যেই আকাশ ছুঁয়ে যাব। শ্রী মঙ্গলে রয়েছে একটি জলপ্রপাত- মাধবকুণ্ড। সুউচ্চ পাহাড়ের চূড়া থেকে যখন ভীষণ স্রোতে জল পড়ে তখন তা দেখে কোনো আগুন্তুক বিমোহিত না হয়ে পারেন না। শুধু প্রাকৃতিক নয়, বরং অনেক ঐতিহাসিক স্থানেও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ। শীতের অতিথি পাখিরা যখন শীতের চাঁদরমোড়া বাংলায় আসে তখন যে কী ভালো লাগে।

আচ্ছা বন্ধু, একবার বেড়াতে এসো না, এ প্রকৃতির কন্যার কোলে! নিশ্চয়ই মজা হবে। আজ এখানেই থাক। আরেকদিন লিখব তোমাকে।

ইতি 
তোমার বন্ধু
ফারাহ ইয়াসমিন



এতই চিঠি আরেকবার সংগ্রহ করে দেওয়া হলো


বাংলাদেশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের বর্ণনা দিয়ে তোমার কোনো বিদেশি বন্ধুর নিকট একটি চিঠি লেখ।


মগবাজার, ঢাকা
১১ অক্টোবর, ২০২১

প্রিয় অপুর্ব,
প্রথমে আমার প্রীতি ও শুভেচ্ছা নিও। আশা করি ভালো আছো। তোমাদের বাড়ি কলকাতা থেকে ঘুরে বাংলাদেশে আসার পর পড়ালেখার ব্যস্ততার কারণে আর চিঠি লিখার সুযোগ হয়ে উঠেনি। গত সপ্তাহে তোমার লেখা চিঠি পেলাম। তোমাকে বাংলাদেশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দেখে যাওয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানাচ্ছি এবং চিঠিতে তুমিও বাংলাদেশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য সম্পর্কে জানতে চেয়েছো। সত্যিই সুজলা, সুফলা, শস্য-শ্যামলে পরিপূর্ণ আমাদের বাংলাদেশ। নদী, সাগর, পাহাড়, গাছপালার গভীর মিতালি যেন আমাদের এ দেশ। এখানে একেক ঋতুতে প্রকৃতি এক এক রূপ বৈশিষ্ট্য নিয়ে আবির্ভূত হয়। পৃথিবীখ্যাত কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতসহ কুয়াকাটার সৌন্দর্য সত্যিই মনোমুগ্ধকর। এখানে সকাল ও সন্ধ্যায় সূর্য উদয় ও সূর্যাস্তের মোহনীয় দৃশ্য দেখে মনে হয় সূর্য সাগর হতে উত্থিত হয় আবার যেন সাগরেই ঢুবে যায়। অন্যদিকে গাছপালায় পরিপূর্ণ পাহাড়ি অঞ্চলের ঝর্ণার রূপ, পাহাড়ের হাতছানি প্রত্যেক প্রকৃতিপ্রেমী মানুষকে কাছে টানে। নদীমাতৃক এ বাংলাদেশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য সত্যিই অবর্ণনীয়। বলতে গেলে পল্লির আনাচে-কানাচে রয়েছে সৌন্দর্যের অপরূপ ভাণ্ডার। সম্ভব হলে তুমিও একবার এসো। তোমাকে আমাদের বাড়িতে এসে বাংলাদেশ ঘুরে দেখার আমন্ত্রণ জানিয়ে আজ এখানেই শেষ করছি। ভালো থেকো।

ইতি,
তোমার বন্ধু
অনিক



4 Comments

Post a Comment
Previous Post Next Post