SSC 2021 : পৌরনীতি ও নাগরিকতা : অ্যাসাইনমেন্ট

দ্বিতীয় অ্যাসাইনমেন্ট
অধ্যায় ০১
পৌরনীতি ও নাগরিকতা
৪র্থ সপ্তাহ

রাষ্ট্র ও রাষ্ট্রের উপাদান, রাষ্ট্রের উৎপত্তি সংক্রান্ত মতবাদ এবং রাষ্ট্র ও সরকারের সম্পর্ক বিশ্লেষণ।

নমুনা সমাধান

(ক) রাষ্ট্র : রাষ্ট্র একটি রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান। বিশ্বের মানুষ কোনো না কোনো রাষ্ট্রে বসবাস করে। আমাদের এই পৃথিবীতে ছোট বড় মিলিয়ে প্রায় ২০০ টি রাষ্ট্র আছে। প্রতিটি রাষ্ট্রেরই আছে নির্দিষ্ট ভূখণ্ড এবং জনসংখ্যা। এ ছাড়া রাষ্ট্র পরিচালনার জন্য আরও আছে সরকার এবং সার্বভৌমত্ব। মূলত এগুলো ছাড়া কোনো রাষ্ট্র গঠিত হতে পারে না।

অধ্যাপক গার্নার বলেন, সুনির্দিষ্ট ভূখণ্ডে স্থায়ীভাবে বসবাসকারী, সুসংগঠিত সরকারের প্রতি স্বভাবজাতভাবে আনুগত্যশীল, বহিঃশত্রুর জনসমষ্টিকে রাষ্ট্র বলে।

রাষ্ট্রের উপাদান ৪ টি যথা:
১। জনসমষ্টি,
২। রাষ্ট্র
৩। সরকার ও
৪। সার্বভৌমত্ব

নিম্মে রাষ্ট্রের চারটি উপাদানের ব্যাখ্যা প্রদান করা হলো :
১. জনসমষ্টি : রাষ্ট্র গঠনের অপরিহার্য উপাদান জনসমষ্টি। কোনো ভূখণ্ডে একটি জনগোষ্ঠী স্থায়ীভাবে বসবাস করলেই রাষ্ট্র গঠিত হতে পারে। তবে একটি রাষ্ট্র গঠনের জন্য কী পরিমাণ জনসমষ্টি  প্রয়োজন, এর কোনো সুনির্দিষ্ট নিয়ম নেই।

২. নির্দিষ্ট ভূখণ্ড : রাষ্ট্র গঠনের জন্য নির্দিষ্ট ভূখণ্ড আবশ্যক। ভূখণ্ড বলতে একটি রাষ্ট্রের স্থলভাগ, জলভাগ ও আকাশসীমাকে বোঝায়। রাষ্ট্রের ভূখণ্ড ছোট বা বড় হতে পারে।

৩. সরকার : রাষ্ট্রের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান সরকার। সরকার ছাড়া রাষ্ট্র গঠিত হতে পারে না। রাষ্ট্রের যাবতীয় কার্যাবলি সরকারের মাধ্যমে পরিচালিত হয়। সরকার গঠিত হয়  তিনটি  বিভাগ নিয়ে। যথা :
১. আইন বিভাগ,
২. শাসন বিভাগ ও
৩. বিচার বিভাগ।

৪. সার্বভৌমত্ব : সার্বভৌমত্ব রাষ্ট্র গঠনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও অত্যাবশ্যকীয় উপাদান। এটি রাষ্ট্রের চরম, পরম ও সর্বোচ্চ ক্ষমতা। এর দু'টি দিক রয়েছে, যথা- অভ্যন্তরীণ ও বাহ্যিক সার্বভৌমত্ব অভ্যন্তরীণ সার্বভৌমত্বের সাহায্যে রাষ্ট্র দেশের অভ্যন্তরে বিভিন্ন আদেশ-নির্দেশ জারির মাধ্যমে ব্যক্তি ও সংস্থার উপর কর্তৃত্ব করে। অন্যদিকে, বাহ্যিক সার্বভৌমত্বের মাধ্যমে রাষ্ট্র বহিঃশক্তির নিয়ন্ত্রণ থেকে দেশকে মুক্ত রাখে।

অতএব, আমরা বলতে পারি যে, জনসমষ্টি, নির্দিষ্ট ভূখণ্ড, সরকার ও সার্বভৌমত্ব ছাড়া কোন গঠিত হতে পারে না।

(খ) রাষ্ট্রের উৎপত্তি : রাষ্ট্র কখন ও কীভাবে উৎপত্তি লাভ করেছে তা নিশ্চিত করে বলা কঠিন। তবে রাষ্ট্রবিজ্ঞানীরা অতীত ইতিহাস ও রাজনৈতিক ঘটনাপ্রবাহ পরীক্ষা-নীরিক্ষা করে রাষ্ট্রের উৎপত্তি সম্পর্কে কতগুলো মতবাদ প্রদান করেছেন। তন্মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো:
১। ঐশী মতবাদ,
২। বল বা শক্তি প্রয়োগ মতবাদ,
৩। সামাজিক চুক্তি মতবাদ ও
৪৷ ঐতিহাসিক বা বিবর্তনমূলক মতবাদ।

১. ঐশী মতবাদ : এটি রাষ্ট্রের উৎপত্তি সম্পর্কে সবচেয়ে পুরাতন মতবাদ। এ মতবাদে বলা হয় বিধাতা বা স্রষ্টা স্বয়ং রাষ্ট্র সৃষ্টি করেছেন এবং রাষ্ট্রকে সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য তিনি শাসক প্রেরণ করেছেন। শাসক তাঁর প্রতিনিধি এবং তিনি তার কাজের জন্য একমাত্র স্রষ্টা বা বিধাতার নিকট দায়ী, জনগণের নিকট নয় । শাসক যেহেতু স্রষ্টার নির্দেশে কাজ করে, সেহেতু শাসকের আদেশ অমান্য করার অর্থ বিধাতার নির্দেশ অমান্য করা। এ মতবাদ অনুসারে শাসক একাধারে যেমন রাষ্ট্রপ্রধান এবং অন্যদিকে তিনিই আবার ধর্মীয় প্রধান। আধুনিক রাষ্ট্রবিজ্ঞানীরা এ মতবাদকে বিপদজনক, অগণতান্ত্রিক ও অযৌক্তিক বলে সমালোচনা করেন। তাদের মতে, যেখানে জনগণের নিকট শাসক দায়ী থাকে না, সেখানে স্বৈরশাসন সৃষ্টি হয়। এ মতবাদকে বিধাতার সৃষ্টিমূলক মতবাদও বলা হয়।

২. বল বা শক্তি প্রয়োগ মতবাদ : এ মৃতবাদের মূল বক্তব্য হলো- বল বা শক্তি প্রয়োগের মা মাধ্যমে রাষ্ট্রের উৎপত্তি হয়েছে এবং শক্তির জোরে রাষ্ট্র টিকে আছে। এ মতবাদে বলা হয়, সমাজের বলশালী ব্যক্তিরা যুদ্ধ-বিগ্রহ বা বল প্রয়োগের মাধ্যমে দুর্বলের উপর নিজেদের আধিপত্য স্থাপনের মাধ্যমে রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করে এবং শাসনকার্য পরিচালনা করে। এ মতবাদে আরও বলা হয়, সৃষ্টির শুরু থেকে আজ পর্যন্ত এভাবেই যুদ্ধ-বিগ্রহের মাধ্যমে রাষ্ট্রের জন্ম হয়েছে। সমালোচকরা এ মতবাদকে অযৌক্তিক, ভ্রান্ত ও ক্ষতিকর বলে আখ্যায়িত করেছেন।

৩. সামাজিক চুক্তি মতবাদ : এ মতবাদের মূলকথা হলো- সমাজে বসবাসকারী জনগণের পারস্পরিক চুক্তির ফলে রাষ্ট্রর জন্ম হয়েছে।

৪. ঐতিহাসিক বা বিবর্তনমূলক মতবাদ : এ মতবাদের মূল বক্তব্য হলো- রাষ্ট্র কোনো একটি বিশেষ কারণে হঠাৎ করে সৃষ্টি হয়নি। দীর্ঘদিনের বিবর্তনের মাধ্যমে সমাজের বিভিন্ন স্তরে বিভিন্ন শক্তি ও উপাদান ধীরে ধীরে পরিবর্তিত হতে হতে রাষ্ট্রের উৎপত্তি হয়েছে। যেসব উপাদানের কার্যকারিতার ফলে রাষ্ট্রের উৎপত্তি হয়েছে, সেগুলো হলো সংস্কৃতির বন্ধন,রক্তের বন্ধন, ধর্মের বন্ধন, যুদ্ধবিগ্রহ, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক চেতনা ও কার্যকলাপ। ঐতিহাসিক বা বিবর্তনমূলক মতবাদ সম্পর্কে ড. গার্নার বলেন, রাষ্ট্র বিধাতার সৃষ্টি নয়, বল প্রয়োগের মাধ্যমেও সৃষ্টি হয়নি বরং ঐতিহাসিক ক্রমবিবর্তনের ফলে রাষ্ট্রের উৎপত্তি হয়েছে।

রাষ্ট্রের উৎপত্তি সম্পর্কিত বিভিন্ন মতবাদের মধ্যে ঐতিহাসিক বা বিবর্তনমূলক মতবাদ সবচেয়ে যুক্তিযুক্ত ও গ্রহণযোগ্য মতবাদ। এ মতবাদে রাষ্ট্রের উৎপত্তির সঠিক ব্যাখ্যা পাওয়া যায়। আসলে বর্তমানের রাষ্ট্র বহুযুগের বিবর্তনের ফল।

(গ) রাষ্ট্র ও সরকারের সম্পর্ক : রাষ্ট্র ও সরকারের মধ্যে যে পারস্পারিক সম্পর্ক রয়েছে তা আলোচনা করা হলো :

১. গঠনগত : জনসমষ্টি ভূখণ্ড, সরকার ও সার্বভৌমত্ব-এ চারটি উপাদান নিয়ে রাষ্ট্র গঠিত হয়। সরকার উক্ত চারটি উপাদানের মধ্যে একটি অন্যতম উপাদান, যার মাধ্যমে রাষ্ট্র পরিচালিত হয়।

২. জনসমষ্টি : রাষ্ট্র গঠিত হয় দেশের সব জনগণ নিয়ে। আর সরকার গঠিত হয় আইন, শাসন ও বিচার নিয়োজিত ব্যক্তিদের নিয়ে।

৩. স্থায়িত্ব : রাষ্ট্র স্থায়ী প্রতিষ্ঠান, কিন্তু সরকার অস্থায়ী এবং পরিবর্তনশীল। জনগণের চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে এবং রাষ্ট্রের শাসনকার্য পরিচালনার সুবিধার্থে সরকার পরিবর্তিত হয়। কিন্তু রাষ্ট্রের পরিবর্তন হয় না। উদাহরণস্বরূপ, বাংলাদেশ সরকারের পরিবর্তন হয়েছে বহুবার কিন্তু রাষ্ট্রের স্থায়িত্বের কোনো পরিবর্তন হয়নি।

৪. প্রকৃতি ও বৈশিষ্ট্য : বিশ্বের সকল রাষ্ট্রের প্রকৃতি ও বৈশিষ্ট্য অভিন্ন। কিন্তু সরকারের প্রকৃতি ও বৈশিষ্ট্য রাষ্ট্রভেদে ভিন্ন ভিন্ন। যেমন- বাংলাদেশে রয়েছে সংসদীয় সরকার, আবার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে রয়েছে রাষ্ট্রপতি শাসিত সরকার।

৫. সার্বভৌমত্ব : রাষ্ট্র সার্বভৌম বা সর্বোচ্চ ক্ষমতার অধিকারী। সরকার সার্বভৌম ক্ষমতার বাস্তবায়নকারী মাত্র।

৬. ধারণা : রাষ্ট্র একটি বিমূর্ত ধারণা। রাষ্ট্রকে দেখা যায় না, কল্পনা বা অনুধাবন করা যায়। কিন্তু সরকার মূর্ত। কারণ, যাদের নিয়ে সরকার গঠিত হয়, তাদের দেখা যায় ৷

সুতরাং দেখা যাচ্ছে যে, ও সরকারের মধ্যে বেশ কিছু পার্থক্য থাকলেও আমরা বলতে পারি, উভয়ের পারস্পরিক সম্পর্ক অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ। একটিকে ছাড়া অন্যটির কথা কল্পনা করা যায় না। রাষ্ট্রকে পরিচালনার জন্যই সরকার গঠিত হয়।


প্রথম অ্যাসাইনমেন্ট
অধ্যায় ০১
পৌরনীতি ও নাগরিকতা
(সংশোধিত অ্যাসাইনমেন্ট)
২য় সপ্তাহ

বাংলাদেশে বিদ্যমান পরিবার ব্যবস্থা ও একটি আদর্শ পরিবারের কার্যাবলি বিশ্লেষণ।

নির্দেশনা :
  • পাঠ্যপুস্তক/শিক্ষক (মোবাইলে/অনলাইনে) যোগাযোগ করে নেয়া যেতে পারে।
  • প্রয়োজনে ইন্টারনেট থেকেও সহায়তা নেয়া যেতে পারে।
  • পরিবার কিভাবে গড়ে উঠে তা বর্ণনা করতে হবে।
  • পরিবারে শ্রেণিবিভাগ বর্ণনা করতে হবে।
  • যৌথ পরিবার হ্রাস ও একক পরিবার বৃদ্ধির কারণ বিশ্লেষণ করতে হবে।
  • একটি আদর্শ পরিবারের কার্যাবলি বিশ্লেষণ করতে হবে।

নমুনা সমাধান

(ক) বাংলাদেশে পরিবারের ধরন :
বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে পরিবারের বিভাজন করা হয়ে থাকে। নিম্নে বিভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গির ভিত্তিতে পরিবারের বিভাজন সম্পর্কে আলোচনা করা হলো :

কর্তৃত্বের মাত্রাভিত্তিক পরিবার কর্তৃত্বের মাত্রা অনুযায়ী বাংলাদেশের পরিবারকে দুই ভাগে ভাগ কার যায়। যথা : পিতৃতান্ত্রিক পরিবার এবং মাতৃতান্ত্রিক পরিবার। যে পরিবারের কর্তৃত্ব পিতা, স্বামী বা অন্য কোনো পুরুষের নিয়ন্ত্রণে পরিচালিত হলে তাকে পিতৃতান্ত্রিক পরিবার বলে। বাংলাদেশে এ ধরনের পরিবার ব্যবস্থা সর্বত্র বিদ্যমান। পরিবারের কর্তৃত্ব যখন মাতা, স্ত্রী বা কোনো নারী সদস্য দ্বারা পরিচালিত হয় তখন তাকে মাতৃতান্ত্রিক পরিবার বলে। বাংলাদেশে ক্ষুদ্র নৃতাত্ত্বিক গোষ্ঠীর মধ্যে এ ধরনের পরিবার দেখা যায়।

আকার বা কাঠামো অনুসারে পরিবার পরিবারের আকার বা কাঠামো অনুসারে পরিবারকে তিন ভাগে ভাগ করা হয়। যথা : অণু পরিবার, যৌথ পরিবার এবং বর্ধিত পরিবার। একজন স্বামী, একজন স্ত্রী এবং তাদের অবিবাহিত সন্তান-সন্ততি নিয়ে যে পরিবার গঠিত হয় তাকে অণু পরিবার বলে। বাংলাদেশের শহরাঞ্চলে এবং শিল্প এলাকায় অণু পরিবার বেশি দেখা যায়। পিতা- মাতা, ভাই বোন, সন্তান - সন্ততি, ভ্রাতৃবধূ কিংবা পুত্রবধূর সমষ্টিতে গঠিত পরিবারকে যৌথ পরিবার বলে বাংলাদেশের গ্রামীণ সমাজে এখনো যৌথ পরিবার দেখা যায়। তিন পুরুষের পরিবারকে বর্ধিত পরিবার বলে। সাধারণত একক পরিবার থেকে যৌথ পরিবার এবং চূড়ান্ত পর্যায়ে বর্ধিত পরিবার গঠিত হয়। এ পরিবারে দাদা - দাদি, পিতা-মাতা, ছেলে-মেয়েসহ তিন প্রজন্মের সদস্য বাস করে। গ্রামীণ বাংলাদেশে এখনো অনেক বর্ধিত পরিবার লক্ষ করা যায় ।

স্বামী-স্ত্রীর সংখ্যা বা বিবাহের ভিত্তিতে পরিবার :
স্বামী-স্ত্রীর সংখ্যা বা বিবাহের ভিত্তিতে বাংলাদেশের পরিবারকে একক বিবাহভিত্তিক পরিবার এবং বহু - স্ত্রী-বিবাহভিত্তিক পরিবার এই দুই ভাগে ভাগ করা হয়। একক বিবাহভিত্তিক পরিবার হলো একজন পুরুষ এবং একজন মহিলার বিবাহের মাধ্যমে গঠিত পরিবার। এটিই মূলত বাংলাদেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ পরিবারের প্রধান রূপ। বহু স্ত্রী বিবাহভিত্তিক পরিবার হলো একজন পুরুষ একাধিক মহিলার সাথে বিবাহের ভিত্তিতে গঠিত পরিবার। সংখ্যায় কম হলেও বাংলাদেশে এ ধরনের পরিবার রয়েছে।

(খ) যৌথ পরিবার হ্রাস এবং একক পরিবারের সংখ্যা বৃদ্ধির কারণ:
গত দুই দশকে নগরায়নের ফলে বাংলাদেশের পরিবার ব্যবস্থায় বড় পরিবর্তন এসেছে বলে সমাজবিজ্ঞানীরা বলছেন। বাংলাদেশের সমাজে বিচ্ছিন্নতার হার বাড়ছে কিন্তু সেই পরিবর্তনের সঙ্গে তাল মেলাতে সমাজ বা রাষ্ট্রের এখনো যথেষ্ট ব্যবস্থা নেয়া হয়নি বলে তারা মনে করছেন। বাংলাদেশে গত দুই দশকে নগরায়ন এবং শিল্পায়নের ফলে অনেক মানুষ গ্রাম থেকে শহরে এসেছেন। এদিকে গ্রামগুলোতে যে পরিবারগুলো ছিল, তার ধারণাও পাল্টে গেছে। এখন গ্রামের মেয়েরাও শহরে আসছেন কারখানায় কাজ করার জন্য। আবার যারা বিবাহিত নারী, তারা কাজে আসার সময় সন্তানকে নিজের বাবা-মায়ের কাছে রেখে আসছেন। বাংলাদেশে গত দু দশকে নগরায়ন হয়েছে ব্যাপকভাবে - সাথে সাথে বহু নারী শিল্প ও ম্যানুফ্যাকচারিং খাতে কাজ করতে শুরু করেছেন। শহরেও এখন যৌথ পরিবারের তুলনায় একক পরিবারের সংখ্যা বাড়ছে। যারা শহরে চলে এসেছেন, এখানে পরিবার তৈরি করেছেন, তাদের পরিবারের ধরণটাও ভিন্ন হচ্ছে। হয়তো স্বামী-স্ত্রী চাকরি করছেন, তাদের ব্যস্ততা বেড়েছে, একে অপরকে সময়ের ধরণ পাল্টেছে।

জীবন ও জীবিকার তাগিদে দিন দিন ছোট হচ্ছে পরিবারের আকার। একসময় যৌথ পরিবারের সংখ্যা বেশী থাকলেও নগরায়ণ এবং অর্থনৈতিক ও মনস্তাত্ত্বিক নানা কারণে বাড়ছে একক পরিবার। নগর বা শহরের মতো একই চিত্র প্রত্যন্ত উপকূলীয় জনপদেও। দারিদ্র্য, নতুন পারিবারিক সম্পর্ক ও প্রাকৃতিক দুর্যোগের মতো কারণে এসব এলাকায় ভাঙছে যৌথ পরিবার।

যদিও যৌথ পরিবারকে এখনো গুরুত্বপূর্ণ বলেই মনে করেন প্রত্যন্ত জনপদের অনেকেইবাংলাদেশে ঐতিহ্যগতভাবে একসময় যৌথ পরিবার বেশী থাকলেও দিন দিন তা কমছে। বিশেষ করে বাংলাদেশে ঐতিহ্যগতভাবে একসময় যৌথ পরিবার বেশী থাকলেও দিন দিন তা কমছে। বিশেষ করে নগরে ও শহরে বাড়ছে একক পরিবারের সংখ্যা। এমনকি প্রত্যন্ত উপকূলীয় জনপদেও একই চিত্র। যদিও একসময় দাদা-দাদি ও চাচা-চাচিসহ বাবা-মা কে নিয়ে এক হাড়িতে চলতো রান্না-বান্না। নানা বাস্তবতা ও প্রতিকূলতায় এমন দৃশ্য এখন কমই চোখে পড়ে।

(গ)
আদর্শ পরিবারের কার্যাবলী : পরিবারের সদস্যদের সুন্দর ও নিরাপদ জীবন গড়ে তোলার জন্য পরিবার বহুবিধ কাজ করে। পরিবার সাধারণত যেসব কার্য সম্পাদন করে, সেগুলো নিম্নরূপ :

১. জৈবিক কাজ : আমাদের মা-বাবা বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার ফলেই আমরা জন্মগ্রহণ করেছি এবং তাদের দ্বারা লালিত-পালিত হচ্ছি। অতএব, সন্তান জন্মদান ও লালন-পালন করা পরিবারের অন্যতম কাজ। পরিবারের এ ধরনের কাজকে জৈবিক কাজ বলা হয়।

২. শিক্ষামূলক কাজ : আমাদের মধ্যে অনেকে বিদ্যালয়ে যাওয়ার পূর্বেই পরিবারে বর্ণমালার সাথে পরিচিত হই। তাছাড়া মা - বাবা, ভাই - বোন ও পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের পারস্পরিক সহায়তায় সততা, শিষ্টাচার, উদারতা, নিয়মানুবর্তিতা ইত্যাদি মানবিক গুণাবলির শিক্ষা লাভের প্রথম সুযোগ পরিবারেই সৃষ্টি হয়। এগুলো পরিবারের শিক্ষামূলক কাজ। আর পরিবারে শিশুর - বাবা, ভাই - বোন ও পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের পারস্পরিক সহায়তায় সততা, শিষ্টাচার, উদারতা, নিয়মানুবর্তিতা ইত্যাদি মানবিক গুণাবলির শিক্ষা লাভের প্রথম সুযোগ পরিবারেই সৃষ্টি হয়। এগুলো পরিবারের শিক্ষামূলক কাজ। আর পরিবারে শিশুর প্রাথমিক শিক্ষা শুরু হয় বলে পরিবারকে শাশ্বত বিদ্যালয় বা জীবনের প্রথম পাঠশালা বলা হয়।

৩. অর্থনৈতিক কাজ : পরিবারের সদস্যদের খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা,চিকিৎসা প্রভৃতি চাহিদা পূরণের দায়িত্ব পরিবারের। পরিবারের সদস্যরা বিভিন্নভাবে অর্থ উপার্জনের মাধ্যমে এসব চাহিদা মিটিয়ে থাকে। পরিবারকে কেন্দ্র করে কুটির শিল্প, মৎস্য চাষ, কৃষিকাজ, পশু পালন ইত্যাদি অর্থনৈতিক কাজ সম্পাদিত হয়। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির অভূতপূর্ব উন্নতির ফলে পরিবারের সাথে সংশ্লিষ্ট কাজের জায়গাগুলো অনেক ক্ষেত্রে পরিবর্তিত হয়েছে এবং নতুন নতুন কাজের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে হ্রাস পেয়েছে। তবে আজও পরিবার আমাদের সকল প্রকার অর্থনৈতিক চাহিদা 
পূরণ করছে।

৪. রাজনৈতিক কাজ : পরিবারে সাধারণত মা-বাবা কিংবা বড় ভাই-বোন অভিভাবকের ভূমিকা পালন করে। আমরা ছোটরা তাদের আদেশ-নির্দেশ মান্য করে চলি। তারাও আমাদের অধিকার রক্ষায় কাজ করেন। বুদ্ধি, বিবেক ও আত্মসংযমের শিক্ষা দেন, যা আমাদের সুনাগরিক হতে সাহায্য করে। এভাবে পারিবারিক শিক্ষা ও নিয়ম মেনে চলার মাধ্যমে পরিবারেই শিশুর রাজনৈতিক শিক্ষা শুরু হয়। এ শিক্ষা পরবর্তীকালে রাষ্ট্রীয় জীবনে কাজে লাগে। এছাড়া বড়দের রাজনৈতিক আলোচনা শুনে ও সে আলোচনায় অংশগ্রহণ করে আমরা দেশের রাজনীতি সম্পর্কে সচেতন হয়ে উঠি।

৫. মনস্তাত্ত্বিক কাজ : পরিবার মায়ামমতা, স্নেহ-ভালোবাসা দিয়ে পরিবারের সদস্যদের মানসিক চাহিদা পূরণ করে। নিজের সুখ - দুঃখ, আনন্দ - বেদনা পরিবারের অন্যান্য সদস্যের সাথে ভাগাভাগি করে প্রশান্তি লাভ করা যায়। যেমন- কোনো বিষয়ে মন খারাপ হলে মা-বাবা, ভাই-বোনদের সাথে আলাপ-আলোচনা করে তার সমাধান করা যায়। এ ধরনের আলোচনা মানসিক শান্তি-ক্লান্তি মুছে দিতে সাহায্য করে। তাছাড়া পরিবার থেকে শিশু উদারতা, সহনশীলতা, সহমর্মিতা প্রভৃতি গুণগুলো শিক্ষা লাভ করে, যা তাদের মানসিক দিককে সমৃদ্ধ করে।

৬. বিনোদনমূলক কাজ : পরিবারের সদস্যদের সাথে গল্প-গুজব, হাসি-ঠাট্টা, গান-বাজনা, টিভি দেখা, বিভিন্ন জায়গায় বেড়াতে যাওয়া ইত্যাদির মাধ্যমে আমরা বিনোদন লাভ করি। বর্তমানে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির উন্নয়নের ফলে পরিবারের উল্লিখিত কাজগুলো কিছুটা হ্রাস পেলেও সদস্যদের সর্বাধিক কল্যাণ সাধনে পরিবারের এসব কাজের গুরুত্ব অপরিসীম।


প্রথম অ্যাসাইনমেন্ট
অধ্যায় ০১
পৌরনীতি ও নাগরিকতা
(বাতিল অ্যাসাইনমেন্ট)
২য় সপ্তাহ

অ্যাসাইনমেন্ট : বর্তমান বিশ্বে নিম্নোক্ত পরিবার ব্যবস্থা দেখা যায়-
ক) বংশ গণনা ও নেতৃত্বের ভিত্তিতে পিতৃতান্ত্রিক ও মাতৃতান্ত্রিক পরিবার;
খ) পারিবারিক কাঠামোর ভিত্তিতে একক ও যৌথ পরিবার;
গ) বৈবাহিক সূত্রের ভিত্তিতে একপত্নীক, বহুবত্নীক ও বহুপতি পরিবার।

বাংলাদেশে বিদ্যমান উপরোক্ত পরিবার ব্যবস্থার মধ্যে কোন কোন ধরনের পরিবার দেখা যায় ও দেশে কোন যৌথ পরিবার হ্রাস পাচ্ছে এবং একক পরিবারের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। একটি আদর্শ পরিবারের কার্যাবলী ব্যাখ্যাকরণ।

নমুনা সমাধান

বাংলাদেশের পরিবারগুলাের মধ্য থেকে যৌথ পরিবার ভেঙ্গে একক পরিবার বৃদ্ধির কারণ এবং আদর্শ পরিবারের কার্যাবলি

পরিবার সমাজ স্বীকৃত বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয় স্বামী - স্ত্রীর একত্রে বমবাম করাকে পরিবার বলে। ম্যাকাইভারের মতে, সন্তান জন্মদান ও লালন - পালনের জন্য মংগঠিত ক্ষুদ্র বর্গকে পরিবার বলে। আমাদের দেশে সাধারণত মা - বাবা, ভাই - বােন, চাচা - চাচিও দাদা - দাদির। আর এই মূলত স্নেহ, মায়া, মমতা, ভালােবাসার বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে গঠিত ক্ষুদ্র সামাজিক প্রতিষ্ঠান।

আমরা সবাই পরিবারে বাস করি। কিন্তু সব পরিবারের প্রকৃতি ও গঠনকাঠামাে একরকম নয় ৷ কতগুলাে নীতির ভিত্তিতে পরিবারের শ্রেণিবিভাগ করা যায়।" 
যেমন-
(ক) বংশ গণনা ও নেতৃত
(খ) পারিবারিক কাঠামাে ও সূত্র ও
(গ) বৈবাহিক সূত্র।

ক. বংশ গুণনা ও নেতৃত্ব : এ নীতির ভিত্তিতে পরিবারকে দুই ভাগে ভাগ করা যায়। যথা - পিতৃতান্ত্রিক ও মাতৃতান্ত্রিক পরিবার পিতৃতান্ত্রিক পরিবারে সন্তানরা পিতার বংশ পরিচয়ে পরিচিত হয় এবং পিতা পরিবারে নেতৃত্ব দেন। আমাদের দেশের অধিকাংশ পরিবার এ ধরনের। অন্যদিকে, মাতৃতান্দিক পরিবারে মায়ের বংশপরিচয় সন্তানরা পরিচিত হয় এবং মা পরিবারে নেতৃত্ব দেন। আমাদের দেশে গারােদের মধ্যে এ ধরনের পরিবার দেখা যায়।
 

খ. পারিবারিক কাঠামাে : পারিবারিক গঠন ও কাঠামাের ভিত্তিতে পরিবারকে দুই শ্রেণিতে ভাগ করা যায়। যথা- একক ও যৌথ পরিবার। একক পরিবার মা - বাবা ও ভাই - বােন নিয়ে গঠিত হয়। এ ধরনের পরিবার ছােট হয়ে থাকে। যৌথ পরিবারে মা - বাবা, ভাই - বােন, দাদা - দাদি, চাচা - চাচি ও অন্যান্য পরিজন একত্রে বাস করে। যৌথ পরিবার বড় পরিবার। বাংলাদেশে উভয় ধরনের পরিবার রয়েছে ৷ তবে বর্তমানে একক পরিবারের সংখ্যা বাড়ছে ৷ মূলত যৌথ পরিবার কয়েকটি একক পরিবারের সমষ্টি।

গ. বৈবাহিক মূত্র : বৈবাহিক সূত্রের ভিত্তিতে তিন ধরনের পরিবার লক্ষ করা যায়। যথা- একপত্নীক, বহুপত্নীক ও বহুপতি পরিবার। একপত্নীক পরিবারে একজন স্বামীর একজন স্ত্রী থাকে আর বহুপত্নীক পরিবারে একজন স্বামীর একাধিক স্ত্রী থাকে। আমাদের সমাজের অধিকাংশ পরিবার একপত্নীক তবে 
বহুপত্নীক পরিবারও কদাচিৎ দেখা যায়। বহুপতি পরিবারে একজন স্ত্রীর একাধিক স্বামী থাকে। বাংলাদেশে এধরনের পরিবার দেখা যায় না।

সুতরাং উপরিউক্ত আলােচনা থেকে বলা যায় আমাদের দেশের পরিবারগুলাের মধ্যে পিতৃতান্ত্রিক পরিবার, একক পরিবার, যৌথ পরিবার, একপত্নীক পরিবার এবং বহুপত্নিক পরিবার দেখা যায় তবে বাংলাদেশে বসবাসকারী ক্ষুদ্র জাতিসত্তার মধ্যে মাতৃতান্ত্রিক পরিবারও দেখা যায়। কিন্তু দেশে বহুপতি পরিবার দেখা যায় না।

যৌথ পরিবার হ্রাস এবং একক পরিবারের সংখ্যা বৃদ্ধির কারণঃ আমরা জানি, দাদা - দাদী, স্বামী - স্ত্রী, ভাই - বােন, ছেলে - মেয়ে ইত্যাদি নিয়ে গঠিত যৌথ পরিবার। আর একক পরিবার মা - বাবা ও ভাই বোন নিয়ে গঠিত হয়। বর্তমানে কালের পরিক্রমায় যৌথ পরিবার হ্রাস পেয়ে একক পরিবার বৃদ্ধি পাচ্ছে। আর পেছনে রয়েছে নানাবিধ কারণ। যেমন :

(i) সীমিত অর্থনৈতিক যােগানদাতা : একটি যৌথ পরিবার অনেকগুলাে মানুষ নিয়ে গঠিত, যার লােক সংখ্যা ১০ থেকে ১৫ জন অথবা তার উর্বে থাকলেও অনেক যৌথ পরিবারে অর্থনৈতিক যােগানদাতা মাত্র ২ থেকে ৪ জন থাকেন আবার তাদের আয়ের পরিমাণও সমান না। এ অবস্থায় যৌথ পরিবার থেকে পরিবার চালনা অত্যন্ত কষ্টসাধ্য হয়। এমনকি তারা নিজের এবং নিজের স্ত্রী সন্তানের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করেই যৌথ পরিবার ভেঙ্গে মা, বাবা, দাদা, দাদী অন্যান্য সদস্যদের ছেড়ে একক পরিবার গঠনের চিন্তা করেন।

(ii) ব্যক্তি স্বার্থপরতা : যৌথ পরিবারের অর্থনৈতিক যােগানদাতা ব্যক্তিগণ অনেক সময় সবার সাথে মিলেমিশে যৌথ সম্পত্তি গড়ে তােলার পাশাপাশি, যৌথ পরিবারের সদস্যদের অজান্তে নিজের, নিজের স্ত্রী অথবা সন্তানের নামে আলাদা সম্পত্তি গড়ে তুলেন।পরবর্তীতে তা পরিবারের অন্যান্য সদস্য গনের মধ্যে জানাজানি হলে ঝগড়ার হয় আর যৌথ পরিবার ভেঙ্গে যাওয়ার প্রবণতা দেখা দেয়।

(iii) কর্মজীবীদের সংখ্যা বৃদ্ধি : পরিবারের কর্মজীবী সদস্যদের সংখ্যা বৃদ্ধির সাথে সাথে কর্মজীবী সদস্যগণ চাকুরীর সুবাদে দীর্ঘদিন তাদের যৌথ পরিবারের বাহিরে দেশ - বিদেশের বিভিন্ন প্রান্তে থাকতে হয় ৷ ফলশ্রুতিতে এক সময় তাদের মধ্যে যৌথ পরিবারে থাকার আগ্রহ কমে যায় বা তাদের সন্তানাদি মা-বাবার সাথে একক পরিবারে থাকতে অভ্যস্ত থাকায় তারা আর যৌথ পরিবারে ফিরে আসতে চায় না। ফলে যৌথ পরিবার ভেঙ্গে যেতে থাকে। 

(iv) ব্যক্তিগত আধিপত্য বিস্তার : বর্তমান সমাজে যৌথ পরিবার ভেঙ্গে যাওয়ার অনুতেম প্রধান কারণ হলাে ব্যক্তিগত আধিপত্য বিস্তার। পরিবারের প্রত্যেক ব্যক্তি চান পরিবারের সকল সদস্যকে নিজের নিয়ন্ত্রণে রাখতে। ফলে একক পরিবার বৃদ্ধি পায়। 

একটি আদর্শ পরিবারের কার্যাবলি : সব পরিবারই তাদের দৈনন্দিন জীবনে নানাবিধ কার্যাবলি করে থাকে। কিন্তু একটি আদর্শ পরিবারের কার্যাবলি হয় অনেক গুছানাে এবং নিয়ন্ত্রিত নিচে আদর্শ পরিবার এর কার্যাবলী আলোচনা করা হলো :

মিলেমিশে থাকা একটি আদর্শ পরিবারের অন্যতম কার্যাবলি হলাে পরিবারের সকলই মিলেমিশে একত্রে বাস করা। আর একাজটাই একটি আদর্শ পরিবার করে থাকে।

শৃঙ্খলা বোধ : পরিবারের সবাই একটা নির্দিষ্ট শৃঙ্খলার মধ্যে বাস করে। তারা বিভিন্ন ধরনের অনৈতিক কাজ হতে নিজেদের বিরত রাখে এবং শান্তিতে বসবাস করে।

মানসিক শক্তি বৃদ্ধি : পরিবারের কারও বিপদে পরিবারের অন্যান্য ব্যক্তিবর্গ তাকে মানসিকভাবে চাঙ্গা করে ফলে সে তার বিপদ হতে দ্রুত সেরে উঠতে পারে।

সহযোগী মনোভাব : একটি আদর্শ পরিবারের লোকজন সর্বদা একে অন্যের প্রতি সহযােগী মনােভাব প্রকাশ করে। কেউ বিপদে পড়লে তাকে সাহায্যের কমতি থাকে না।

ক্ষমাপূর্ণ মনােভাব পরিবারের কেউ ভুল কাজ করে থাকলে তাকে শাস্তি না দিয়ে বুঝানাের মাধ্যমে ক্ষমা করে দেওয়ার মনােভাব একটি আদর্শ পরিবারের অন্যতম কার্যাবলি।

একে অপরকে সময় দেওয়া : এই আধুনিক যুগে সবাই এখন যন্ত্র হয়ে গেছে কিন্তু একটি আদর্শ পরিবার এর ক্ষেত্রে অন্যতম কার্যাবলি পরিবারের সব সয়মই একে অন্যকে যথেষ্ট পরিমাণ সময় দেয়।

উপরিউক্ত ভাবে একটি আদর্শ পরিবার তাদের কার্যাবলী সম্পাদন করে এবং সুখ-শান্তির সহিত বসবাস করে।
Post a Comment (0)
Previous Post Next Post